করোনার কারণে স্থগিত হওয়া পরীক্ষাসমূহ আবারও সশরীরে নেয়া শুরু করেছে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় (চবি) কর্তৃপক্ষ।
বুধবার মার্কেটিং বিভাগের ১৫-১৬ সেশনের অনার্স ফাইনাল সেমিস্টারের স্থগিত পরীক্ষা নেয়ার মধ্য দিয়ে সশরীরে পরীক্ষা গ্রহণ শুরু হয়।
পরীক্ষা শুরু হলেও বন্ধ থাকছে হল। ফলে পরীক্ষার্থীরা স্থানীয় মেস কিংবা কটেজে থেকেই পরীক্ষা দিচ্ছেন। তবে প্রথম দিন পরীক্ষায় উপস্থিতির হার ছিল শতভাগ।
ইতিমধ্যে আরও বেশ কিছু বিভাগ পরীক্ষার তারিখ ও রুটিন প্রকাশ করেছে। শুরুতেই বিভাগগুলো তাদের স্থগিত হওয়া পরীক্ষাগুলো গ্রহণ করবে।
নৃবিজ্ঞান বিভাগ ১০ জুন থেকে সম্মান শেষ বর্ষের স্থগিত পরীক্ষা নেয়ার রুটিন প্রকাশ করেছে। ইংরেজি বিভাগের ২০১৪-১৫ সেশনের চতুর্থ বর্ষের পরীক্ষা হবে ১৩ জুন থেকে। রাজনীতি বিজ্ঞান বিভাগ স্বাস্থ্যবিধি মেনে ১৬ জুন থেকে এম.এস.এস পরীক্ষার নোটিশ দিয়েছে। অর্থনীতি বিভাগের মাস্টার্স ফাইনাল পরীক্ষা ২৮ জুন থেকে শুরু হবে। মার্কেটিং ২৬ তম ব্যাচের পরীক্ষা ২১ জুন থেকে শুরু হবে। প্রাণিবিজ্ঞান বিভাগ ২০ তারিখ থেকে শুরু করে বিভিন্ন বর্ষের মৌখিক,ব্যবহারিক ও তাত্ত্বিক পরীক্ষা নেবে।
এ ছাড়া বিভিন্ন বিভাগ ১৫ জুনের পর সিদ্ধান্ত দেবে বলে জানিয়েছে।
পরীক্ষা নেয়ার বিষয়টি ইতিবাচকভাবে দেখছেন চবি শিক্ষার্থীরা। এর আগে বেশ কয়েকবার সশরীরে পরীক্ষা ও ক্যাম্পাস খুলে দেয়ার দাবিতে আন্দোলন করেন শিক্ষার্থীরা।
নৃবিজ্ঞান বিভাগের ১৫-১৬ সেশনের সম্মান শেষ বর্ষের শিক্ষার্থী আকাশ মজুমদার বলেন, ‘আমরা এতদিন খুবই ডিপ্রেশনে ছিলাম। পরীক্ষার সিদ্ধান্তে মনে হচ্ছে এখন নিশ্বাস নিতে পারব। আমরা খুবই বাজে অবস্থায় পড়ে গেছিলাম।’
অর্থনীতি বিভাগের ১৪-১৫ সেশনের মাস্টার্সের শিক্ষার্থী মিছবাহ উদ্দীন আহমেদ বলেন, ‘এতদিন ধরে আটকে থাকা পরীক্ষাগুলো নিয়ে নেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়াতে আমার অর্থনীতি ডিপার্টমেন্টসহ সকল ডিপার্টমেন্ট অবশ্যই ধন্যবাদ প্রাপ্য। আশা করছি যথাসময়ে পরীক্ষাগুলো দেয়ার মাধ্যমে আমরা শিক্ষার্থীরা আবারও আমাদের প্রাত্যহিক ব্যস্ত জীবনে ফিরে যেতে পারব।’
এ বিষয়ে চবি ব্যবসায় প্রশাসন অনুষদের ডিন অধ্যাপক এস এম সালামত উল্ল্যা ভুঁইয়া বলেন, ‘মার্কেটিং বিভাগের কয়েকটি পরীক্ষা বাকি ছিল। আমরা এখন স্থগিত পরীক্ষাগুলো নিয়ে নিচ্ছি। প্রথম দিনের পরীক্ষায় উপস্থিতির হার শতভাগ ছিল। ১৫ জুন মিটিংয়ের পর বাকি পরীক্ষাগুলোর ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হবে।’
বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার প্রফেসর ড. এস এম মনিরুল হাসান বলেন, ‘স্থগিত পরীক্ষাগুলো নেয়ার জন্য ইউজিসির অনুমতি আছে। ছাত্রছাত্রীদের কল্যাণের কথা ভেবে আমরা সকল ফ্যাকাল্টির ডিন ও চেয়ারম্যানকে অনুরোধ জানিয়েছি। তাই তারা পরীক্ষা নেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন।’
এর আগে গত ২২ ফেব্রুয়ারি শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে ১৭ মে হল এবং ২৪ মে বিশ্ববিদ্যালয় খোলার ঘোষণা দেয়। একইসঙ্গে বলা হয় বিশ্ববিদ্যালয় খোলার পরই সব পরীক্ষা নেওয়া হবে।
এই ঘোষণার সঙ্গে একমত পোষণ করে ২৫ ফেব্রুয়ারি চবি কর্তৃপক্ষ সব ধরনের পরীক্ষা স্থগিত করে।