কাতার বিশ্বকাপের আগে ‘কাতার ওয়েলকামস ইউ’ শীর্ষক একটি বার্তা-সংবলিত ইনফোগ্রাফ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। এতে বিশ্বকাপের সময় মদ্যপান, সমকামিতা, গালি দেয়াসহ কী কী বিষয় কাতারে নিষিদ্ধ সেগুলোর উল্লেখ রয়েছে।
তবে আয়োজক কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, এ ধরনের কোনো ইনফোগ্রাফ তারা প্রকাশ করেনি এবং এর মাধ্যমে বিভ্রান্তি ছড়ানো হচ্ছে।
কাতারের সুপ্রিম কমিটি ফর ডেলিভারি অ্যান্ড লেগ্যাসির (এসসি) পক্ষ থেকে এক বিবৃতিতে বলা হয়, বিশ্বকাপ উপভোগ করতে আসা সবাইকে স্বাগত জানানো হবে। কাতার সব সময়ই উন্মুক্ত, সহনশীল ও সবাইকে সাদরে গ্রহণ করার দেশ। আন্তর্জাতিক দর্শক ও ভক্তরা এবারের বিশ্বকাপে একই অভিজ্ঞতা লাভ করবেন।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ইনফোগ্রাফে বলা হয়েছে, ডেট করা, অনুমতি ছাড়া কারও ছবি তোলা, উচ্চৈঃস্বরে গান ও বাদ্য বাজানোও নিষেধ।
কাতারের হামাদ বিন খলিফা ইউনিভার্সিটি মিডল ইস্টার্ন স্টাডিজের সহযোগী অধ্যাপক মার্ক ওয়েন জোনস বলেন যে ইনফোগ্রাফটি টুইটারে ১৫ হাজারের বেশিবার রি-টুইট করা হয়েছে এবং ৪৫ হাজার লাইক রয়েছে।
সৌদি আরবের মতো কাতারে মদ্যপান নিষিদ্ধ নয়, তবে জনসমক্ষে মদ্যপান বেআইনি। দেশটির বিভিন্ন লাইসেন্সধারী হোটেল ও ক্লাবে মদ কেনাবেচা হয়।
এসসির পক্ষ থেকে আগেই নিশ্চিত করা হয়েছে, বিশ্বকাপের ভেন্যুগুলোর নির্দিষ্ট স্থানে মদ বিক্রির ব্যবস্থা থাকবে, তবে সেটি খেলা চলাকালীন নয়। খেলা শুরুর তিন ঘণ্টা আগে ও শেষ হওয়ার এক ঘণ্টা পর মদ কেনা যাবে। আর ফিফার অফিশিয়াল ফ্যানজোনে মদ কেনা যাবে সন্ধ্যা সাড়ে ৬টা থেকে রাত ১টা পর্যন্ত।
বিশ্বকাপের সময় চলমান আরকেডিয়া স্পেকটেকুলার ইলেকট্রনিক মিউজিক ফেস্টিভ্যালে প্রতিদিন ভক্তরা সকাল ১০টা থেকে ভোর ৫টা পর্যন্ত মদ্যপান করতে পারবেন। বিশ্বকাপ আয়োজকেরা আশা করছেন, বিখ্যাত ডিজে ও সংগীত শিল্পীদের এই কনসার্টে ২ লাখ লোকের সমাগম হবে।
কাতারে সমকামিতা বেআইনি, যার শাস্তি তিন বছর পর্যন্ত জেল ও জরিমানা। এমনকি মৃত্যুদণ্ডেরও সম্ভাবনা রয়েছে। তবে দেশটিতে সমকামিতার জন্য মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার নজির এখন পর্যন্ত নেই।
মানবাধিকার সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল সমকামীদের অধিকারের বিষয়ে কাতারের রেকর্ড নিয়ে উদ্বিগ্ন। তাদের দাবি, দেশটিতে নারী ও এলজিবিটিকিউ প্লাস লোকেরা ‘আইন ও এর প্রয়োগে বৈষম্যের সম্মুখীন’।
কাতার বিশ্বকাপের প্রধান নির্বাহী নাসের আল-খাতার অবশ্য সবার উদ্দেশে বলেছেন, ‘যেকোনো লিঙ্গ, লৈঙ্গিক অভ্যস্ততা, ধর্ম, বর্ণের মানুষ আশ্বস্ত থাকা উচিত। কারণ কাতার বিশ্বের অন্যতম নিরাপদ দেশ। সব মানুষকে এখানে স্বাগত জানানো হবে।’