লালমনিরহাটের বুড়িমারীতে মসজিদে তর্কাতর্কির জেরে শহীদুন্নবী জুয়েলকে পিটিয়ে হত্যার পর মরদেহ পুড়িয়ে দেয়ার ঘটনায় আরও এক আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে জেলা পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। এ ঘটনায় করা তিন মামলায় এখন পর্যন্ত ৪৬ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে।
মোতালেব হোসেন নামের ওই ব্যক্তিকে শুক্রবার সকালে গ্রেপ্তার করা হলেও শনিবার সন্ধ্যায় তা সাংবাদিকদের জানান ডিবির ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ওমর ফারুক।
মোতালেবের বাড়ি বুড়িমারী ইউনিয়নের ইসলামপুর ডাঙ্গারপাড় গ্রামে। ওসি জানান, শনিবার দুপুরে লালমনিরহাট সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত-৩-এ তোলা হলে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
গত ২৯ অক্টোবর বুড়িমারী কেন্দ্রীয় জামে মসজিদে আসরের নামাজ পড়তে যান আবু ইউনুস মো. শহীদুন্নবী জুয়েল। সঙ্গে ছিলেন তার এক বন্ধু।
মসজিদে তারা কোরআন অবমাননা করেছেন, এমন গুজব ছড়িয়ে দেয়ার পর সেখানে যায় স্থানীয় প্রশাসন, আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর লোকজন। তাদের উপস্থিতিতে বুড়িমারী ইউনিয়ন পরিষদ ভবনের ভেতর জুয়েলকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। এরপর মরদেহ টেনে নিয়ে আগুনে পুড়িয়ে দেয়া হয়।
- আরও পড়ুন: বছরের নৃশংসতম হত্যা
এ ঘটনায় শহীদুন্নবীর ভাই সাইফুল আলম ৪৩ জনের নাম উল্লেখ ও কয়েকশ অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিকে আসামি করে মামলা করেন। পুলিশের ওপর হামলার ঘটনায় পাটগ্রাম পুলিশের এসআই শাহজাহান আরও একটি মামলা করেন ৪৯ জনের বিরুদ্ধে।
আর বুড়িমারী ইউনিয়ন পরিষদ ভবন ভাঙচুরের ঘটনায় মামলা করেন ইউপি চেয়ারম্যান আবু সাঈদ মো. শাহ নেওয়াজ নিশাত। এ মামলায় ২২ জনের নাম উল্লেখ করে আসামি করা হয়েছে অজ্ঞাতপরিচয় শত শত ব্যক্তিকে।
ডিবি পুলিশের ওসি ওমর ফারুক জানিয়েছিলেন, সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ পর্যালোচনা করে আসামিদের শনাক্ত করা হয়।
আগে গ্রেপ্তার ৪৫ জনের মধ্যে ১৯ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ডে নেয়া হয়। আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দেন ছয়জন। তারা হলেন মসজিদের খাদেম জোবেদ আলী, মোয়াজ্জিন আফিজ উদ্দীন, হত্যা মামলার প্রধান আসামি আবুল হোসেন, মেহেদী হাসান রাজু, গণি কবিরাজ ও রাসেল ইসলাম ওরফে রাজ বিশু।
শহীদুন্নবী জুয়েলের বাড়ি রংপুরের শালবন এলাকায়। তিনি রংপুর ক্যান্টনমেন্ট পাবলিক স্কুল অ্যান্ড কলেজের লাইব্রেরিয়ান ছিলেন।