বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

রাবির দুই ছাত্রীকে পোশাক নিয়ে হেনস্তা

  •    
  • ৬ মার্চ, ২০২১ ২৩:৩০

এক ছাত্রী ফেসবুকে লিখেছেন, ‘ভার্সিটিতে বলে দেয়া হোক কোন ড্রেসআপে গেলে এভাবে শিক্ষার্থীদের হ্যারাজ হতে হবে না কাজলা গেটের পুলিশ দ্বারা। তাদের কী নির্ধারিত করা হয়েছে মেয়েদের ড্রেস দেখার জন্যে?’

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) দুই ছাত্রীর পোশাক নিয়ে কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য ও তাদের মানসিকভাবে হেনস্তা করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। তারা বলছেন, হেনস্তাকারীদের তিনজনের মধ্যে একজন বিশ্ববিদ্যালয়েরই শিক্ষক। অন্য দুজন হলেন আরেক শিক্ষকের স্ত্রী ও বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজলা গেটের প্রহরী।

গত বৃহস্পতিবার বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজলা গেটের পাশে মসজিদের সামনে এই ঘটনা ঘটে।

ওই দুই ছাত্রী বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় অনুষদ বিভাগের প্রথম বর্ষে পড়েন। তারা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় ডিবেটিং ফোরামের সদস্যও। এ ঘটনায় সংগঠনটি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কাছে দ্রুত বিচারের দাবি জানিয়েছে। হয়রানি ও হেনস্তার বিষয়টি এক ছাত্রী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তুলে ধরার পর এ নিয়ে আলোচনা চলছে।

দুই ছাত্রীর একজনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বৃহস্পতিবার বিকেল সাড়ে ৪টায় এক বান্ধবীর সঙ্গে ক্যাম্পাসে ঢুকি কাজলা গেট দিয়ে। তার ব্যাক পেইনের কারণে সে মসজিদের সামনে দাঁড়ালে হঠাৎ একজন শিক্ষক চিৎকার ও ঝাড়ি দেন। বলেন, এই মেয়ে এখান থেকে যাও।

‘লজ্জাশরম নেই? মসজিদের সামনে দাঁড়িয়েছ কেন? আমরা সেখান থেকে চলে যাচ্ছিলাম। তখন সিভিল ড্রেসে যে পুলিশ ছিলেন, তিনি গালাগালি শুরু করে দেন। আপনাদের ড্রেসআপের ঠিক নেই, আপনাদের ওড়না ঠিক নেই, বেয়াদব মেয়ে মানুষ।’

তিনি বলেন, ‘‌ওই সময় এক নারী এসে বলেন, বেয়াদব মেয়ে ওড়না দিয়ে শরীর ঢাকনি, তর্ক করছ? আর সেই শিক্ষক নামাজ পড়তে না গিয়ে হুকুম দিলেন, আমাদের আইডি কার্ড রেখে দেয়ার।

‘…..আমরা হাঁটছিলাম। তখন উনি (শিক্ষক) আমাদের ধরে আনার জন্য বলেন এবং আমাদের আইডি কার্ড রেখে দেয়ার নির্দেশ দেন। সেই পুলিশও সুযোগ পেল এবং আরও কিছু কথা শুনিয়ে বলল, আইডি কার্ড দেন আপনাদের শিক্ষক বলছেন। আইডি কার্ড দেন না হলে বের হোন এক্ষণি ক্যাম্পাস থেকে। মানসম্মানের ভয়ে নিজেরা ক্যাম্পাস থেকে বের হয়ে যাই।

রাজশাহী ইউনিভার্সিটি ডিবেটিং ফোরামের বিজ্ঞপ্তি

‘ঘটনার পর শুক্রবার সন্ধ্যায় বিভাগের কয়েকজন শিক্ষার্থীসহ আমরা দুজন কাজলা গেটে গেলে পুলিশ সদস্য বিষয়টি স্বীকার করেন। আমরা জানতে পেরেছি ওই শিক্ষকের নাম। ওই নারী আরেক শিক্ষকের স্ত্রী। আমরা রোববার বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর দপ্তর ও যৌন নিপীড়নবিরোধী সেলে লিখিত অভিযোগ করব।

দুই ছাত্রীর একজন বৃহস্পতিবার রাতে ফেসবুকে ‘রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় পরিবার’ নামের একটি গ্রুপে ঘটনার বর্ণনা দিয়ে পোস্ট দেন। এরপর পোস্টটি নিয়ে শুরু হয় নানা আলোচনা ও সমালোচনা। ছাত্র-ছাত্রীরা এ ঘটনার সুষ্ঠু তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়ার দাবি জানিয়েছেন।

এক ছাত্রী ফেসবুকে লিখেছেন, ‘ভার্সিটিতে বলে দেয়া হোক কোন ড্রেসআপে গেলে এভাবে শিক্ষার্থীদের হ্যারাজ হতে হবে না কাজলা গেটের পুলিশ দ্বারা। তাদের কী নির্ধারিত করা হয়েছে মেয়েদের ড্রেস দেখার জন্যে?’

রাজশাহী ইউনিভার্সিটি ডিবেটিং ফোরামের পক্ষ থেকে এক বিজ্ঞপ্তিতে এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানানো হয়েছে। ফোরামের জ্যেষ্ঠ নির্বাহী সদস্য ইব্রাহিম খলিলের সই করা ওই বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ‌‘একবিংশ শতকে বিশ্বের অন্যান্য দেশের নারীরা যখন আকাশ জয় করার চিন্তায় মগ্ন, তখন আমার দেশের বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া শিক্ষার্থী কী পোশাক পরবে তা নিয়ে শংকিত।’

কাজলা গেটের সিসিটিভি ফুটেজ দেখে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়ার দাবিও জানানো হয় ওই বিজ্ঞপ্তিতে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক লুৎফর রহমানের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের কাজলা গেটের ঘটনাটি আমি জেনেছি। শিক্ষার্থীরা লিখিত অভিযোগ দিলে বিষয়টি আমরা তদন্ত করে দেখব।’

এ বিভাগের আরো খবর