করোনা ভাইরাসের কারণে দেশে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের ছুটি আরও পাঁচ সপ্তাহ বাড়িয়েছে সরকার। নতুন সিদ্ধান্ত অনুযায়ী, আগামী ১৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত বন্ধ থাকবে স্কুল কলেজ।
বৃহস্পতিবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা এম এ খায়ের নিউজবাংলাকে এই তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এ নিয়ে পঞ্চম দফা বাড়ল ছুটি। চতুর্থ দফায় ১৪ নভেম্বর পর্যন্ত বন্ধ ঘোষণা করা হয় স্কুল কলেজ।
- আরও আসছে: করোনায় শিক্ষার বাইরে এক তৃতীয়াংশ পরিবার
২৯ অক্টোবর দেয়া সেই ঘোষণায় শিক্ষামন্ত্রী জানিয়েছিলেন, পরিস্থিতি বিবেচনায় ১৪ নভেম্বরের পর সীমিত পরিসরে স্কুল-কলেজ খুলে দেয়া হতে পারে।
তবে শীতে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ আসতে পারে বলে সতর্ক করে আসা সরকার আর ঝুঁকি নেয়নি।
গত ৮ মার্চ দেশে করোনা ভাইরাসের সংক্রমণ ধরার পড়ার পর ১৭ মার্চ থেকে বন্ধ করে দেয়া হয় সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।
করোনার কারণে চলতি বছর বাতিল হয়েছে এইচএসসি পরীক্ষা, অষ্টম শ্রেণি সমাপনী জেএসসি পরীক্ষা। স্কুলের বার্ষিক পরীক্ষাও নেয়া হচ্ছে না।
তবে কওমি মাদ্রাসা খোলা আছে। বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে শর্তসাপেক্ষ ক্লাস ও পরীক্ষার অনুমতি দেয়া আছে। যদিও এখনও কোনো বিশ্ববিদ্যালয় ক্লাস-পরীক্ষা নেয়ার সময় জানায়নি।
শিক্ষা প্রতিষ্ঠান বন্ধ থাকায় ক্লাস হচ্ছে অনলাইনে। যদিও বিপুল সংখ্যক শিক্ষার্থী এই সুযোগের বাইরে রয়ে গেছে।
- আরও পড়ুন: ধনীরা অনলাইনে, শিক্ষার বাইরে গরিব
শিক্ষা বিষয়ে কাজ করা সংগঠন এডুকেশন রিপোর্টার্স ফোরাম অব বাংলাদেশ-বিইআরএফ এর এক জরিপ বলছে, শহর এলাকায় ৩৭ শতাংশ শিশু অনলাইনে কোনো ক্লাসই করেনি। গ্রাম এলাকার পরিস্থিতি আরও খারাপ বলে ধারণা করা হচ্ছে।
বার্ষিক পরীক্ষা বাতিল করে সরকার মূল্যায়নের জন্য অ্যাসাইনমেন্ট পদ্ধতি চালু করেছে। তবে এটাও নতুন বৈষম্য তৈরি করেছে বলে মত দিয়েছেন শিক্ষকরাও।
আগের দিন রাজধানীতে এক আলোচনায় শিক্ষামন্ত্রী দীপু মনি বলেন, ‘আগামী ১৪ নভেম্বরে পর্যন্ত ছুটি ঘোষণা করা আছে। এই তারিখের পর সীমিত পরিসরে স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় খুলবে কি না এ বিষয়ে নিয়ে কাজ করছি। আগামীকাল এ বিষয়ে জানানো হবে।’
তবে শিক্ষা মন্ত্রণালয় আগের মতো সংবাদ সম্মেলন আর করেনি। মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা এম এ খায়ের নিউজবাংলাকে বলেন, ‘গত দুই সপ্তাহ শিক্ষামন্ত্রণালয় করোনার সার্বিক বিষয় পর্যালোচনা করে শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তার কথা চিন্তা করে এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে।’
এ বছর শিক্ষা প্রতিষ্ঠান খোলা সম্ভব হবে কি না- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আগে আমার পরিস্থিতি দেখব, এরপর এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানানো হবে। বছর শেষ হতে অনেক দিন এখনও বাকি।
‘শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা বিষয়ে আমাদের মাথায় রাখতে হবে। এই পরিস্থিতি কত দিন চলবে তা বলা যাচ্ছে না। করোনা শনাক্তের হার বাড়তে শুরু করেছে। শীতের মধ্যে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ আশার আশঙ্কা রয়েছে।’