তিন জনের নেতৃত্বে বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের মেসে হামলা হয়েছে বলে অভিযোগ তুলেছেন আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা।
তারা হলেন বরিশাল-পটুয়াখালী মিনিবাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক কাওছার হোসেন শিপন, বরিশাল পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সভাপতি রফিকুল ইসলাম মানিক এবং মামুন নামের এক স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, স্থানীয় ছাত্রলীগের একাধিক নেতাও হামলায় জড়িত। হামলার ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন দায়সারা মামলা করে আন্দোলন দমাতে চাইছে বলেও অভিযোগ তুলেছেন তারা।
বৃহস্পতিবার রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের গ্রাউন্ড কম্পাউন্ডে এক সংবাদ সম্মেলনে শিক্ষার্থীদের পক্ষে এ সব অভিযোগ করেন মৃত্তিকা ও পরিবেশ বিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী সুজয় বিশ্বাস শুভ।
তিনি বলেন, ‘রূপাতলীর মেসে শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার প্রতিবাদে আমরা আন্দোলন করায় প্রশাসন আশ্বাস দিয়েছিল তারা মামলা করবে। কিন্ত তারা একটি দায়সারা মামলা করেছেন। মামলায় কারও নাম উল্লেখ করেননি।’
সংবাদ সম্মেলনে আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানান, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের আশ্বাসে ৪৮ ঘণ্টার জন্য অবরোধ স্থগিত করা হয়েছে। এই সময়ের মধ্যে মামলায় নাম সংযুক্ত করা না হলে নতুন কর্মসূচি দেয়া হবে।
শিক্ষার্থীদের পক্ষে সুজয় বিশ্বাস শুভ বলেন, ‘আহত শিক্ষার্থীরা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে চিনতে পারা হামলাকারীদের নাম জানিয়েছে। লিখিত আকারে নাম দিয়েছে প্রশাসনের হাতে। তারপরও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সেটি মামলায় যুক্ত করেনি।’
তিনি বলেন, ‘মামলায় তারা উল্লেখ করেছেন, মারধর করে জখম করা হয়েছে। মূলত মারধর না, শিক্ষার্থীদের হত্যাচেষ্টা করা হয়েছে। এছাড়া ৪৬ জন শিক্ষার্থীর মানিব্যাগ, মোবাইল ও ল্যাপটপ ছিনতাই করেছে সন্ত্রাসীরা।’
সুজয় বিশ্বাস বলেন, ‘রূপাতলী বাস-মিনিবাস মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক কাওছার হোসেন শিপন, তেল মানিক ও তাদের সন্ত্রাসী বাহিনী অস্ত্র নিয়ে আমাদের ওপর হামলা চালায়। সুতরাং যে মামলাটি করা হয়েছে তা আসলে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে প্রতারণা করা হয়েছে।’
এর আগে দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার ড. মুহাম্মদ মুহসিন শিক্ষার্থীদের ওপর হামলার ঘটনায় অজ্ঞাতপরিচয় আসামিদের বিরুদ্ধে ‘মারধরের’ অভিযোগ এনে মামলা করেন।
কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নুরুল ইসলাম বলেন, ‘অজ্ঞাতপরিচয়দের আসামি করে মামলা করেছে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। আমরা তদন্ত করে দেখব, সেই রাতে হামলাকারী কারা ছিল। তাদের শনাক্ত করে আইনের আওতায় আনা হবে।’
মঙ্গলবার দুপুরে নগরীর রূপাতলী বাস টার্মিনালে বিআরটিসি কাউন্টারের এক কর্মী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক ছাত্রকে ছুরিকাঘাত ও এক ছাত্রীকে লাঞ্ছিত করেন বলে অভিযোগ ওঠে।
এর প্রতিবাদে ঢাকা-কুয়াকাটা মহাসড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা।
অভিযোগ রয়েছে, একই দিন রাতে পরিবহন শ্রমিকরা ও স্থানীয় সন্ত্রাসীরা শিক্ষার্থীদের মেসে গিয়ে ধারাল অস্ত্র নিয়ে হামলা চালায়। এতে আহত ১১ শিক্ষার্থী বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি রয়েছেন।
এই হামলার বিচার ও জড়িতদের গ্রেপ্তারের দাবিতে আন্দোলন করছেন শিক্ষার্থীরা।