বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

সিলেটের লিডিং ইউনিভার্সিটির দুই শিক্ষককে ‘নিয়মবহির্ভূত’ বরখাস্ত: আন্দোলনে শিক্ষার্থীরা

  • প্রতিবেদক,সিলেট   
  • ১৬ অক্টোবর, ২০২৩ ২০:০৯

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘দুজন শিক্ষকের কিছু অনিয়ম নিয়ে তদন্ত কমিটি হয়েছিল। কমিটির প্রতিবেদন পেয়ে অভিযুক্তদের কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়। দুই শিক্ষক নোটিসের জবাব দেননি। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্যরা তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছেন।’

সিলেটের লিডিং ইউনিভার্সিটির স্থাপত্য বিভাগের দুই শিক্ষক বরখাস্তের ঘটনাকে কেন্দ্র করে ক্যাম্পাসে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে।

ওই দুই শিক্ষককে পুণর্বহালের দাবিতে আন্দোলনে নেমেছেন শিক্ষার্থীরা। সিলেটের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষও শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে শরিক হয়েছেন। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, নিয়মবহির্ভূতভাবে ওই দুই শিক্ষকককে বরখাস্ত করা হয়েছে।

দুই শিক্ষককে বরখাস্তের প্রতিবাদে সোমবার বিকেলে ‘সম্মিলিত নাগরিক সমাজ’-এর ব্যানারে সিলেট নগরের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার প্রাঙ্গণে মানববন্ধন ও সমাবেশ করেছে। এতে সিলেটের বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার বিশিষ্টজনের পাশপাশি লিডিং ইউনিভার্সিটির স্থাপত্য বিভাগের শিক্ষার্থীরাও অংশ নেন।

এর আগে রোববার সকালে দক্ষিণ সুরমার কামালবাজার এলাকার ইউনিভার্সিটির ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ ও সমাবেশ করেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয়টির ট্রেজারারের কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দেন।

শিল্পপতি রাগীব আলীর মালিকানাধীন এই বিশ্ববিদ্যালয়ে কদিন ধরেই নানা অস্থিরতা চলছে। কিছুদিন ধরে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য কাজী আজিজুল মাওলার সঙ্গে ট্রাস্টি বোর্ডের বিরোধ চলছে এবং এ বিরোধের জেরে দুই শিক্ষককে বরখাস্ত করা হয় বলে বিশ্ববিদ্যালয় সংশ্লিস্ট সূত্রে জানা গেছে।

বহিস্কৃত দুই শিক্ষক উপাচার্যের ঘনিষ্টজন হিসেবে পরিচিত। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্র জানায়, লিডিং ইউনিভার্সিটির উপাচার্য কাজী আজিজুল মাওলা যুক্তরাষ্ট্র সফরে আছেন। এ অবস্থায় ট্রেজারার বনমালী ভৌমিক ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য হয়ে গত ১২ অক্টোবর স্থাপত্য বিভাগের প্রধান স্থপতি রাজন দাশ এবং শিক্ষক স্থপতি সৈয়দা জেরিনা হোসেনকে বরখাস্ত করেন। নগরপরিকল্পনাবিদ হিসেবে জেরিনা হোসেন ও এবং স্থপতি রাজন দাশ দেশজুড়েই পরিচিত। ফলে তাদের এ বহিস্কারের প্রতিবাদে শিক্ষার্থীসহ তাদের শুভানুধ্যায়ীদের মধ্যে ক্ষোভ দেখা দিয়েছে।

সোমবারের মানবন্ধনে অংশ নিয়ে সিলেটের জ্যেষ্ঠ আইনজীবী ও রাজনীতিবিদ বেদানন্দ ভট্টাচার্য বলেন, ‘উপাচার্যের অনুপস্থিতিতে ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য কোনো শিক্ষককে বরখাস্ত করতে পারেন না। দুজন শিক্ষককে নিয়মবহির্ভূতভাবে বরখাস্ত করা হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়কে লুটেপুটে খাওয়ার জন্য একটি গোষ্ঠি এই কাজ করছে।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থাপত্য বিভাগের শিক্ষার্থী ফখরুল আমিন মনজু বলেন, ‘জেরিনা হোসেন ও রাজন দাশ শিক্ষক হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ে খুবই জনপ্রিয়। শিক্ষার্থীরা তাদের পছন্দ করে। বিশ্ববিদ্যালয়ে চলমান নানা অনিয়মের বিরোধিতা করেছিলেন এ দুই শিক্ষক। তাই ট্রেজারের নেতৃত্বে একটি গোষ্ঠী অন্যায়ভাবে তাদের বহিস্কার করে। বিশ্ববিদ্যালয়কে ধ্বংস করাই এই গোষ্ঠির লক্ষ্য।’

বনমালী ভৌমিকের ট্রেজারার পদে নিয়োগ নিয়ে প্রশ্ন তুলে তিনি বলেন, ‘ট্রেজারার হতে ১৫ বছরের অধ্যাপনার অভিজ্ঞতা থাকতে হয়। কিন্তু বনমালি ভৌমিক সরকারি কর্মকর্তার পদ থেকে অবসর নিয়েই এখানে ট্রেজারার পদে যোগ দেন। তার নিয়োগই অবৈধ।’

এসব বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য বনমালী ভৌমিকের ব্যবহৃত মোবাইল ফোন নম্বরে সোমবার বিকেলে একাধিকবার কল দিলেও তিনি রিসিভ করেননি।

তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মো. মাহবুবুর রহমান বলেন, ‘দুজন শিক্ষকের কিছু অনিয়ম নিয়ে তদন্ত কমিটি হয়েছিল। কমিটির প্রতিবেদন পেয়ে অভিযুক্তদের কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়। দুই শিক্ষক নোটিসের জবাব দেননি। এরপর বিশ্ববিদ্যালয়ের সিন্ডিকেট সদস্যরা তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিয়েছেন।’

এ বিষয়ে রাজন দাশ বলেন, ‘উপাচার্য যুক্তরাষ্ট্র সফরে থাকা অবস্থায় নিয়ম নিয়মবহির্ভূতভাবে আমাকে বরখাস্ত করা হয়েছে।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের আইন অনুযায়ী ট্রাস্টি বোর্ডের নির্দেশে কাউকে নিয়োগ বা বরখাস্ত করা যায় না দাবি করে রাজন দাশ বলেন, ‘এ ঘটনাটি পূর্বপরিকল্পিতভাবে ঘটানো হয়েছে। গত আট মাস ধরে বিশ্ববিদ্যালয় নানা অনিয়ম-দুর্নীতি চলছে। ভুয়া অভিযোগে গত ১১ অক্টোবর আমাকে শোকজ করা হয়; শোকজের জবাব দেয়ার জন্য আমি ১০ দিন সময় চেয়েছিলাম। কিন্তু আমাকে মাত্র তিনদিন সময় দেয়া হয়। শোকজের কাগজ ৯ তারিখে স্বাক্ষরিত হলেও আমি ইমেইল পাই ১১ তারিখ। এর এক দিন পরই (১২ অক্টোবর) আরেক মেইলে রেজিস্ট্রার স্বাক্ষরিত বরখাস্ত আদেশ পাঠানো হয়।’

বরখাস্ত হওয়া অধ্যাপক সৈয়দা জেরিনা হোসেন বলেন, ‘ছাত্রদের কোর্স শেষ করার জন্য চার মাস সময় চেয়েছিলাম, তা আমাকে দেয়া হয়নি। নিয়মবহির্ভূতভাবে এটা করা হয়েছে। ট্রাস্টি বোর্ডের নির্দেশে এসব করা হয়েছে; বিশ্ববিদ্যালয়টিতে নানা অনিয়ম রয়েছে।’

এ বিভাগের আরো খবর