বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

শিক্ষক মুরাদের বিরুদ্ধে ছাত্রী হয়রানির প্রমাণ মিলেছে, দাবি পুলিশের

  • নিজস্ব প্রতিবেদক   
  • ২৯ ফেব্রুয়ারি, ২০২৪ ২১:০৬

ডিএমপির অতিরিক্ত কমিশনার খ. মহিদ উদ্দিন বলেন, ‘কোচিং সেন্টারে ছাত্রীদের পড়ানোর নামে বিভিন্ন সময় তাদের শরীরে হাত দেয়াসহ নানা অশোভন আচরণের মাধ্যমে যৌন হয়রানি করেছেন শিক্ষক মুরাদ। তার প্রমাণ পাওয়া গেছে তার মোবাইল ফোন ও ল্যাপটপে।’

ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের শিক্ষক মোহাম্মদ মুরাদ হোসেন সরকারের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীকে যৌন নিপীড়নের অভিযোগের সত্যতা পেয়েছে পুলিশ।

ঢাকা মহানগর পুলিশের (ডিএমপি) অতিরিক্ত কমিশনার খ. মহিদ উদ্দিন বৃহস্পতিবার ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে একথা জানান।

পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘অভিযুক্ত ব্যক্তির ফোন ও ল্যাপটপ জব্দ করে কিছু অডিও-ভিডিও ক্লিপ পাওয়া যায়। ডিভাইস দুটি ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হবে।

‘ওই শিক্ষক আদালতে ফৌজদারি কার্যবিধির ২২ ধারায় সাক্ষ্য দিয়েছেন। আমরা অনেক তথ্য পাচ্ছি। আসামি এসব অভিযোগ এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করেন।’

সংবাদ সম্মেলনে অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, ‘স্কুলের পাশে কোচিং সেন্টারে ছাত্রীদের পড়ানোর নামে বিভিন্ন সময় তাদের শরীরে হাত দেয়াসহ নানা অশোভন আচরণের মাধ্যমে যৌন হয়রানি করেছেন শিক্ষক মুরাদ। যার প্রমাণ পাওয়া গেছে তার মোবাইল ফোন ও ল্যাপটপে।

‘একাধিক ছাত্রীর বেশকিছু অডিও রেকর্ডিং ও কথোপকথনে এর প্রমাণ মিলেছে। তিনি পড়ানোর সময় শিক্ষার্থীদের কুরুচিপূর্ণ কৌতুক শোনাতেন বলেও জানা গেছে।’

মুরাদকে রিমান্ডে নিয়ে কী তথ্য পাওয়া গেছে জানতে চাইলে অতিরিক্ত কমিশনার বলেন, ‘যে অভিযোগে গ্রেপ্তার করা হয়েছে পুলিশ হেফাজতে দুদিন জিজ্ঞাসাবাদ করার পর তার সত্যতা পাওয়া গেছে।

‘গত বছরের নভেম্বরে ওই শিক্ষার্থী যে যৌন নির্যাতনের শিকার হয়, তার প্রাথমিক সত্যতাও পেয়েছে পুলিশ। তবে ওই ঘটনা জানাজানি হলে মা-বাবার সম্মানহানি হবে এবং স্কুল থেকে তাকে বের করে দেয়া হবে এমন আশঙ্কায় নির্যাতিত ছাত্রী কাউকে কিছু জানায়নি।’

পুলিশের এই কর্মকর্তা বলেন, ‘২৬ ফেব্রুয়ারি এক শিক্ষার্থীর মা লালবাগ থানায় এসে অভিযোগ করেন, ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী যখন সপ্তম শ্রেণিতে পড়ত, তখন সে ওই শিক্ষকের কোচিংয়ে পড়তে যেত। মেয়েটিকে গত বছরের ১০ মার্চসহ বিভিন্ন সময় নানাভাবে যৌন নিপীড়ন করেছেন শিক্ষক মুরাদ।’

তিনি বলেন, ‘এই শিক্ষকের বিরুদ্ধে আগেও এমন অভিযোগ এসেছে। এ নিয়ে কিছু অভিভাবক ও তাদের সন্তানদের বক্তব্য শোনেন কলেজের অধ্যক্ষ। তিনি একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেন। এ ঘটনায় স্কুলে মানববন্ধনও হয়। ২৬ ফেব্রুয়ারি মামলা হওয়ার পর ওই রাতে আসামিকে গ্রেপ্তার করা হয়।’

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে মহিদ উদ্দিন বলেন, ‘ফৌজদারি অপরাধ কখনও তামাদি হয়ে যায় না। আর শ্লীলতাহানির অভিযোগ প্রমাণের জন্য মেডিক্যাল প্রতিবেদন জরুরি নয়। অভিযোগ প্রমাণের জন্য আরও অনেক প্রক্রিয়া রয়েছে।

‘আমরা প্রত্যেক নাগরিকের অধিকারের বিষয়ে সংবেদনশীল। যৌন নিপীড়ন সংক্রান্ত অপরাধ কত দিন, কত জায়গায়, কতবার হয়েছে, সবই তদন্তের আওতায় আনা হবে।’

অভিযুক্ত মুরাদ হোসেন সরকার ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের আজিমপুর ক্যাম্পাসের দিবা শাখার গণিতের জ্যেষ্ঠ শিক্ষক। ২০১০ সাল থেকে তিনি বিদ্যালয়টিতে শিক্ষকতা করছেন। পাশাপাশি আজিমপুর এলাকার একটি ফ্ল্যাটে কোচিং সেন্টার খুলে ছাত্রীদের পড়াতেন।

শিক্ষক মুরাদ কারাগারে

যৌন হয়রানির মামলায় ভিকারুননিসা নূন স্কুল অ্যান্ড কলেজের আজিমপুর ক্যাম্পাসের গণিতের শিক্ষক মুরাদ হোসেন সরকারকে কারাগারে পাঠিয়েছে আদালত।

দুদিনের রিমান্ড শেষে বৃহস্পতিবার আদালতে হাজির করলে তাকে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন ঢাকা মহানগর হাকিম মোহাম্মদ জসিম।

একইসঙ্গে আসামি পক্ষের আইনজীবী চিকিৎসার আবেদন করলে কারাবিধি মোতাবেক তার চিকিৎসার ব্যবস্থা নিতে নির্দেশ দেয় আদালত।

সোমবার রাত ১২টার দিকে রাজধানীর কলাবাগানের বাসা থেকে মুরাদকে গ্রেপ্তার করা হয়। ওই রাতেই ভিকারুননিসা স্কুলের গভর্নিং বডির জরুরি সভায় তাকে সাময়িক বরখাস্ত করা হয়।

এর আগে ৭ ফেব্রুয়ারি ওই শিক্ষকের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ এনে অধ্যক্ষ বরাবর অভিযোগ করেন শিক্ষার্থীরা।

শিক্ষার্থীদের একাংশ ও তাদের অভিভাবকদের আন্দোলনের মুখে শনিবার স্কুল কর্তৃপক্ষ এই শিক্ষককে প্রত্যাহার করে অধ্যক্ষের কার্যালয়ে সংযুক্ত করে।

পরদিন প্রত্যাহারের সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে এবং দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে স্কুল ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা।

এ বিভাগের আরো খবর