কলিমুল্লাহর পর রংপুরের বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের পঞ্চম উপাচার্য হিসেবে নিয়োগ পেয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের ট্রেজারার অধ্যাপক ড. হাসিবুর রশীদ।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে বুধবার এ আদেশ জারি করা হয়। ১৪ জুন থেকে নিয়োগের আদেশ কার্যকর হবে।
হাসিবুর রশীদ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ম্যানেজমেন্ট অ্যান্ড ইনফরমেশন সায়েন্স বিভাগের অধ্যাপক ছিলেন। ২০২০ সালে তিনি বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে নিয়োগ পান।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের একাংশের সংগঠন অধিকার সুরক্ষা পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক ড. মতিউর রহমান তাকে শুভেচ্ছা জানিয়ে বলেন, ‘আমরা তাকে অভিনন্দন জানাই। সেই সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ে যেসব অনিয়ম-দুর্নীতি ও অবিচার করা হয়েছে সেগুলোর বিষয়ে তিনি অবগত আছেন। এই বিষয়গুলোর তিনি সমাধান করবেন।’
উপাচার্য নাজমুল আহসান কলিমুল্লাহর বিরুদ্ধে অভিযোগ বিস্তর। তার বিরুদ্ধে ব্যাপক অনিয়ম-দুর্নীতির প্রমাণ পেয়েছে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের তদন্ত কমিটি।
গত ২৫ ফেব্রুয়ারি তদন্ত প্রতিবেদন শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে জমা দেয় কমিটি।
প্রতিবেদনে বিশ্ববিদ্যালয়ের দুটি ১০ তলা ভবন ও একটি স্মৃতিস্তম্ভের নির্মাণকাজে অনিয়মের প্রাথমিক সত্যতা মিলেছে। এর জন্য উপাচার্যসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ওই কমিটির প্রতিবেদনে সুপারিশ করা হয়েছে।
ওই কমিটির প্রতিবেদনের সুপারিশে কলিমুল্লাহর বিরুদ্ধে অভিযোগ খতিয়ে দেখতে করা হয় আরও একটি কমিটি।
তার বিরুদ্ধে অনিয়ম-দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার ৪৫টি অভিযোগ ছিল। পরে সেগুলোর মধ্যে ২৯টি খতিয়ে দেখার দায়িত্ব দেয়া হয় এই কমিটিকে।
জনবল নিয়োগ, রাষ্ট্রপতির নির্দেশনা অমান্য করে ক্যাম্পাসে ধারাবাহিক অনুপস্থিতি, ভর্তি পরীক্ষায় জালিয়াতির ঘটনা ধামাচাপা দেয়া, শিক্ষক ও জনবল নিয়োগে দুর্নীতি ও অনিয়মসহ বিভিন্ন অভিযোগ তদন্তে গত ১৪ মার্চ ক্যাম্পাসে যায় বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) তদন্ত কমিটি।
৪৫টি অভিযোগ তুলে ধরে ২০১৯ সালের ২৪ সেপ্টেম্বর শিক্ষামন্ত্রী বরাবর একটি চিঠি পাঠান বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষকদের সংগঠন বঙ্গবন্ধু পরিষদের সভাপতি কমলেশ চন্দ্র রায় ও সাধারণ সম্পাদক মশিউর রহমান। তার পরিপ্রেক্ষিতেই তদন্ত কমিটি করা হয়।
এই তদন্ত করায় শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনির বিরুদ্ধে কলিমুল্লাহ বক্তব্য দেয়ায় গত ৪ মার্চ মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে বিজ্ঞপ্তি দিয়ে তার বক্তব্য প্রত্যাখ্যান করা হয়।
২০১৭ সালের ১৪ জুন নিয়োগ পাওয়া কলিমুল্লাহ বিশ্ববিদ্যালয়েও যান না। এর প্রতিক্রিয়ায় ছাত্র-শিক্ষকরা নানা সময় নানা কর্মসূচি পালন করে আসছেন। তবে কলিমুল্লাহর দাবি, উপাচার্য পদটি আবাসিক নয়। ফলে তাকে রংপুরে থাকতে হবে, এমন কোনো কথা নেই।