ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের হলপাড়া অর্থাৎ বিজয় একাত্তর হল, কবি জসিম উদ্দীন হল, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল থেকে শিক্ষার্থীদের বের করে দিচ্ছে পুলিশ। এর আগে পুলিশ হল পাড়ার দিকে রাবার বুলেট ছুড়লে এক শিক্ষার্থী আহত হন।
আহত শিক্ষার্থী আব্দুল হান্নান মাসউদ আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক।
পরে পুলিশের পক্ষ থেকে শিক্ষার্থীদের বের হয়ে আসতে বললে শিক্ষার্থীরা নিজেদের ব্যাগপত্র গুছিয়ে হলগুলো থেকে একে একে বের হয়ে আসেন।
এর আগে বুধবার বিকেল থেকে পুলিশের সঙ্গে আন্দোলনকারীদের সংঘর্ষে শিক্ষার্থীরা হল পাড়া, মল চত্বরের দিকে অবস্থান নিলে পুলিশ তাদের লক্ষ্য করে রাবার বুলেট, টিয়ারগ্যাস আর সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ে। এতে কোনো শিক্ষার্থী আহত হয়েছেন কিনা তাৎক্ষণিকভাবে সে সম্পর্কে জানা যায়নি। পুলিশ চারদিক থেকে সাঁড়াশি অভিযান চালিয়ে হল পাড়ার দিকে এগুতে থাকে।
কোটা সংস্কার আন্দোলনে পুলিশ ও ছাত্রলীগ নেতাকর্মীদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষে নিহতদের গায়েবানা জানাজা ও কফিন মিছিল আয়োজনকে কেন্দ্র করে দুপুর থেকে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে মুহুর্মুহু সাউন্ড গ্রেনেড এবং টিয়ারশেল নিক্ষেপ করছে পুলিশ।
ক্যাম্পাসে গায়েবানা জানাজায় শিক্ষার্থীরা। ছবি: নিউজবাংলা
দুপুর ২টায় আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের এই কর্মসূচি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যে শুরু হওয়ার কথা ছিল। বেলা আড়াইটার দিকে রাজু ভাস্কর্যে আসেন গণতান্ত্রিক ছাত্রশক্তির আহবায়ক এবং ডাকসুর সাবেক সমাজসেবা সম্পাদক আখতার হোসেনসহ আরও তিনজন। তাদের পিছু পিছু আসেন একদল সমাজকর্মী। এ সময় পুলিশ তাদের বাঁশি দিয়ে তাদেরকে রাজু ভাস্কর্য চত্বর থেকে সরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করে। পুলিশের জবরদস্তির মুখে মাটিতে শুয়ে পড়েন আখতার এবং তার সঙ্গেথাকা আরও কয়েকজন।
এ সময় তিনি বলেন, ‘এটা আমাদের ক্যাম্পাস। আমি এখান থেকে কোথাও যাব না। প্রয়োজনে আমার লাশ যাবে।’
কিছুক্ষণ পর পুলিশ আরও সামনে এগুনোর চেষ্টা করলে আখতারকে রক্ষা করতে ঘিরে ধরেন আরও কয়েকজন শিক্ষার্থী।
এসময় পরপর কয়েকটি সাউন্ড গ্রেনেডের বিস্ফোরণ ঘটায় পুলিশ। এতে সবাই ছত্রভঙ্গ হয়ে গেলে পুলিশ আখতারকে আটক করে শাহবাগ থানায় নিয়ে যায়।
Caption
অন্যদিকে বেলা ৩টা থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি চত্বরে জড়ো হতে থাকেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। বিকেল ৪টায় এখানে নিহতদের গায়েবানা জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। জানাজা শেষে শিক্ষার্থীরা টিএসসির দিকে এগুতে চাইলে টিএসসিতে অবস্থান করা আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা তাদের দিকে মুহুর্মুহু সাউন্ড গ্রেনেড ও টিয়ারগ্যাস ছোড়ে। এখানে প্রায় এক ঘণ্টা ধরে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষ চলে।
বিকেল ৫টার দিকে পুলিশ হলপাড়ার দিকে এগিয়ে যায়। এ সময় পুলিশের পক্ষ থেকে রাবার বুলেট, টিয়ারগ্যাস আর সাউন্ড গ্রেনেড নিক্ষেপ করতে দেখা যায়।