বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) বৈষম্যমূলক নীতি, আবাসন ভাতা ও হল নির্মাণসহ চার দফা দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল ও অবস্থান কর্মসূচি পালন করেছেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) শিক্ষার্থীরা। বুধবার (৭ মে) সকাল ১০টায় বিশ্ববিদ্যালয়ের ভাস্কর্য চত্বর থেকে মিছিল নিয়ে ক্যাম্পাস প্রদক্ষিণ করে ভিসি ভবনের সামনে এ অবস্থান কর্মসূচি পালিত হয়।
এ সময় শিক্ষার্থীরা ‘প্রহসনের বাজেট মানি না, মানবো না’; ‘বৈষম্যের কালো হাত, ভেঙে দাও গুঁড়িয়ে দাও’; ‘বাজেট নিয়ে বৈষম্য মানি না, মানবো না’; ‘ইউজিসির গদিতে, আগুন জ্বালো একসাথেসহ’ বিভিন্ন স্লোগান দেন।
অবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে জবি বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক মাসুদ রানা বলেন, ‘জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা সব আন্দোলনেই সক্রিয়ভাবে অংশ নিয়েছেন।’
ইউজিসি চেয়ারম্যানকে উদ্দেশ্য করে তিনি বলেন, ‘আপনি যে পদে বসে আছেন, সেই পদে বসতে জবি শিক্ষার্থীদের ত্যাগ আছে। সুতরাং বৈষম্য বন্ধ করুন এবং জবির শিক্ষার্থীদের আবাসনসহ চার দাবি দ্রুত মেনে নিন। দাবি মেনে না-নিলে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ঘেরাও করা হবে।’
কর্মসূচিতে জবি ইসলামি ছাত্র আন্দোলনের সেক্রেটারি আশিকুর রহমান বলেন, ‘২০২৪ সালের আন্দোলনে এমন কোনো দিন ছিল না, যেদিন পুরান ঢাকায় আন্দোলন হয়নি। আমাদের রক্তের ওপর দাঁড়িয়ে আপনারা মন্ত্রণালয় গঠন করেছেন, অথচ আজ আমাদের ওপরই বৈষম্য করছেন।’
‘আবাসন ভাতা ছাড়া জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় চলতে পারে না। আমাদের ৯০-৯৫ শতাংশ শিক্ষার্থী টাকার অভাবে সকালের নাশতা খেতে পারেন না। পুরান ঢাকার ঘিঞ্জি পরিবেশে আমরা মানবেতর জীবনযাপন করছি,’ অভিযোগ করেন এই শিক্ষার্থী।
এদিকে, জবি ছাত্র অধিকার পরিষদের সভাপতি এ কে এম রাকিব বলেন, ‘হয় জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় একটি পূর্ণাঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো চলবে, নয়তো চিরতরে বন্ধ হয়ে যাবে। ঢাকার মধ্যে দুটি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে বাজেটে এত বৈষম্য কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।’
এ বিষয়ে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) সদস্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ তানজীমউদ্দিন খান বলেন, ‘আমরা জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের দাবির প্রতি সহানুভূতিশীল। শিক্ষার্থীদের আবাসন ভাতা দেওয়ার চেষ্টা করছি এবং তাদের চার দফা দাবি পূরণে সর্বোচ্চ চেষ্টা করছি। তবে, আমাদেরও সীমাবদ্ধতা আছে। বাজেট বৃদ্ধির নীতিমালাতেও ত্রুটি আছে, এজন্য আমরা ইউজিসি সংস্কারের প্রস্তাব দিয়েছি ‘
শিক্ষার্থীদের চার দফা দাবি হলো: ২০২৫-২৬ অর্থবছরের বাজেটে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বাজেট বৃদ্ধি এবং অন্তত ৭০ শতাংশ শিক্ষার্থীর জন্য আবাসন ভাতা অন্তর্ভুক্ত করা। দ্বিতীয় ক্যাম্পাস নির্মাণ এবং পুরান ঢাকায় ড. হাবিবুর রহমান হল ও বাণী ভবনের নির্মাণকাজ আগামী ১০ মে’র মধ্যে শুরু করা। বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের প্রতি ১৫ দিন অন্তর দ্বিতীয় ক্যাম্পাস ও হল নির্মাণ কার্যক্রমের অগ্রগতি মুক্তমঞ্চে ব্রিফ করার বাধ্যবাধকতা আরোপ। আগামী ১৫ মে’র মধ্যে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (জকসু) নির্বাচনের রোডম্যাপ ঘোষণা।