সপ্তাহের শেষ কর্মদিবসে বৃহস্পতিবার দেশের দুই পুঁজিবাজারে বড় উত্থান দেখা গেছে। সূচক, লেনদেন কিংবা বাজার মূলধন সব খাতেই ছিলো বড় উলম্ফন। সরকারি কর্মচারীরা পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করতে পারবেন- বুধবার গণমাধ্যমে এমন খবর আসার পর বৃহস্পতিবার ঘুরে দাঁড়ায় পুঁজিবাজার।
প্রধান পুঁজিবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ-ডিএসইতে বৃহস্পতিবার প্রধান সূচক ডিএসইএক্স বেড়েছে প্রায় ১২৪ পয়েন্ট। পাশাপাশি লেনদেন হয়েছে ৭৭০ কোটি ৭০ লাখ টাকার বেশি। সকালে বড় কোনো উত্থান না হলেও খবর ছড়িয়ে পড়ার পর থেকে লেনদেন ও সূচক বাড়তে থাকে বলে জানিয়েছেন পুঁজিবাজার-সংশ্লিষ্টরা।
ডিএসইতে এদিন লেনদেনে অংশ নেয়া প্রায় সব কোম্পানির দাম বাড়তে দেখা যায়। ৩৬৫টি শেয়ার ও মিউচ্যুয়াল ফান্ডের দাম বৃদ্ধির বিপরীতে কমেছে ১৩টির। আর অপরিবর্তিত দেখা গেছে ১৮টি প্রতিষ্ঠানকে।
লেনদেনেও বেশ গতি ছিলো। বিশেষ করে কার্যদিবসের শেষ সময়ে শেয়ার কেনার প্রবণতা বেশি থাকায় লেনদেন ছাড়িয়েছে সাড়ে সাতশ’ কোটি টাকার ঘর। আগের দিনের চেয়ে এদিন লেনদেন বেড়েছে প্রায় ২৩১ কোটি টাকা। সূচকের বড় উত্থানে দিন শেষে ডিএসইএক্স অবস্থান নিয়েছে ৫ হাজার ৪৯৭ পয়েন্টে।
লেনদেন ও সূচকের উত্থানে কিছুটা হলেও স্বস্তি ফিরে এসেছে ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের মধ্যে। পুঁজিবাজারের বিনিয়োগকারী রতন মোল্লা নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বাজারে গতি আসবে আমরা সেদিকেই তাকিয়ে আছি। তা কারণ যেটাই হোক। কমতে কমতে একেবারে তলানিতে চলে গেছে প্রায় সব শেয়ারের দাম। এখন সরকারি কর্মচারীরা বিনিয়োগ করতে পারবেন- এমন খবরে শুনলাম অনেকে শেয়ার কেনা শুরু করেছে। এই বাজারে যারা শেয়ার কিনবে তারা লাভ করবে।’
আরেক বিনিয়োগকারি শিমুল বিশ্বাস বলেন, ‘সরকারি কর্মচারীরা তো দেশেরই নাগরিক। তারা এতোদিন কেন শেয়ার কিনতে পারতেন না এটাই আমার মাথায় আসছে না। তাদেরকে আগেই পুঁজিবাজারে আনা উচিত ছিল। শুনলাম আইন পরিবর্তন করে তাদেরকে সুযোগ দেয়া হচ্ছে। এটা পুঁজিবাজার ও সরকারি কর্মচারী দুপক্ষকেই লাভবান করবে।’
এদিনের উত্থানে ডিএসইতে বাজার মূলধন বেড়েছে প্রায় ৯ হাজার ২শ’ কোটি টাকা। বৃহস্পতিবার দিনশেষে ডিএসইর বাজার মূলধন দাঁড়িয়েছে ৬ লাখ ৭১ হাজার কোটি টাকার কিছুটা বেশি।
এদিকে একই সংবাদে বড় উত্থান হয়েছে দেশের অপর পুঁজিবাজার চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ-সিএসইতেও। এই বাজারের প্রধান সূচক সিএএসপিআই বেড়েছে ৩০৬ পয়েন্ট। লেনদেনেও গতি ছিলো এদিন। সিএসইতে এদিন মোট লেনদেন ছাড়িয়ে গেছে ২৪ কোটি ৬৫ লাখ টাকার ঘর।
জানা গেছে, সম্প্রতি জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় সরকারি কর্মচারী বিধিমালা, ১৯৭৯-এর একটি খসড়ার সংশোধনী আইন মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়েছে। যাচাইয়ের পর তা আবার মন্ত্রণালয়ে ফেরত এসেছে। সেখানে কয়েক দশকের পুরনো আইন পরিবর্তন করে সরকারি কর্মচারীদের পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের সুযোগ দেয়ার কথা রয়েছে।
কর্তৃপক্ষের অনুমোদন সাপেক্ষে, সরকারি কর্মচারীরা শেয়ারবাজারে নিবন্ধিত যে কোনো কোম্পানির শেয়ার বা বন্ড কিনতে বা বিক্রি করতে পারবেন। তবে তারা অফিস সময়ে এ ধরনের কাজ করতে পারবেন না বলে জানা গেছে। বিদ্যমান আইন অনুযায়ী সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারীরা শেয়ারবাজারে বিনিয়োগ করতে পারেন না।