এক সপ্তাহের মধ্যে বেসরকারি নন-এমপিও অনেক শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানকে এমপিওভুক্ত করার ঘোষণা দেয়া হবে।
রোববার সচিবালয়ে শিক্ষা মন্ত্রণালয় আয়োজিত এক ব্রিফিংয়ে শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি সাংবাদিকদের এ কথা বলেন।
তিনি বলেন, ‘নতুন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিভুক্তির জন্য আমাদের সব কাজ শেষ, এখন সেটি ঘোষণা করার অপেক্ষায়। আশা করছি এক সপ্তাহের মধ্যে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের নতুন এমপিভুক্তির ঘোষণা দিব।’
নতুন এমপিওভুক্ত শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা জানতে চাইলে মন্ত্রী বলেন, ‘আপাতত এ সংখ্যা প্রকাশ করতে চাচ্ছি না, তবে গতবারের মতো একই সংখ্যক প্রতিষ্ঠান এবারো এমপিওভুক্তি করা হবে।’
স্কুল-কলেজসহ বিভিন্ন বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির অর্থাৎ মান্থলি পে-অর্ডারের আওতায় প্রতি মাসে নির্দিষ্ট অঙ্কের সরকারি অনুদান পেয়ে থাকে।
বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির আবেদন যাচাই-বাছাইয়ে গত বছরের ৭ নভেম্বর ৯ সদস্যের কমিটি গঠন করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। কমিটিকে সহায়তা করতে চার সদস্যের একটি উপকমিটিও গঠন করা হয়।
গত ৩০ সেপ্টেম্বর বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান (স্কুল ও কলেজ) এমপিওভুক্ত করতে গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। বিজ্ঞপ্তিতে ১০ থেকে ৩১ অক্টোবর পর্যন্ত এমপিওভুক্তির জন্য আবেদন করতে বলা হয়।
২০১৯ সালে ২ হাজার ৬২২টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করার পর নতুন করে আর কোনো প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করা হয়নি।
নতুন অর্থবছরের বাজেট বরাদ্দের যে প্রস্তাব শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে পাঠানো হয়েছে, তাতে নতুন প্রতিষ্ঠানের এমপিওভুক্তির জন্য ২৫০ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখার কথা বলা হয়। এর মধ্যে মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা বিভাগের জন্য ২০০ কোটি টাকা এবং কারিগরি ও মাদ্রাসা শিক্ষা বিভাগের জন্য ৫০ কোটি টাকা।
২০১৯ সালের ২৩ অক্টোবর ২ হাজার ৭৩০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির ঘোষণা দেন প্রধানমন্ত্রী। পরে চূড়ান্ত বাছাইয়ে ২ হাজার ৬১৫টি প্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্তির ছাড়পত্র পায়। এরপর আবার ২০১৯ সালের ১২ নভেম্বর ছয়টি এবং ১৪ নভেম্বর একটি প্রতিষ্ঠানকে এমপিওভুক্ত করা হয়।
দেশে এ পর্যন্ত এমপিওভুক্ত বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা প্রায় ৩৩ হাজার। আর এখনও এমপিওভুক্ত হয়নি এমন প্রতিষ্ঠানের সংখ্যা প্রায় ৭ হাজার।
বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান এমপিওভুক্ত করার জন্য গত বছরের ২৯ মে সংশোধিত এমপিও নীতিমালা প্রকাশ করে শিক্ষা মন্ত্রণালয়। এতে এমপিওভুক্তির জন্য তিনটি শর্ত দেয়া হয়েছে।
শিক্ষার্থী ও পরীক্ষার্থীর সংখ্যা এবং পাবলিক পরীক্ষায় পাসের হার- এই তিন বিষয়ে মোট ১০০ নম্বরের মধ্যে শিক্ষার্থীর সংখ্যায় ৩০, পরীক্ষার্থীর সংখ্যায় ৩০ এবং পাসের হারে ৪০ নম্বর রাখা হয়েছে। আগের নীতিমালায় প্রতিষ্ঠানের স্বীকৃতির মেয়াদের ওপর ২৫ নম্বর ছিল, যা সংশোধিত নীতিমালায় বাদ দেয়া হয়েছে।
কোনো ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে ন্যূনতম কতজন শিক্ষার্থী থাকতে হবে, তা-ও নীতিমালায় বেঁধে দেয়া হয়েছে।
নীতিমালা অনুযায়ী নিম্ন মাধ্যমিকে শহরে ১২০ ও মফস্বলে ৯০, মাধ্যমিকে শহরে ২০০ ও মফস্বলে ১৫০, উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয়ে শহরে ৪২০ ও মফস্বলে ৩২০, উচ্চ মাধ্যমিক কলেজে শহরে ২৫০ ও মফস্বলে ২২০ এবং ডিগ্রি কলেজে স্নাতকে শহরে ৪৯০ ও মফস্বলে ৪২৫ শিক্ষার্থী থাকতে হবে। পাসের হার স্তরভেদে ৪৫ থেকে সর্বোচ্চ ৭০ শতাংশ করা হয়েছে।