রংপুরের হারাগাছায় স্কুলছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় বরখাস্ত ডিবি পুলিশের কর্মকর্তাসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র জমা দিয়েছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)।
হারাগাছ মেট্রোপলিটন আদালতের বিচারক শওকত আলীর আদালতে মঙ্গলবার দুপুরে অভিযোগপত্র জমা দেন রংপুর পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার জাকির হোসেন।
মামলায় মেট্রোপলিটন পুলিশের গোয়েন্দা শাখার (ডিবি) এএসআই রায়হানুল ইসলাম ওরফে রাজুসহ তিনজনের বিরুদ্ধে ধর্ষণের অভিযোগ করা হয়েছে। ধর্ষণে সহায়তার অভিযোগ আনা হয়েছে দুই নারীর বিরুদ্ধে। আসামিরা এখন রংপুর কারাগারে বন্দি।
মামলায় অভিযোগ করা হয়, প্রেমের সম্পর্ক গড়ে রংপুর মহানগরীর দশম শ্রেণির স্কুলছাত্রীকে গত ২৩ অক্টোবর বিকেলে পূর্বপরিচিত এক নারীর বাড়িতে নিয়ে ধর্ষণ করেন রায়হান। মেয়েটি রাতে বাড়ি ফিরলে তার বাবা-মা বকাঝকা করেন। তাতে ক্ষুব্ধ হয়ে ওই দিন রাতে মেয়েটি রায়হানের সহযোগিতায় বাড়ি থেকে বের হয়ে যায়। তাকে আবারও ওই নারীর বাড়িতে রাখা হয়।
সেখানে ওই দিন মধ্যরাতে অন্য দুই ব্যক্তি মেয়েটিকে ধর্ষণ করে। মেয়েটি পরদিন ভোরে পালিয়ে যায়, পুলিশের সহযোগিতায় পরে বাড়ি ফেরে।
মেয়েটির বাবা ঘটনার তিন দিন পর হারাগাছ থানায় নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে মামলা করেন। এর আগের দিন বরখাস্ত করা হয় এএসআই রায়হানুলকে।
বাদী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমার মেয়ের তো ওমরা ক্ষতি করেছে, হামি ওমার বিচার চাই। ওমার বিচার কাইয়ো যেন নষ্ট করবের না পায় সে ব্যবস্থা তোমরা করমেন (করবেন)।’
পিবিআইয়ের পুলিশ সুপার জাকির হোসেন বলেন, ‘প্রথমে মামলাটি হারাগাছা থানায় হয়। পরে অধিকতর তদন্তের জন্য আদালত মামলাটি পিবিআইকে তদন্তের নির্দেশ দেয়। আমরা তদন্তে শেষে আদালতে পাঁচজনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দিয়েছি।’
তিনি জানান, এ ঘটনায় রায়হানুলের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও মানব পাচারের অভিযোগ, গ্রেপ্তার অন্য দুই পুরুষের বিরুদ্ধে সংঘবদ্ধ ধর্ষণের অভিযোগ এবং দুই নারীর বিরুদ্ধে ধর্ষণে সহযোগিতার অভিযোগ আনা হয়েছে।
এসপি বলেন, ‘আমি একজন পুলিশ সদস্য হয়ে অন্য পুলিশ সদস্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ দিতে যেমন খারাপ লাগছে, তেমনই এটি একটি মেসেজও। কোনো পুলিশ সদস্য হোক আর সাধারণ মানুষও হোক অপরাধ করলে কেউ পার পাবে না। এটি আমাদের আইজি স্যারের একটি বড় মেসেজ।’