সনাতন ধর্মাবলম্বীদের বড় ধর্মীয় উৎসব দুর্গাপূজার ছুটির মধ্যেই ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগ পরীক্ষা নিতে রুটিন প্রকাশ করেছে।
পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বাহালুল হক চৌধুরী স্বাক্ষরিত ওই রুটিনটি প্রকাশ করা হয়।
রুটিন অনুযায়ী, আগামী ১ অক্টোবর দুর্গাপূজার ষষ্ঠীর দিন এবং ৩ অক্টোবর অষ্টমীর দিন পরীক্ষা দিতে হবে বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের মাস্টার্স প্রথম সেমিস্টারের শিক্ষার্থীদের।
এই পরীক্ষা শুরু হবে ২৫ সেপ্টেম্বর থেকে, শেষ হবে ৩ অক্টোবর।
যদিও পূজা উপলক্ষ্যে ২ অক্টোবর রোববার থেকে ৫ অক্টোবর বুধবার বিশ্ববিদ্যালয় বন্ধ থাকবে।
এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, পরীক্ষা কমিটির সভাপতির চিঠির প্রেক্ষিতে আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মোহাম্মদ রুহুল আমিন এবং সামাজিক বিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক জিয়া রহমানের সুপারিশে পরীক্ষার সূচি প্রকাশ করা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের এমন আচরণে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন শিক্ষার্থীরা।
ওবায়দুর রহমান নামের এক শিক্ষার্থী বলেন, ‘আমরা এটা নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানিয়েছি। এটা কীভাবে হয়? তারা সাধারণত সবসময় বাড়ি যাবার সুযোগ পায় না। আর এটা ধর্মীয় উৎসবের বিষয়। আমরা দাবি করেছি, শেষের একটা বা দুইটা পরীক্ষা যেন অন্তত পরে নেয়া হয়।’
সৌম্যদ্বীপ সাহা কুনাল নামের এক শিক্ষার্থী ফেসবুকে বিষয়টি নিয়ে লেখেন, ‘এমন প্রহসন মানা যায় না। এই হচ্ছে আমাদের সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি। ইদানীং খুবই চর্চিত বিষয়ে পরিণত হয়েছে।’
‘একাডেমিক ক্যালেন্ডারে ১ তারিখ থেকে ৫ তারিখ বন্ধ থাকার পরও কীভাবে দুর্গাপূজার ষষ্ঠী ও অষ্টমীর দিন পরীক্ষার ডেট দেয়া হয়।’
তিনি আরও লেখেন, ‘ও হ্যাঁ, আমরা তো সংখ্যালঘু, আমাদের হয়ে তো কথা বলার কেউ নেই বা বললেও বা আপনারা শুনবেন কেন।’
গত মে মাসেই তাদের প্রথম সেমিস্টারের ক্লাস শেষ হয়েছে। দীর্ঘ চার মাস পরে এসে কেন দুর্গাপূজার মধ্যেই পরীক্ষা নিতে রুটিন দেয়া হয়েছে সেটি নিয়েও প্রশ্ন তোলেন এই শিক্ষার্থী।
এই বিষয়ে পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক বাহালুল হক চৌধুরীকে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি প্রতিবারই ফোন কেটে দেন।
আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মোহাম্মদ রুহুল আমিন বলেন, ‘বিষয়টি আমি শুনেছি। কিন্তু ১ তারিখ দুর্গাপূজা কেন? ১ তারিখ তো শনিবার। দুর্গাপূজার ছুটি ২ তারিখ থেকে ৫ তারিখ পর্যন্ত। এক তারিখ পূজার যে অংশটি আছে সেটি সন্ধ্যায়। আর পরীক্ষা কমিটির চেয়ারম্যানকে আমি বলেছি, তিনি ৩ তারিখে যে পরীক্ষা সেটির তারিখ পরিবর্তন করে দেবে।’
অধ্যাপক রুহুল আমিন বলেন, ‘পরীক্ষা কমিটি মনে করেছে সেই সেমিস্টারে কোনো হিন্দু শিক্ষার্থী নেই। আর পূজা ওইদিন সন্ধ্যায় হওয়ায় পরীক্ষা কমিটি এই তারিখ দিয়েছে। তবে আমি কথা বলে ৩ তারিখের পরীক্ষা চেঞ্জ করে দেব।’