বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

শিক্ষককে জুতার মালা: কলেজে বিভেদ পেয়েছে মাউশি

  •    
  • ৫ জুলাই, ২০২২ ১৯:৫৯

মাউশির গঠিত তিন সদস্যের কমিটি মঙ্গলবার প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। এই প্রতিবেদনে বলা হয়, শিক্ষকের গলায় জুতার মালা পরানোর ঘটনার পেছনে শিক্ষকদের অভ্যন্তরীণ কোন্দল দায়ী থাকতে পারে। ঘটনার সময় আক্তার হোসেন টিংকুর ভূমিকা ‘রহস্যজনক’ ও ‘প্রশ্নবিদ্ধ’ বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়।

নড়াইলে পুলিশের সামনে মির্জাপুর ইউনাইটেড ডিগ্রি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাসের গলায় জুতার মালা পরানো ও সহিংসতার ঘটনায় স্থানীয় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি ও কলেজের রাষ্ট্রবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষক আক্তার হোসেন টিংকুর ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের (মাউশি) তদন্ত কমিটি।

টিংকু নড়াইল সদরের বিছালী ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি ছিলেন। স্বপন কুমারকে জুতার মালা পরানোর ঘটনার প্রায় দুই সপ্তাহ পর তাকে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব থেকে সাময়িক অব্যাহতি দেয়া হয়। তাকে কারণ দর্শানোর নোটিশও দিয়েছে জেলা আওয়ামী লীগ।

ফেসবুকে ভারতীয় জনতা পার্টির (বিজেপি) বহিষ্কৃত মুখপাত্র নূপুর শর্মার সমর্থনে কলেজের এক হিন্দু শিক্ষার্থীর পোস্ট দেয়াকে কেন্দ্র করে গত ১৮ জুন দিনভর নড়াইল সদর উপজেলার মির্জাপুর ইউনাইটেড ডিগ্রি কলেজ ক্যাম্পাসে বিক্ষোভ, সহিংসতা চলে।

গুজব ছড়িয়ে দেয়া হয় ওই শিক্ষার্থীর পক্ষ নিয়েছেন কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাস।

এরপর পুলিশ পাহারায় বিকেল ৪টার দিকে স্বপন কুমার বিশ্বাসকে ক্যাম্পাসের বাইরে নিয়ে যাওয়ার সময় তাকে দাঁড় করিয়ে গলায় জুতার মালা পরিয়ে দেয় একদল ব্যক্তি।

শিক্ষক স্বপন কুমার হাত উঁচিয়ে ক্ষমা চাইতে থাকেন। পরে তাকে তুলে নেয়া হয় পুলিশের গাড়িতে। মোবাইল ফোনে ধারণ করা এ ঘটনার ভিডিও ফুটেজ ছড়িয়ে ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ে। পুলিশের সামনে শিক্ষকের এমন অপদস্থ হওয়ার ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ তৈরি হয় সারা দেশে।

এ ঘটনা তদন্তে মাউশির গঠিত তিন সদস্যের কমিটি মঙ্গলবার প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। এই প্রতিবেদনে বলা হয়, শিক্ষকের গলায় জুতার মালা পরানোর ঘটনার পেছনে শিক্ষকদের অভ্যন্তরীণ কোন্দল দায়ী থাকতে পারে। ঘটনার সময় আক্তার হোসেন টিংকুর ভূমিকা ‘রহস্যজনক’ ও ‘প্রশ্নবিদ্ধ’ বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।

মাউশির বেসরকারি কলেজ শাখার উপপরিচালক মো. এনামুল হক হাওলাদারের কাছে প্রতিবেদনটি জমা দেয়া হয়। তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘আজ (মঙ্গলবার) দুপুরে তদন্ত প্রতিবেদনটি আমরা হাতে পেয়েছি। প্রশাসনিক বিধি মোতাবেক প্রতিবেদনটি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে পাঠানো হবে। এর বেশি কিছু আমি বলতে পারব না।’

মাউশির পরিচালক (কলেজ ও প্রশাসন উইং) অধ্যাপক মো. শাহেদুল খবির চৌধুরী নিউজবাংলাকে বলেন, ‘সংশ্লিষ্ট শাখায় আজ তদন্ত প্রতিবেদনটি জমা পড়েছে। তবে আমার কাছে এখনও প্রতিবেদনটি আসেনি।’

একজন কলেজ শিক্ষককে জুতার মালা পরিয়ে হেনস্তা কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না মন্তব্য করে তিনি বলেন, ‘এ ধরনের ন্যক্কারজনক ঘটনায় জড়িতদের অবশ্যই শাস্তি পেতে হবে।’

শাহেদুল খবির বলেন, ‘মাউশির মহাপরিচালক মহোদয় দেশের বাইরে আছেন। তিনি ফিরলেই তদন্ত প্রতিবেদনের আলোকে বিধি মোতাবেক দোষীদের বিরুদ্ধে কঠোর শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হবে।’

মাউশির এক কর্মকর্তা নিউজবাংলাকে জানান, কলেজের অধ্যক্ষ পদটি দখলে কয়েকজন শিক্ষকের প্রতিযোগিতায় নামার বিষয়টি উঠে এসেছে তদন্ত প্রতিবেদনে। এ কারণে দ্রুত নিয়মিত অধ্যক্ষ নিয়োগ দিয়ে সমস্যা সমাধানের সুপারিশ করা হয়েছে।

ঘটনার দিন আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর আরও সতর্কতা প্রয়োজন ছিল বলে মনে করছে মাউশির তদন্ত কমিটি।

মাউশির খুলনা অঞ্চলের পরিচালক অধ্যাপক শেখ হারুনুর রশিদের নেতৃত্বে ২৯ জুন গঠিত এ কমিটিতে ছিলেন উপপরিচালক (কলেজ) এস কে মোস্তাফিজুর রহমান ও সহকারী পরিচালক (কলেজ) মো. নিজামুল ইসলাম।

শিক্ষক হেনস্তার ঘটনায় জেলা প্রশাসনের তদন্ত কমিটি গত ৩ জুলাই রাতে প্রতিবেদন জমা দিয়েছে। নড়াইলের অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট (এডিএম) জুবায়ের হোসেন চৌধুরীর নেতৃত্বে এ কমিটিতে ছিলেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা এস এম ছায়েদুর রহমান ও নড়াইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ শওকত কবীর।

প্রতিবেদন জমা দেয়ার পরের দিনই (রোববার) জেলা প্রশাসনের তদন্ত কমিটির সদস্য নড়াইল সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোহাম্মদ শওকত কবীরকে নড়াইল থেকে সরিয়ে খুলনা আরআরএফ (রেঞ্জ রিজার্ভ ফোর্স)-এ সংযুক্ত করা হয়। আর মির্জাপুর পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ উপপরিদর্শক শেখ মোরছালিনকেও প্রত্যাহার করে নড়াইল জেলা পুলিশ লাইনে সংযুক্ত করা হয়েছে।

এ বিভাগের আরো খবর