বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

আরাকান আর্মির স্বাক্ষরে আসা ১৯ টন চাল ফেরত যাচ্ছে

  • প্রতিনিধি, টেকনাফ (কক্সবাজার)   
  • ১৮ ডিসেম্বর, ২০২৪ ১৯:৫৬

বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি নিয়ন্ত্রিত মিয়ানমারের মংডু থেকে ১৯ টন চালের চালানটি মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কক্সবাজারের টেকনাফ স্থলবন্দরে পৌঁছায়। আরাকান আর্মি স্বাক্ষরিত ১৯ টন চালের চালানটির কাগজপত্রে জটিলতার কারণে তা ফেরত পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়ে কাস্টমস কর্তৃপক্ষ।

মিয়ানমার থেকে আমদানি করা চালের একটি চালান নিয়ে ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। কাগজপত্র যাচাই-বাছাই শেষে টেকনাফ কাস্টমস সঠিক নথির অভাবে চালানটি খালাস না করে মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

বিচ্ছিন্নতাবাদী সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি (এএ) নিয়ন্ত্রিত মিয়ানমারের মংডু থেকে ১৯ টন চালের চালানটি মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কক্সবাজারের টেকনাফ স্থলবন্দরে পৌঁছায়।

আরাকান আর্মি স্বাক্ষরিত ১৯ টন চালের চালানটির কাগজপত্রে জটিলতার কারণে পণ্য খালাস করা নিয়ে সমস্যা দেখা দেয়। পরবর্তীতে টেকনাফ কাস্টমস কর্তৃপক্ষ চালানটি মিয়ানমারে ফেরত পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয়।

টেকনাফ স্থলবন্দরের শুল্ক কর্মকর্তা বি এম আবদুল্লাহ আল মাসুম বলেন, ‘মংডু থেকে আসা চালভর্তি ট্রলারের কাগজপত্রে জটিলতার কারণে পণ্য খালাসের অনুমতি দেয়া হয়নি। কারণ ওই চালানের সঙ্গে মালামালের কএনা সঠিক ছাড়পত্র নেই। তাছাড়া সংশ্লিষ্ট আমদানিকারকের মিয়ানমার থেকে চাল আনার অনুমতি নেই খাদ্য মন্ত্রণালয়ের।’

তিনি বলেন, ‘কাগজপত্র না থাকার কারণে চালভর্তি ট্রলারটি পুনরায় রাখাইনে ফেরত যেতে হবে।’

সম্প্রতি আরাকান আর্মি রাখাইন রাজ্যের উত্তরাঞ্চল দখল করে বাংলাদেশের সঙ্গে ২৭০ কিলোমিটার দীর্ঘ সীমান্তের পুরোটা নিয়ন্ত্রণে নেয়ার দাবি করেছে। এরপর থেকে টেকনাফ উপজেলার অপর পাশে মংডু জেলায় উত্তেজনা বেড়েই চলেছে।

উদ্ভূত পরিস্থিতিতে মংডু শহর আরাকান আর্মি দখলের নেয়ার পর প্রথমবারের মতো মঙ্গলবার বিকেলে চালভর্তি একটি ট্রলার টেকনাফ স্থলবন্দর ঘাটে আনেন রোহিঙ্গা মো. জামাল হোসেন মাঝি। তার বাড়ি মংডুর জাম্বুনিয়া গ্রামে।

জামাল হোসেন মাঝি বলেন, ‘মিয়ানমারের মংডুর খাইয়ুংখালী খাল থেকে আরাকান আর্মির পাস নিয়ে ৩৮৪ বস্তা চাল নিয়ে টেকনাফ স্থলবন্দরে পৌঁছেছি। কিন্তু একদিন পার হয়ে গেলেও কাগজপত্র জটিলতার কারণে পণ্য খালাস হয়নি।’

তিনি জানান, রাখাইনের মংডু শহরের ব্যবসায়ী টু মেং সি আরাকান আর্মির ছাড়পত্র নিয়ে চালগুলো ট্রলারের লোড করান। পরে এক ঘণ্টার পথ পাড়ি দিয়ে ট্রলার নিয়ে তারা টেকনাফে আসেন। পথে নাফ নদে বিজিবি ও কোস্টগার্ড ট্রলারটি তল্লাশি করেছে।

জামালা মাঝি বলেন, মূলত আমরা চারজন মাঝি-মাল্লা ওই ব্যবসায়ীর চালভর্তি ট্রলারটি নিয়ে ভাড়ায় এসেছি। পুরো মংডু শহরটি এখন আরাকান আর্মি নিয়ন্ত্রণ করছে। এর আগে থেকে এই স্থলবন্দরে আমার ট্রলার নিয়ে আসা-যাওয়া রয়েছে।’

স্থলবন্দর ব্যবসায়ী ও শ্রমিকরা জানান, কয়েকজন রোহিঙ্গা এবং স্থানীয় ও চট্টগ্রামের ব্যবসায়ীরা মিলে আরাকান আর্মির নিয়ন্ত্রণাধীন রাখাইনের মংডু শহর থেকে ১৯ টন চাল প্রথমে ট্রেডলিংক মেরিন লাইন কোম্পানির স্বত্বাধিকারী মো. সেলিমের কাছে ট্রলারটি আনেন। কিন্ত তার খাদ্য মন্ত্রণালয়ের চাল আমদানির অনুমতি না থাকায় আরেক আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান মেসার্স জিন্না অ্যান্ড ব্রাদার্সের স্বত্বাধিকারী শওকত আলী চৌধুরীর শরণাপন্ন হন চালের মালিকরা।

টেকনাফ ঘাটে আনা পর্যন্ত আমদানি করা এই চালের দাম পড়েছে ৪৬ টাকা কেজি।

এ বিষয়ে টেকনাফ স্থলবন্দরের ব্যবসায়ী মো. সেলিম বলেন, ‘খাদ্য মন্ত্রণালয়ের অনুমতি না থাকায় চালগুলো খালাস করা যায়নি। চালের মালিকরা অন্য আমদানিকারকের শরণাপন্ন হয়েছে। যতটুকু জেনেছি এখনও চালগুলো খালাস হয়নি। ট্রলারটি এখনও ঘাটে নৌঙর করা রয়েছে।’

টেকনাফ স্থলবন্দরের প্রধান নিরাপত্তা কর্মকর্তা মেজর (অব.) এ এস এম আলমগীর হোসেন বলেন, ‘রাখাইনের মংডু শহর থেকে আসা ট্রলারভর্তি চাল খালাসের অনুমতি পায়নি। সঠিক নথির অভাবে চালগুলো খালাসের ছাড়পত্র দেয়নি কাস্টমস কর্তৃপক্ষ।’

এ বিভাগের আরো খবর