দেশের আর্থিক খাতে সন্দেহজনক লেনদেন (এসটিআর) ও সন্দেহজনক কার্যক্রম ব্যাপক হারে বেড়েছে। গত অর্থবছরে সন্দেহজনক লেনদেন হয়েছে ১৪ হাজার ১০৬টি, যা আগের ২০২১-২২ অর্থবছরে ছিল ৮ হাজার ৫৭১টি। আর তার আগের অর্থবছরে ছিল ৫ হাজার ২৮০টি। সে হিসাবে দেশে এক বছরে সন্দেহজনক লেনদেন বেড়েছে ৬৪ দশমিক ৫৭ শতাংশ বা ৫ হাজার ৫৩৫টি।
অর্থপাচার ও সন্ত্রাসে অর্থায়ন প্রতিরোধের কেন্দ্রীয় সংস্থা বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) ২০২২-২৩ অর্থবছরের বার্ষিক প্রতিবেদনে এমন তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংকে মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলনে এই প্রতিবেদনের বিস্তারিত তুলে ধরা হয়। এতে অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএফআইইউর প্রধান মাসুদ বিশ্বাস।
সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, সব সন্দেহজনক লেনদেন (এসটিআর) অপরাধ নয়। লেনদেন সন্দেহজনক হলে বিএফআইইউ তদন্ত করে। এরপর কোনো অপরাধের তথ্য-প্রমাণ মিললে সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হয়।
মাসুদ বিশ্বাস বলেন, মানি লন্ডারিংয়ের ৮০ শতাংশ হয় ব্যাংকের মাধ্যমে। ব্যাংক সহযোগিতা না করলে এটা নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন। কারণ একবার মানি লন্ডারিং হয়ে গেলে তা ফেরত আনা যায় না।’
পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনা ও সহযোগিতার জন্য ১০ দেশের সঙ্গে এমওইউ’র প্রস্তাব দেয়া হয়েছে বলে জানান তিনি।
সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে বিএফআইইউ প্রধান বলেন, ‘বিএফআইইউর তথ্যের ভিত্তিতে অর্থ পাচারের মামলা হয়েছে ৫৯টি। এর মধ্যে দুর্নীতি দমন কমিশন মামলা করেছে ৪৭টি। এছাড়া সিআইডি ১০টি ও এনবিআরের বিশেষ সেল দুটি মামলা করেছে। সেসব মামলা এখনও নিষ্পত্তি হয়নি।’
বিএফআইইউর প্রতিবেদনে বলা হয়, পুরো অর্থবছরে সর্বোচ্চ ১২ হাজার ৮০৯টি সন্দেহজনক লেনদেনের রিপোর্ট জমা দিয়েছে ব্যাংকগুলো। তার আগের অর্থবছরে তারা জমা দিয়েছিল ৭ হাজার ৯৯৯টি রিপোর্ট। আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো জমা দেয় ১২১টি রিপোর্ট। আর ৯০০ রিপোর্ট জমা দিয়েছে এক্সচেঞ্জ হাউজগুলো।
বিএফআইইউ’র নির্বাহী পরিচালক রফিকুল ইসলাম, বৈদেশিক মুদ্রা ও নীতি বিভাগের পরিচালক সারোয়ার হোসেন ও অতিরিক্ত পরিচালক কামাল হোসাইন সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন।