দারিদ্র্য, বেকারত্ব ও কার্বন নিঃসরণ—এই তিন সামাজিক ও পরিবেশগত সংকটের সমাধানে প্রস্তাবিত ‘থ্রি জিরো’ তত্ত্বকে টেক্সটাইল শিল্পে বাস্তবায়নের ওপর জোর দেওয়া হয়েছে নর্দান ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশে (এনইউবি) আয়োজিত এক সেমিনারে।
রবিবার বিশ্ববিদ্যালয়ের টেক্সটাইল ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের উদ্যোগে আয়োজিত “The Three Zero Theory and Its Transformational Impact on Bangladesh’s Textile Industry” শীর্ষক এই সেমিনারে বক্তারা শিল্প খাতে পরিবেশ ও মানুষের টেকসই ভবিষ্যৎ গড়ে তুলতে রূপান্তরমূলক পরিকল্পনার ওপর গুরুত্ব দেন।
এই তত্ত্বের প্রবক্তা নোবেল বিজয়ী ড. মুহাম্মদ ইউনূসের দর্শনের প্রতি শ্রদ্ধা জানিয়ে H&M এর সাসটেইনেবিলিটি এক্সপার্ট পার্থ রায় বলেন, “দারিদ্র্য, বেকারত্ব ও কার্বন নিঃসরণ কমানোর লক্ষ্যে থ্রি জিরো তত্ত্ব আমাদের উদ্যোগের ভিত্তি। বাংলাদেশের টেক্সটাইল খাতে এটি বাস্তবায়ন হলে বৈশ্বিকভাবে নেতৃত্ব নেওয়ার সম্ভাবনা তৈরি হবে।” তবে এর জন্য নীতিগত সহায়তা, প্রযুক্তিগত অগ্রগতি ও দক্ষ জনবল গড়ে তোলার প্রয়োজনীয়তার কথাও তিনি তুলে ধরেন।
সেমিনারে অংশ নিয়ে GSCS ইন্টারন্যাশনাল লিমিটেডের টেকনিক্যাল ম্যানেজার সাফায়েত বিন ইসলাম বলেন, “সাসটেইনেবিলিটি এখন আর বিকল্প নয়, এটি শিল্প খাতের অবিচ্ছেদ্য বাস্তবতা। পরিবেশবান্ধব প্রযুক্তি প্রয়োগ করে কার্বন নিঃসরণ হ্রাসই আগামী দিনের টেক্সটাইল খাতের মূল চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা।”
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মিজানুর রহমান বলেন, “শুধু তত্ত্ব নয়, থ্রি জিরো দর্শন একটি বাস্তবভিত্তিক রূপান্তরের মডেল, যা আমাদের অর্থনৈতিক কাঠামোতে মৌলিক পরিবর্তন আনতে পারে। বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে গবেষণা ও বাস্তবভিত্তিক প্রয়োগ দিয়ে এর বাস্তব রূপরেখা তৈরি সম্ভব।”
সেমিনারে জানানো হয়, এনইউবির টেক্সটাইল বিভাগ ইতিমধ্যে টেক্সটাইল বর্জ্য পানি পুনঃব্যবহার, ভূগর্ভস্থ পানির ব্যবহার হ্রাস, পরিবেশবান্ধব ডাইং প্রযুক্তি, এনার্জি সাশ্রয়ী প্রযুক্তি এবং আগুন প্রতিরোধী-তাপ নিরোধক কম্পোজিট তৈরির ওপর গবেষণা চালিয়ে যাচ্ছে।
বিভাগীয় প্রধান ও সহযোগী অধ্যাপক জি এম ফয়সাল ‘থ্রি জিরো’ ভিত্তিক একটি গবেষণা মডেল উপস্থাপন করেন, যেখানে দক্ষ মানবসম্পদ গঠন, গ্রিন এনার্জি ব্যবহার এবং বর্জ্য পুনর্ব্যবহারকে মূল উপাদান হিসেবে দেখানো হয়।