প্রবাসীরা চলতি বছরের প্রথম মাসে ২ দশমিক ১০ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স পাঠিয়েছেন। এই পরিমাণ বিগত সাত মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ। আর ২০২৩ সালের একই সময়ের তুলনায় তা ৭ দশমিক ৬৯ শতাংশ বেশি।
চলতি বছরে রেমিট্যান্স প্রবাহে ইতিবাচক ধারা জানুয়ারির প্রথম থেকেই দেখা যাচ্ছি। ধারণা করা হচ্ছিল যে রেমিট্যান্স প্রবাহের এই ধারা অব্যাহত থাকলে মাস শেষে তা দুই বিলিয়ন ডলার হবে। বাস্তবে সেই ধারণাকেও ছাড়িয়ে গেছে। এসেছে ২ দশমিক ১০ বিলিয়ন ডলার।
বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি সূত্র বৃহস্পতিবার এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
সূত্র বলছে, নতুন বছরের প্রথম মাস জানুয়ারিতে ২ দশমিক ১০ বিলিয়ন ডলারের রেমিট্যান্স এসেছে দেশে। বাংলাদেশি মুদ্রায় এর পরিমাণ ২২ হাজার ১১০ কোটি টাকা (প্রতি ডলার সমান ১১০ টাকা হিসাবে)।
কেন্দ্রীয় ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০২৩ সালের ডিসেম্বরে রেমিট্যান্স হিসেবে ১ দশমিক ৯৮ বিলিয়ন ডলার দেশে আসে। এর আগে ওই বছরের জুনে দেশে কোনো একক মাসে সর্বোচ্চ ২ দশমিক ১৯ বিলিয়ন ডলার রেমিট্যান্স আসে।
বৈধপথে রেমিট্যান্স আনতে নেয়া উদ্যোগের প্রভাবে রেমিট্যান্স প্রবাহে সুবাতাস দেখা যাচ্ছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা।
বাড়তি প্রণোদনা প্রবাসী বাংলাদেশিদের বৈধ পথে রেমিট্যান্স পাঠাতে আরও উৎসাহিত করছে বলে অভিমত কেন্দ্রীয় ব্যাংকের কর্মকর্তাদের।
বাংলাদেশ ব্যাংকের এক কর্মকর্তা জানান, ২০২৩ সালের জুন মাসে সবশেষ ২ বিলিয়ন ডলার অতিক্রম করেছিল রেমিট্যান্স। মাঝে ৬ মাসের বেশি সময় ২ বিলিয়ন ডলার বা এর বেশি আসেনি।
তবে চলতি বছরের প্রথম মাসের শুরু থেকেই প্রবাসী আয় বা রেমিট্যান্স আসার ধারা ভালো ছিল। ধারণা করা হয়েছিল মাসটিতে রেকর্ড পরিমাণ প্রবাসী আয় আসবে। এখন নিরাপদ ও বাড়তি প্রণোদনা পাওয়ায় প্রবাসীরা উৎসাহিত হচ্ছেন। আগামীতে বৈধ পথে রেমিট্যান্স আসার পরিমাণ আরও বলে ধারণা করা যায়।
সদ্য বিদায়ী বছরের শেষ মাস ডিসেম্বরে ১৯৮ কোটি ৯৮ লাখ ৭০ হাজার ডলার বা ২১ হাজার ৮০০ কোটি টাকার বেশি আসে। আর দিনে এসেছে ৬ কোটি ৪১ লাখ ডলার বা ৭০৪ কোটির টাকার বেশি।
এরমধ্যে রাষ্ট্র মালিকানাধীন ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ১৯ কোটি ৩৭ লাখ ৭০ হাজার ডলার এবং বিশেষায়িত দুই ব্যাংকের মধ্যে এক ব্যাংকের মাধ্যমে এসেছে ৬ কোটি ৬২ লাখ ৩০ হাজার ডলার। আর বেসরকারি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ১৭২ কোটি ৪৫ লাখ ৯০ হাজার ডলার এবং বিদেশি ব্যাংকগুলোর মাধ্যমে এসেছে ৫২ লাখ ৮০ হাজার ডলার।
রিজার্ভ কমে ১৯ দশমিক ৯৪ বিলিয়ন ডলার
এদিকে রেমিট্যান্স আয় বাড়লেও দেশের মোট রিজার্ভ কমেছে। বৃহস্পতিবার রিজার্ভ ছিল ১৯ দশমিক ৯৪ বিলিয়ন ডলার।
আন্তর্জাতিক অর্থ তহবিল-আইএমএফ নির্দেশিত বিপিএম-৬ পদ্ধতিতে রিজার্ভের এই হিসাব করা হয়েছে। অর্থাৎ এক সপ্তাহের ব্যবধানে গ্রস রিজার্ভ ২০ দশমিক ০২ বিলিয়ন ডলার থেকে ৮৩ মিলিয়ন ডলার কমেছে।
ব্যাংকাররা জানিয়েছেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নিয়মিত ডলার বিক্রির কারণে রিজার্ভ ক্রমাগত কমছে।