বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

অধ্যাপককে হুমকি, জবি ডিবেটিং সোসাইটির সভাপতিকে অব্যাহতি

  • প্রতিনিধি, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়   
  • ৩১ আগস্ট, ২০২৩ ১৯:৫৯

এর আগে গত বছর জুলাইতে সাইদের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে চাঁদাবাজির অভিযোগ রয়েছে, যা সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়। এ ছাড়া চলতি বছরের ৪ মার্চ সাইদের হাতে মারধরের শিকার হন ডিবেটিং সোসাইটির সাংগঠনিক সম্পাদক তৌফিকুল হাসান হৃদয়।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. শাহ মো. নিসতার জাহান কবিরকে প্রকাশ্যে দেখে নেয়ার হমকির ঘটনায় অভিযুক্ত শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউটের শিক্ষার্থী সাইদুল ইসলাম সাঈদকে ডিবেটিং সোসাইটির সভাপতির পদ থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি রেজিস্ট্রার (প্রশাসন) মশিরুল ইসলাম বৃহস্পতিবার বিকেলে নিউজবাংলাকে এ তথ্য জানিয়েছেন।

মশিরুল ইসলাম জানান, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. শাহ মো. নিসতার জাহান কবিরের সঙ্গে অসদাচরণ ও চেয়ারম্যানকে হুমকি প্রদানের জন্য জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ডিবেটিং সোসাইটির সভাপতি এবং শিক্ষা ও গবেষণা ইন্সটিটিউটের শিক্ষার্থী সাইদুল ইসলাম সাঈদকে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ডিবেটিং সোসাইটির সকল কার্যক্রম থেকে অব্যাহতি প্রদান করা হয়েছে।

এর আগে সোমবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শান্ত চত্বরে ডিবেটিং সোসাইটির নির্বাচনের জন্য বর্তমান সভাপতির পছন্দ অনুযায়ী ভোটার তালিকা না পাঠানোয় গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. শাহ নিসতার জাহান কবিরকে হুমকি দেয়ার অভিযোগ ওঠে সাইদুল হক সাঈদের বিরুদ্ধে। সেসময় ঘটনাস্থলে থাকা একই বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ইব্রাহীম বিন হারুণের সঙ্গেও অসদাচরণ করেন সাঈদ। পরে অভিযুক্ত সাঈদের বিরুদ্ধে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের নিকট লিখিত অভিযোগ দেয়া হয়৷

জানা যায়, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ডিবেটিং সোসাইটিতে ৩৬টি বিভাগ ও ২টি ইনস্টিটিউট থেকে ২ জন করে ভোটার নির্বাচিত হন, যাদের ভোটে পরবর্তীতে ডিবেটিং সোসাইটির কমিটি গঠন করা হয়। সাংবাদিকতা বিভাগ থেকে সাইদ তার পছন্দের ২ জনকে ভোটার করার জন্য অধ্যাপক শাহ নিস্তারকে অনুরোধ করেন। এ সময় অধ্যাপক নিস্তার বলেন, ‘প্রতিনিধি মনোনয়নের জন্য আলাদা শিক্ষক রয়েছেন। তারা বাছাই করে তা নির্ধারণ করেন।’

অধ্যাপক ড. শাহ নিস্তার জাহান কবীর এ বিষয়ে বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের নিকট একটি লিখিত অভিযোগ দেন। এতে বলা হয়েছে, গত সোমবার বিকাল ৩টা ৫০ মিনিটে বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তিযুদ্ধ ভাস্কর্যের সামনে শিক্ষকদের বাস ছাড়ার আগমুহূর্তে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ডিবেটিং সোসাইটির সভাপতি সাইদুর ইসলাম সাঈদ গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. শাহ নিসতার জাহান কবীরের সঙ্গে চরম ধৃষ্টতামূলক আচরণ করেন। সাঈদের পছন্দের প্রার্থীকে সাংবাদিকতা বিভাগ থেকে ডিবেটিং সোসাইটির নির্বাচনের জন্য প্রতিনিধি হিসেবে নাম না পাঠানোর জেরে বিভাগের চেয়ারম্যানকে দেখে নেয়ার হুমকি দেন তিনি।

এ বিষয়ে ওই বিভাগের অ্যাকাডেমিক কমিটির সভায় তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানানো হয়। বিভাগ মনে করে, ডিবেটিং সোসাইটিতে প্রতিনিধি প্রেরণের বিষয়টি একান্তই বিভাগের নিজস্ব বিষয়। এক্ষেত্রে কারও তরফ থেকেই কোনো নাম উল্লেখ করে প্রভাবিত করা বা চাপ প্রয়োগ করার কোনো সুযোগ নেই বলে অ্যাকাডেমিক কমিটি দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে।

অ্যাকাডেমিক কমিটির সর্বসম্মতিক্রমে, শিক্ষার সুষ্ঠু পরিবেশ বজায় রাখা, শিক্ষকদের সম্মান সমুন্নত রাখতে এবং ভবিষ্যতে কোনো শিক্ষক যেন এমন আচরণের শিকার না হন তা নিশ্চিত করতে ঘটনার সঙ্গে জড়িত শিক্ষার্থীর বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে দ্রুত ও প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার দাবি জানানো হয়। এ ঘটনায় অভিযুক্তের বিরুদ্ধে আইনি ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে চিঠিও দেয় জবি শিক্ষক সমিতি।

এ বিষয়ে ভুক্তভোগী অধ্যাপক ড. শাহ্ নিস্তার জাহান কবীর বলেন, ‘সাইদ তার পছন্দের লোককে অবৈধভাবে ডিবেটিং সোসাইটির নির্বাচনে প্রতিনিধি নিয়োগ দেয়ার জন্য বলেছিলেন। কিন্তু আমি তার অন্যায় দাবি মেনে নেইনি। পরবর্তীতে তিনি আমাকে প্রকাশ্যে দেখে নেয়ার হুমকি দেন। বিষয়টি নিয়ে আমি বিব্রত।’

অভিযুক্ত জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় ডিবেটিং সোসাইটির সভাপতি সাইদুর ইসলাম সাঈদ বলেন, ‘শিক্ষকরা আমাদের পিতৃতুল্য। আমি স্যারের কাছে ক্ষমা চেয়েছি। তিনি অভিযোগ তুলে নেয়ার ব্যাপারে ভেবে দেখবেন বলেছে।’

এ বিষয়ে শিক্ষক সমিতির সভাপতি অধ্যাপক ড. আইনুল ইসলাম বলেন, ‘শিক্ষক সমিতির পক্ষ থেকে আমরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে চিঠি দিয়েছি। আমরা ওই শিক্ষার্থীর শাস্তি দাবি করছি।’

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. মোস্তফা কামাল জানান, এ ঘটনায় তিন সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। মনোবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক ড. অশোক কুমার সাহাকে আহবায়ক ও ডেপুটি রেজিস্ট্রার হেদায়েত উল্লাহ তুর্কিকে সদস্য সচিব করে কমিটি গঠন করা হয়েছে। কমিটির অপর সদস্য হলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের সহকারী প্রক্টর দ্বীন ইসলাম।

এর আগে গত বছর জুলাইতে সাইদের বিরুদ্ধে প্রকাশ্যে ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে চাঁদাবাজির অভিযোগ রয়েছে, যা সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়। এতে একাধিক জাতীয় গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশ হয়। পরে ছাত্রলীগের সভাপতির কাছে বিচার দিলেও তারা কোনো ব্যবস্থা নেননি। এ ছাড়া চলতি বছরের ৪ মার্চ সাইদের হাতে মারধরের শিকার হন ডিবেটিং সোসাইটির সাংগঠনিক সম্পাদক তৌফিকুল হাসান হৃদয়। হৃদয়কে তিনি সেসময় ৫ মিনিটের মধ্যে ক্যাম্পাস ত্যাগ করার হুমকি দেন।

এ বিভাগের আরো খবর