সরকারি চাকরিতে কোটার যৌক্তিক সংস্কারের দাবিতে আন্দোলনকারীরা আগামীকাল শুক্রবার সারাদেশে বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশের কর্মসূচি ঘোষণা করেছেন। রাজধানীর শাহবাগ মোড়ে প্রায় চার ঘণ্টা অবস্থানের পর এই কর্মসূচি ঘোষণা করে শিক্ষার্থীরা অবরোধ তুলে নিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার রাত ৯টায় আন্দোলনকারীরা শাহবাগ মোড় ছাড়েন। এরপর রাজধানীর অন্যতম ব্যস্ত এই সড়ক মোড় দিয়ে যানবাহন চলাচল শুরু হয়। আর শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজু ভাস্কর্যে গিয়ে তাদের কর্মসূচি শেষ করেন।
কর্মসূচি ঘোষণা করে আন্দোলনের অন্যতম সমন্বয়ক নাহিদ হাসান বলেন, ‘আমাদের এক দাবিসহ আজ বৃহস্পতিবার সারাদেশে আমাদের আন্দোলনে যে হামলা ও বাধা দেয়া হয়েছে আর যারা এটি করেছে তাদের বিচারের দাবিতে দেশের সব ক্যাম্পাসে আগামীকাল শুক্রবার বিকেল ৪টায় বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ অনুষ্ঠিত হবে।’
তিনি বলেন, ‘আমাদের এক দফা দাবি বাস্তবায়নে জাতীয় সংসদের জরুরি অধিবেশন ডেকে আইন পাস করতে হবে। তার আগ পর্যন্ত আমরা রাজপথে থাকব।’
নাহিদ বলেন, ‘আমরা শুরু থেকেই বলে এসেছি যে কোটা সংস্কার সরকারের নীতির বিষয়। সরকারের এই নীতিতে যদি সংবিধান পরিপন্থী কিছু থাকে তখন সেখানে আদালত হস্তক্ষেপ করবে। ১৮-র পরিপত্র সংবিধান পরিপন্থী ছিলো বলেই আদালত সেখানে হস্তক্ষেপ করেছে। এবার আমরা কোনো ফঁদে পা দিতে চাই না। কোনো ভুল করতে চাই না।’
হাইকোর্টের সঙ্গে চলমান আন্দোলনের কোনো সম্পর্ক নেই দাবি করে আন্দোলনের এই অন্যতম সমন্বয়ক বলেন, ‘আদালতের প্রতি আমাদের পূর্ণ শ্রদ্ধা এবং সম্মান রয়েছে। আমাদের এক দফা দাবি সরকার ও আইন বিভাগের কাছে। কিন্তু সরকার এবং গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিবর্গ আদালতকে সামনে রেখে আমাদের সঙ্গে টালবাহানা করছেন। তারা আমাদের আন্দোলনের ন্যায্যতা নিয়ে প্রশ্ন তুলছেন। আজকে মহামান্য আদালত তার অবস্থান স্পষ্ট করেছে। আদালতকে আমরা সাধুবাদ জানাই।’
তিনি বলেন, ‘আমরা মনে করছি সরকার নিজেই আদালতকে অবমাননা করার চেষ্টা করছে। যে কাজ সরকারের সেটি তারা আদালতের দিকে ছুড়ে দিচ্ছে। তাই আমাদের দাবি, এসব টালবাহানা বন্ধ করে সংসদের জরুরি অধিবেশন ডেকে কোটার আইন পাস করতে হবে।’
নাহিদ বলেন, ‘কোটা সমস্যার নিরসন সাধারণ শিক্ষার্থীদের প্রাণের দাবি। তাই এখানে বিভিন্ন দল, মত ও পথের শিক্ষার্থীরা রয়েছেন। এই ইস্যুতে আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ।’
নাহিদ আরও বলেন, ‘আমাদের আন্দোলনে জনদুর্ভোগের কথা বলা হচ্ছে। আমরা আন্দোলন করছি কিন্তু সরকার কর্ণপাত করেনি। এটি সুরাহার দায়িত্ব কার? সরকারে। সরকার এবং আদালতের রায়ে এই আন্দোলনের প্রেক্ষাপট শুরু হয়েছে। কিন্ত তারা কর্ণপাত না করায় আমাদের রাজপথে থাকতে হয়েছে। তাই এই দুর্ভোগের দায় তাদেরকেই নিতে হবে।’
আন্দোলনের আরেক সমন্বয়ক হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘আন্দোলনের শুরু থেকেই অনেকে আমাদের হাইকোর্ট দেখিয়েছে। সরকারের উপর মহল থেকে আমাদেরকে বলা হয়েছে হাইকোর্টের ওপর ভরসা রাখতে। আমরা হাইকোর্টের ওপর ভরসা রেখেছি। কিন্তু এই হাইকোর্ট আজ আপনাদেরকে একটি দায়িত্ব দিয়েছে। আশা করি অতিসত্বর আপনারা এই দায়িত্বটি পালন করে আমাদেরকে রাজপথ থেকে ফেরাবেন।’