বিশ্ব মেরুদণ্ড দিবসের এক আলোচনায় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা জানিয়েছেন, দেশে প্রায় ৫০ লাখ মানুষ এই সমস্যায় ভুগছেন। এই রোগের অন্যতম কারণ হিসেবে উঠে এসেছে ভারী স্কুলব্যাগ।
তারা বলছেন, দশম শ্রেণি পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা ভারী স্কুলব্যাগ বহন করে। দীর্ঘসময় এই ভারী ব্যাগ বহনের কারণে অনেকের মেরুদণ্ড বাঁকা হয়ে যায়, পিঠে-ঘাড়ে চাপ পড়ে। অল্প বয়স থেকেই তারা মেরুদণ্ডের সমস্যা নিয়ে বেড়ে ওঠে। এরাই ৪০ থেকে ৫০ বছরে পৌঁছলে অনেকেই মেরুদণ্ডজনিত সমস্যায় আক্রান্ত হন।
শিশুদের জন্য স্কুলে ব্যবহৃত বেঞ্চ বা চেয়ারগুলো স্বাস্থ্যসম্মত নয় বলেও মূল্যায়ন চিকিৎসকদের। তারা বলেন, আবার শিক্ষকদের জন্যও শ্রেণিকক্ষে বসার ব্যবস্থা থাকে না। দীর্ঘক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকার কারণে তারাও মেরুদণ্ডের সমস্যায় আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিতে আছেন।
চলতি বছর দিবসটির প্রতিপাদ্য ঠিক করা হয়েছে, 'মেরুদণ্ড আপনার অমূল্য সম্পদ, মেরুদণ্ডকে সুস্থ রাখতে হবে।’
রোববার দিবসটি পালনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ে বৈজ্ঞানিক সেমিনারের আয়োজন করে বাংলাদেশ নিউরো স্পাইন সোসাইটি।
সেমিনারে বক্তারা জানান, বিশ্বের ৫৪ কোটি মানুষ মেরুদণ্ডের সমস্যা ভুগছেন। প্রতি বছর বাংলাদেশ প্রায় ৬০ হাজার রোগী চিকিৎসা নেন। এদের মধ্যে ৪০ হাজারের দরকার পড়ে অস্ত্রোপচারে।
তবে এসব রোগীকে চিকিৎসায় বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক কেবল ২১২ জন। চিকিৎসক স্বল্পতাও একটি বড় সমস্যা। আবার অনেক ব্যয়বহুল হওয়ায় একটি বড় অংশই চিকিৎসার বাইরে রয়ে যায়।
সেমিনারের প্রধান অতিথি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য শারফুদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘বাংলাদেশে বিগত দিনের তুলনায় স্পাইন রোগের চিকিৎসা অনেক দূর এগিয়েছে। তবে কম সংখ্যক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক, প্রতিষ্ঠানের ঘাটতি ও আর্থিক অসচ্ছলতার কারণে জনগোষ্ঠীর ৫০ শতাংশ চিকিৎসাসেবার বাইরে রয়েছে।’
বর্তমান সরকার ২০২৫ সালের মধ্যে মেরুদণ্ডের চিকিৎসাসেবা জেলা পর্যায়ে পৌঁছাতে কাজ করছে বলেও জানান তিনি।
অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সরকার সমর্থক চিকিৎসকদের সংগঠন স্বাধীনতা চিকিৎসক পরিষদ-স্বাচিপের মহাসচিব এমএ আজিজ, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিক্যাল বিশ্ববিদ্যালয়ের সার্জারি অনুষদের ডিন অধ্যাপক মোহাম্মদ হোসেন।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন নিউরো স্পাইন সোসাইটির ভারপ্রাপ্ত সভাপতি কামাল উদ্দিন। সঞ্চালনা করেন অধ্যাপক রফিকুল ইসলাম।