বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আগুন গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে

  •    
  • ২৩ মার্চ, ২০২১ ২২:৫০

প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা গেছে, বালুখালীর রোহিঙ্গা ক্যাম্প ৮-এর আই ব্লকের মৌলভী খলিলুর রহমানের ঘরে সিলিন্ডারটি বিস্ফোরিত হয়। এরপরই আশপাশের ঘরগুলোতে আগুন ধরে যায়। একে একে তা ছড়িয়ে পড়ে ৯, ১০ ও ১১ নম্বর ক্যাম্পে।

ঘরের মধ্যে গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরণে কক্সবাজারের উখিয়ার বালুখালীর রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আগুন লাগে বলে মনে করেন এটির বেশিরভাগ বাসিন্দা ও প্রত্যক্ষদর্শী। ফায়ার সার্ভিসের কর্মীরাও প্রাথমিকভাবে এ ধারণা করছেন।

প্রাথমিক অনুসন্ধানে জানা গেছে, বালুখালীর রোহিঙ্গা ক্যাম্প ৮-এর আই ব্লকের মৌলভী খলিলুর রহমানের ঘরে সিলিন্ডারটি বিস্ফোরিত হয়। এরপরই আশপাশের ঘরগুলোতে আগুন ধরে যায়। একে একে তা ছড়িয়ে পড়ে ৯, ১০ ও ১১ নম্বর ক্যাম্পে।

মঙ্গলবার সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত ক্ষতিগ্রস্ত ক্যাম্প এলাকা ঘুরে এবং বাসিন্দাদের সঙ্গে কথা বলে এসব তথ্য জানা গেছে।

খলিলুর রহমানের প্রতিবেশী সাবেকুন্নাহার ও সেতারা বেগম নিউজবাংলাকে জানান, সোমবার দুপুরে খলিলের স্ত্রী কুলছুমা খাতুন রান্নাঘরে চুলায় ডিম ভাজছিলেন। এ সময় গ্যাসের চুলায় আগুন লাগে। মুহূর্তে তা ঘরের চালে ছড়িয়ে পড়ে। আগুন দেখে তারা নেভাতে যান। আগুন প্রায় নিভিয়েও ফেলেন। তখন ঘরের ভেতর বিকট শব্দে সিলিন্ডার বিস্ফোরিত হয়।

তারা আরও জানান, সিলিন্ডার বিস্ফোরণের পর আগুনের ফুলকি আশপাশে ছড়িয়ে পড়ে। পার্শ্ববর্তী ঘরগুলোতে এ সময় আগুন ধরে যায়। পরে ক্যাম্পে তা ছড়িয়ে পড়ে।

দুর্ঘটনার পর থেকে মঙ্গলবার বিকেল পর্যন্ত ঘটনাস্থলে খলিল ও তার পরিবারের খোঁজ পাওয়া যায়নি।

প্রতিবেশীরা জানান, আগুন লাগার পর এলাকা ছেড়ে চলে গেছেন খলিল দম্পতি। কোথায় গেছেন, তারা জানেন না।

এ বিষয়ে সাবেকুন্নাহার জানান, আগুন লাগার পর খলিলকে মোবাইল ফোনে বলতে শুনেছেন, ঘরে থাকা সিলিন্ডার বিস্ফোরণে আগুন লেগেছে। যেহেতু আগুন তার ঘর থেকে লেগেছে, তাই সবাই তাকে ধরবে। এজন্য তিনি ঘর ছেড়ে চলে যাচ্ছেন।

মৌলভী খলিলুর রহমানের ঘরের সেই গ্যাস সিলিন্ডার। ছবি: নিউজবাংলা

উখিয়া ফায়ার সার্ভিস স্টেশনের কর্মকর্তা ইমদাদুল হক নিউজবাংলাকে জানান, খলিলুরের ঘর তারা পরিদর্শন করেছেন। ঘরের ভেতর বিস্ফোরিত একটি গ্যাস সিলিন্ডার দেখেছেন তারা।

তিনি বলেন, ফায়ার সার্ভিস একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে। কমিটিকে চার কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে। প্রতিবেদন পেলে অগ্নিকাণ্ডের কারণ জানা যাবে।

সোমবার বিকেল ৪টার দিকে উখিয়ার চার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আগুন লাগে। কক্সবাজার, উখিয়া, টেকনাফ ও রামু স্টেশনের ছয়টি ইউনিট রাত ১০টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আনে।

আগুনে ১১ জন মারা গেছেন। পুড়ে গেছে ৯ হাজার ৩০০টি ঘর। মঙ্গলবার বিকেল ৫টার দিকে কক্সবাজার ত্রাণ ও শরণার্থী প্রত্যাবাসন কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে দুর্যোগ ও ত্রাণ সচিব মো. মহসীন এসব তথ্য জানান।

দুর্যোগ সচিব জানান, ৮ নম্বর ক্যাম্পের ই ব্লকের একজন, ডব্লিও ব্লকের পাঁচজন এবং ৯ নম্বর ক্যাম্পের পাঁচজন মারা গেছেন।

আগুনে পুড়ে গেছে ৯ হাজার ৩০০টি ঘর। এসব ঘরের প্রায় ৪৫ হাজার লোক নানাভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছেন বলেও জানান সচিব।

১৬ আর্মড পুলিশ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক তারিকুল ইসলাম জানান, অগ্নিকাণ্ডের সময় ছোটাছুটি করতে গিয়ে অন্তত ৫০ জন আহত হয়েছেন। তাদের ক্যাম্পের বিভিন্ন এনজিওর হাসপাতালে চিকিৎসা দেয়া হচ্ছে।

মঙ্গলবার সকালে বালুখালীর বলিবাজারসংলগ্ন ক্যাম্পে দেখা যায়, পুড়ে যাওয়া ঘরে প্রয়োজনীয় ও মূল্যবান জিনিসপত্র কিছু অবশিষ্ট আছে কি না, তা খুঁজছেন অনেকে।

চার রোহিঙ্গা ক্যাম্পে আগুনে ঘরহারা মানুষ

ঘর হারিয়ে কক্সবাজার-টেকনাফ মহাসড়কে খোলা আকাশের নিচে অবস্থান নিয়েছে কয়েক হাজার রোহিঙ্গা পরিবার।

আগুনের কারণ উদঘাটনে সরকার সাত সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করেছে জানিয়ে দুর্যোগ সচিব বলেন, এই কমিটি অগ্নিকাণ্ডের সূত্রপাতসহ সব বিষয়ে অনুসন্ধান করবে। তিনদিনের মধ্যে এই কমিটি সরকারকে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেবে।

কক্সবাজারের জেলা প্রশাসক মামুনুর রশীদ নিউজবাংলাকে জানান, আগুনের কারণ এবং ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণ খতিয়ে দেখতে শরণার্থী, ত্রাণ ও প্রত্যাবাসন কমিশনার শাহ রেজওয়ান হায়াতকে প্রধান করে এই তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।

এ বিভাগের আরো খবর