পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে যৌন হয়রানি প্রতিরোধে নীতিমালা ঘোষণা করা হয়েছে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি লাউঞ্জে বুধবার বেলা ১১টায় আনুষ্ঠানিকভাবে এই ঘোষণা করা হয়।
এই নীতিমালা তৈরিতে ইউএন উইমেন এবং গ্লোবাল অ্যাফেয়ার্স কানাডার সহযোগিতায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সঙ্গে কাজ করেছে আমরাই পারি নামে সংগঠন এবং বরিশালের স্থানীয় সংগঠন শুভ।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য স্বদেশ চন্দ্র সামান্ত জানান, দেশের ৫২টি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ৪২টি এবং ১০৮টি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে ৭০টিতে যৌন হয়রানি প্রতিরোধ কমিটি আছে। এই বিশ্ববিদ্যালয়েও যৌন হয়রানি প্রতিরোধ সংক্রান্ত আইনের প্রয়োজন ছিল।
তিনি মনে করেন, আইন প্রণয়নের পাশাপাশি তা সুষ্ঠু বাস্তবায়ন এবং মানুষের দৃষ্টিভঙ্গি পরিবর্তনের প্রতিও জোর দেয়া প্রয়োজন।
ইউজিসি মঞ্জুরি কমিশনের ডেপুটি ডিরেক্টর মৌলী আজাদ বলেন, ‘অনেক সময় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান থেকে যৌন হয়রানি প্রতিরোধ কমিটির নাম যখন ইউজিসিতে পাঠানো হয়, তখন দেখা যায় এমন অনেকে কমিটিতে থাকেন যাদের কমিটিতে আসলে প্রয়োজন নেই।
‘৫ সদস্যের কমিটিতে নারী সদস্যের আধিক্যের পাশাপাশি বাইরে থেকে যে সদস্য দুইজন রাখার কথা বলা হয়েছে, সেখানে জেন্ডার বিষয়ক দক্ষ ব্যক্তিকে রাখার অনুরোধ জানাচ্ছি।’
পাশাপাশি যৌন হয়রানি প্রতিরোধ কমিটিকে যেন হাইকোর্টের নির্দেশনামাফিক কার্যকরী করা হয় সে বিষয়টি নিয়েও কথা বলেন তিনি।
ইউএন উইমেন বাংলাদেশের প্রোজেক্ট কোঅর্ডিনেশন অ্যানালিস্ট তোসিবা কাশেম জানান, প্রকল্প শুরুর আগে এক গবেষণায় দেখা গেছে পটুয়াখালী বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় ৮৫ শতাংশ শিক্ষার্থী জানতেন না যৌন হয়রানির শিকার হলে তারা কোথায় অভিযোগ করবেন।
এই নীতিমালা এবং কমিটি গঠন শিক্ষার্থীদের জন্য কার্যকরী ভুমিকা পালন করবে বলে তিনি আশা করেছেন।
আমরাই পারি পারিবারিক নির্যাতন প্রতিরোধ জোটের জিনাত আরা হক বলেন, ‘প্রতিটি বিশ্ববিদ্যালয়ে যৌন হয়রানি প্রতিরোধ নীতিমালা থাকা সেই বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের জন্যও জরুরি। কারণ বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্যাতক এবং নির্যাতনের শিকার উভয়ই যখন শিক্ষার্থী হয়, তখন নীতিমালা না থাকলে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন নিজেই নির্যাতনগুলোর বিচার করতে সমস্যায় পড়ে যায়।
‘নীতিমালার আলোকে সেই অভিযোগগুলো তদন্ত এবং নিষ্পত্তি করা সহজ হয়। যারা নির্যাতন করে তাদের অনেকের বোধই তৈরি হয় না যে তারা অপরাধ করছে। তাই এই নীতিমালা শিক্ষার্থীদের মাঝে সেই বোধ তৈরিতে সহায়ক হবে।’