দেশের শেয়ারবাজারে দীর্ঘদিন ধরে বিদেশি ও প্রবাসী বিনিয়োগকারীর সংখ্যা কমছিল। তবে সেপ্টেম্বরে এসে সেই প্রবণতায় কিছুটা পরিবর্তন দেখা দিয়েছে। সদ্য সমাপ্ত মাসে বিদেশি ও প্রবাসী বিনিয়োগকারীদের বেনিফিশিয়ারি ওনার্স (বিও) হিসাব বেড়েছে ৪০টি। একই সময়ে স্থানীয় বিনিয়োগকারীর সংখ্যাও বেড়েছে।
বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি) ও সিডিবিএল সূত্রে জানা যায়, ৩১ আগস্ট পর্যন্ত বিদেশি ও প্রবাসীদের নামে সক্রিয় বিও হিসাব ছিল ৪৩ হাজার ৭৬১টি। সেপ্টেম্বরে এসে তা দাঁড়ায় ৪৩ হাজার ৮০১টিতে। যদিও এখনো ২০২৩ সালের তুলনায় তাদের উপস্থিতি অনেক কম। গত বছরের অক্টোবরে এই সংখ্যা ছিল ৫৫ হাজার ৫১২টি। অর্থাৎ এক বছরের ব্যবধানে কমেছে ১১ হাজার ৭১১টি বিও হিসাব।
এদিকে শুধু বিদেশি নয়, দেশি বিনিয়োগকারীরাও সেপ্টেম্বরে শেয়ারবাজারে কিছুটা সক্রিয় হয়েছেন। আগস্টে দেশি বিনিয়োগকারীর নামে বিও হিসাব ছিল ১৫ লাখ ৮৪ হাজার ১০৪টি, যা সেপ্টেম্বরে বেড়ে দাঁড়ায় ১৫ লাখ ৯০ হাজার ৬৯৫টিতে। অর্থাৎ এক মাসে বেড়েছে ৬ হাজার ৫৯১টি বিও হিসাব। তবে চলতি বছরের শুরুতে মোট বিও হিসাব ছিল ১৭ লাখ ৭৩ হাজার ৫৫১টি। বর্তমানে তা নেমে এসেছে ১৬ লাখ ৫২ হাজার ২২৭টিতে। অর্থাৎ নয় মাসে কমেছে ১ লাখ ২১ হাজার ৩২৪টি হিসাব।
বিনিয়োগকারীর ধরন অনুযায়ী দেখা যায়, সেপ্টেম্বরে পুরুষ বিনিয়োগকারী বেড়েছে ৫ হাজার ৫৭৮টি, নারী বিনিয়োগকারী বেড়েছে ১ হাজার ৪৯টি এবং কোম্পানি হিসাব বেড়েছে ১৯৯টি। এছাড়া একক নামে বিও হিসাব বেড়েছে ৬ হাজার ২১৯টি ও যৌথ নামে বেড়েছে ১ হাজার ৪০৮টি।
যদিও বিনিয়োগকারীর সংখ্যা বেড়েছে, সূচকে তার ইতিবাচক প্রভাব পড়েনি। আগস্ট শেষে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) প্রধান সূচক ডিএসইএক্স (DSEX) ছিল ৫ হাজার ৫৯৪ পয়েন্ট, যা সেপ্টেম্বরে নেমে এসেছে ৫ হাজার ৪১৫ পয়েন্টে। অর্থাৎ এক মাসে সূচক কমেছে ১৭৯ পয়েন্ট।
বাজার মূলধনও হ্রাস পেয়েছে। আগস্ট শেষে ডিএসইর বাজার মূলধন ছিল ৭ লাখ ২৮ হাজার ৪৮ কোটি টাকা। সেপ্টেম্বরে তা কমে দাঁড়ায় ৭ লাখ ২৫ হাজার ৬৩ কোটি টাকায়। অর্থাৎ কমেছে ২ হাজার ৮৫ কোটি টাকা।
লেনদেনও নিম্নমুখী রয়ে গেছে। একসময় প্রতিদিন হাজার কোটি টাকার ওপরে লেনদেন হলেও এখন তা নেমে এসেছে ৬০০ কোটির ঘরে। সেপ্টেম্বরের শেষ ১৫ কার্যদিবসে কোনো দিনই লেনদেন হাজার কোটি টাকা ছুঁতে পারেনি।
বিশ্লেষকরা বলছেন, বিদেশি ও প্রবাসী বিনিয়োগকারীর অংশগ্রহণ বাড়া বাজারের জন্য ইতিবাচক সংকেত হলেও মৌলিক সমস্যাগুলো এখনো কাটেনি। সূচক ও মূলধনের পতন বিনিয়োগকারীদের আস্থা পুরোপুরি ফিরিয়ে আনতে ব্যর্থ হয়েছে।