মাদারীপুরের শিবচরের একটি স্কুল থেকে শিক্ষাসফরে গিয়ে অপ্রাপ্তবয়স্ক শিক্ষার্থীদের সঙ্গে নিয়ে শিক্ষকদের মদ্যপানের ঘটনা ঘটেছে। এ ঘটনার ভিডিও সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ইতোমধ্যে ভাইরাল।
ভাইরাল ওই ভিডিওতে দেখা গেছে, বিদ্যালয়ের ইংরেজি শিক্ষক মো. ওয়ালিদ মদের বোতল হাতে নিয়ে মদ ঢালছেন, শিক্ষার্থীদের হাতে বোতল দিচ্ছেন। আবার বিদেশি মদের বোতল থেকে শিক্ষককে মদ ঢেলে দিচ্ছে এক শিক্ষার্থী, আবার শিক্ষকের সামনেই শিক্ষার্থীরা আনন্দ উল্লাস করে মদ্যপান করছে।
শনিবার শিবচর উপজেলার বন্দরখোলা ইউনিয়নের শিকদার হাট উচ্চ বিদ্যালয় থেকে নারায়ণগঞ্জের সোনারগাঁওয়ে শিক্ষাসফর শেষে ফেরার পথে ওই ভিডিওটি করা হয় বলে খোঁজ জানা গেছে।
জানা যায়, শনিবার ভোরে বিদ্যালয়ের ১৬ জন শিক্ষক-শিক্ষিকা ৪১ শিক্ষার্থীকে নিয়ে শিক্ষাসফরের উদ্দেশ্যে নারায়নগঞ্জের সোনারগাঁও যান। সফরে শিক্ষার্থীদের কোনো অভিভাবককে সঙ্গে নেয়া হয়নি।
স্থানীয় সুত্র জানায়, শিক্ষাসফর শেষে শিক্ষার্থীরা এলাকায় ফেরার পরপরই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুক ও টিকটকে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মদ্যপানের ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে। এমন ভিডিও দেখে অভিভাবকদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে।
বিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর মা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আমার মেয়েও শিক্ষাসফরে গিয়েছিল। শিক্ষকরা কোনো শিক্ষার্থীর অভিভাবককে সঙ্গে যেতে দেয়নাই।’
ভিডিওটির ব্যাপারে তিনি বলেন, ‘শিক্ষকদের সামনেই যদি এমন কর্মকাণ্ড হয়, তবে আর কিছুই বলার থাকে না।’
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. আলাউদ্দিন বলেন, ‘শিক্ষাসফরের আগের দিন আমি ঢাকায় ছিলাম। সেখান থেকে সরাসরি শিক্ষা সফরের স্পটে যোগ দিয়েছি। এর আগে বাসের মধ্যে কী হয়েছে, আমি জানি না।’
তিনি বলেন, ‘সফরকালে বাসের দায়িত্বে ছিলেন শিউলি ম্যাডাম। আমি বাসে ওঠার পর এমন কোনো ঘটনা ঘটেনাই।’
এ ব্যাপারে বন্দরখোলা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আব্দুর রহমান খান বলেন, ‘শিক্ষাসফরের ব্যাপারে আমি কিছুই জানি না। শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা মদ খেয়ে নেচেছে বলে শুনেছি ও ভিডিও দেখেছি।’
মোবাইল ফোনে যোগাযোগ করা হলে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার খন্দকার মাকসুদুর রহমান বলেন, ‘বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে অবগত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’
এই ব্যাপারে শিবচর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘এটা কোনোভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। এ বিষয়ে তদন্ত কমিটি করা হবে। শিক্ষকরা যদি এর সঙ্গে জড়িত থাকে, তবে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে।’