বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বাজারের সঙ্গে মিলছে না সরকারের মূল্যস্ফীতির হিসাব

  •    
  • ৭ জুলাই, ২০২৪ ২৩:৩৯

অর্থনীতিবিদ ড. আহসান এইচ মনসুর নিউজবাংলাকে বলেন, ‘মূল্যস্ফীতির যে হিসাব সরকার দিচ্ছে তার চেয়ে প্রকৃত মূল্যস্ফীতি অনেক বেশি। এদেশের বাজার ব্যবস্থার ওপর সরকারের নিয়ন্ত্রণ নেই বলেই যে কোনোভাবে একটি দুষ্ট গোষ্ঠী নিত্যপণ্যের দাম বাড়িয়ে যাচ্ছে।’

নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের বাড়তি দামে দিশেহারা মানুষ। বিশেষ করে মধ্যম কিংবা নিম্ন আয়ের মানুষের কাছে নিত্যপণ্যের দাম এখন আতঙ্কের নামান্তর।

বন্যা-বৃষ্টির অযুহাতে সবজির দাম অন্য যেকোনো সময়ের চেয়ে বেশি। একশ’ টাকা কেজির নিচে ভালো মানের সবজি পাওয়া দায়। অন্যদিকে ও একধাপ বেড়েছে পেঁয়াজের দাম। সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে আলু, রসুন, আদা, চাল, ডাল, মাংসের দামও।

নিত্যপণ্যের অসহনীয় দামে মানুষ যখন অসহায় হয়ে পড়েছে তখন সরকারি সংস্থা বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) প্রতিবেদন বলছে- শেষ হওয়া জুন মাসে কমেছে মূল্যস্ফীতি।

রোববার বিবিএসেরর হালনাগাদ প্রতিবেদনে দেখা যায়, জুন শেষে মূল্যস্ফীতি দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ৭২ শতাংশ। এর আগের মাসে তা ছিলো ৯ দশমিক ৮৯ শতাংশ। অর্থাৎ, ২০২৩ সালের জুন মাসে যে পণ্য বা সেবা কিনতে সাধারণ মানুষের খরচ পড়ত ১০০ টাকা, চলতি বছরের জুনে তা কিনতে পড়বে ১০৯ টাকা ৭২ পয়সা। যদিও সাধারণ মানুষের কাছে খরচ বাড়ার এ হিসাবের কোনো গ্রহণযোগ্যতা নেই।

বিবিএসের হিসাবে সার্বিক মূল্যস্ফীতির সঙ্গে পাল্লা খানিকটা কমেছেও খাদ্য মূল্যস্ফীতিও। জুন শেষে শুধু খাদ্যপণ্যের মূল্যস্ফীতি ছিলো ১০ দশমিক ৪২ শতাংশ। এ নিয়ে টানা তিন মাস ধরে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ১০ শতাংশের উপরে রয়েছে। মে মাসে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ছিলো ১০ দশমিক ৭৬ শতাংশ। তার আগের মাস এপ্রিলে সূচকটি ছিলো ১০ দশমিক ২২ শতাংশ।

চলতি অর্থবছরের বাজেট ঘোষণায় অর্থমন্ত্রী আবুল হাসান মাহমুদ আলী মূল্যস্ফীতি কমিয়ে ৬ দশমিক ৫ শতাংশের ঘরে নিয়ে আসার লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছেন। নতুন বছর শুরু হয়েছে জুলাই মাসের ১ তারিখে। চলতি মাস শেষেও যদি মূল্যস্ফীতি কমে না আসে তাহলে বছর শেষে অর্থমন্ত্রীর দেয়া লক্ষ্যমাত্রা পূরণ কঠিন হয়ে পড়বে বলেই মনে করেন বিশেষজ্ঞরা।

মূল্যস্ফীতি বেড়ে গেলে নিম্ন আয়ের মানুষের কষ্ট বাড়ে সবচেয়ে বেশি। অল্প আয় দিয়ে তাদের সংসার চালাতে হিমশিম খেতে হয়। বর্তমানে বাজারে গেলেই শোনা যায় গরিব মানুষের হাহাকার। এজন্য বিশ্লেষকরা সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেন মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের ওপর। প্রায় দুই বছর ধরে বেড়েই চলেছে মূল্যস্ফীতি। করোনা মহামারি ও রাশিয়া ইউক্রেন যুদ্ধের জেরে শুরু হয় এই মূল্যস্ফীতি। প্রথম দিকে বিশ্বের প্রায় সব দেশে বাড়তে থাকলেও বেশিরভাগ দেশ নানা কৌশল নিয়ে তা নিয়ন্ত্রণে আনতে পেরেছে। তবে বাংলাদেশ এখনও খাদ্যপণ্যের দাম কমিয়ে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণে সফল হতে পারেনি।

এ প্রসঙ্গে অর্থনীতিবিদ ড. আহসান এইচ মনসুর নিউজবাংলাকে বলেন, ‘মূল্যস্ফীতির যে হিসাব সরকার দিচ্ছে তার চেয়ে প্রকৃত মূল্যস্ফীতি অনেক বেশি। এদেশের বাজার ব্যবস্থার ওপর সরকারের নিয়ন্ত্রণ নেই বলেই যে কোনোভাবে একটি দুষ্ট গোষ্ঠী নিত্যপণ্যের দাম বাড়িয়ে যাচ্ছে।’

‘এই দুষ্ট গোষ্ঠীকে নিয়ন্ত্রণ করতে না পারলে বাংলাদেশের নিত্যপণ্যের বাজার সহনীয় হবে না, মূল্যস্ফীতিও কমবে না’ যোগ করেন আহসান মনসুর।

এদিকে জুন মাসে খাদ্যবর্হিভূত মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমে ৯ দশমিক ১৫ শতাংশ হয়েছে। বিবিএসের হিসাবে এর আগের মাসে তা ছিলো ৯ দশমিক ১৯ শতাংশ।

বাজারে নিত্যপণ্যের দাম যেমন

বাজারে নিত্যপণ্যের দামে কোনোভাবেই লাগাম পড়ছে না। গেল কয়েকদিন ধরে বেড়েই চলেছে সবজি, পেঁয়াজ, রসুন, চাল, মাছ কিংবা মাংসের দাম।

মিরপুর-৬ নম্বর বাজারে যেন হাত দেয়া যায় না কোনো সবজিতে। টাটকার অযুহাতে এখানে লম্বা বেগুন চাওয়া হচ্ছে ১৪০ টাকা কেজি, গোল বেগুন ১২০ টাকা।

এছাড়া টমেটো ২০০, করলা ১২০, বরবটি ১৪০, কাকরোল ১০০-১২০, কাঁচা পেপে ৬০, ঢেঁড়শ ৮০, কচুরমুখী ১২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি করা হচ্ছে। শুধু পটল পাওয়া যাচ্ছে ৫০-৬০ টাকা কেজি দরে। অর্থাৎ বেশিরভাগ সবজির কেজি এখন ১০০ টাকা ছাড়িয়ে। কাঁচামরিচের দাম কিছুটা কমলেও এখনও ৩০০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে।

শুধু মিরপুরের এই বাজারট নয়, রাজধানীর সব বাজারেই নিত্যপণ্যের দামে প্রায় একই চিত্র।

গোল আলুকে এক সময় গরিবের সবজি হিসেবে উল্লেখ করা হতো। সেই আলু বিক্রি হচ্ছে ৬০ থেকে ৭০ টাকা কেজি। পাশাপাশি বেড়েছে পেঁয়াজের দাম। আমদানি করা পেঁয়াজও এখন বিক্রি হচ্ছে ৯০ টাকা কেজি। দেশি হাইব্রিড জাতের পেঁয়াজের কেজি ১১০ টাকা আর দেশি পেঁয়াজ কিনতে গুনতে হচ্ছে ১২০ টাকা।

মাংসের বাজারেও প্রায় একই চিত্র। গরুর মাংসের দাম ঈদের পরও আর কমেনি। বেড়ে যাওয়া দামেই বিক্রি হচ্ছে ব্রয়লার, কক কিংবা দেশি মুরগি।

এ বিভাগের আরো খবর