বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

ব্র্যাক ও ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের আয়োজনে ‘দ্য ওয়ে’ ভবিষ্যতে নেতৃত্ব দেওয়ার প্রত্যয় তরুণ শিক্ষার্থীদের

  • নিজস্ব প্রতিবেদক   
  • ২৪ আগস্ট, ২০২৫ ২১:৩০

বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী, তরুণ উদ্যোক্তা ও পেশাজীবীদের সক্রিয় অংশগ্রহণে অনুষ্ঠিত হলো ‘দ্য ওয়ে’ বা ‘আগামীর পথ’ শীর্ষক অনুষ্ঠান। দিনব্যাপী আয়োজনে ছিল অংশগ্রহণমূলক বক্তৃতা, প্যানেল আলোচনা, বিতর্ক, তরুণদের উদ্ভাবিত উদ্যোগের পাশাপাশি ব্র্যাকের বিভিন্ন কর্মসূচির প্রদর্শন, চলচ্চিত্র প্রদর্শন, মিউজিক থেরাপিসহ নানা অনুষ্ঠান। ২৪শে আগস্ট ২০২৫, ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির মেরুল বাড্ডা ক্যাম্পাসে ব্র্যাক ও ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত দিনব্যাপী এই আয়োজনের মূল লক্ষ্য ছিল তরুণ প্রজন্মকে নেতৃত্ব, উদ্ভাবন ও অ্যাডভোকেসির মতো নানা কাজে যুক্ত হতে উৎসাহিত করা এবং তাদের জন্য সুযোগ সৃষ্টি করা।

বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রায় ২৫০ জন শিক্ষার্থীর পাশাপাশি ব্র্যাক ইয়ুথ প্রোগ্রামের সদস্য, তরুণ পেশাজীবী, উন্নয়ন সহযোগী, গণমাধ্যম এবং ব্র্যাক ও ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রতিনিধিরাও এতে অংশ নেন।

দিনের শুরুতে ‘দ্য সায়েন্স অফ ফাইন্ডিং আ ওয়ে’ শীর্ষক সেশনে ব্র্যাকের নির্বাহী পরিচালক আসিফ সালেহ্ বলেন, সমাজ যা বলছে সেই গণ্ডির মধ্যে আবদ্ধ না থেকে তরুণরা যে যেই পেশাতেই থাকুক না কেন, তারা পরিবর্তনের পথ দেখাতে পারেন।

তিনি বলেন, আত্মবিশ্বাসের সঙ্গে লক্ষ্য অনুসরণ করতে হবে কারণ পরিবর্তনের উদ্যোগগুলো নিয়ে কাজ শুরু হলে তা স্বাভাবিকভাবেই অংশীদার এবং রিসোর্সকে আকৃষ্ট করে। ব্র্যাকের প্রতিষ্ঠাতা প্রয়াত স্যার ফজলে হাসান আবেদের যাত্রা এবং ব্র্যাকের ‘সল্যুশন ইকোসিস্টেম’ বা সমাধান কাঠামো, যেখানে উন্নয়ন কর্মসূচি এবং সামাজিক উদ্যোগগুলো একসাথে কাজ করছে, সেই অভিজ্ঞতার আলোকে আসিফ সালেহ্ বলেন, উচ্চাভিলাষী লক্ষ্য নির্ধারণ এবং দীর্ঘমেয়াদি পরিবর্তনে অঙ্গীকারবদ্ধ থাকাটা খুবই জরুরি। সত্যিকারের পরিবর্তন আনতে হলে তার জন্য দীর্ঘ অধ্যবসায় প্রয়োজন এবং দীর্ঘ মেয়াদে টেকসই অগ্রগতি নিশ্চিত করতে হলে একই সাথে অ্যাকটিভিজম, পলিসি, উন্নয়ন এবং এর বাণিজ্যিক দিকগুলোকেও সন্নিবেশিত করতে হবে।

ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সৈয়দ ফারহাত আনোয়ার এই অধিবেশনের সমাপনী বক্তব্যে বলেন, দানেই প্রকৃত পরিতৃপ্তি। আমরা যখন নিজেদের ঘাটতিগুলো চিহ্নিত করতে পারি এবং সেগুলো পূরণের জন্য সৃজনশীল সমাধান খুঁজে পাই, তখনই এটি সম্ভব হয়। নিজের, সমাজের এবং দেশের প্রতি দায়িত্ববোধ থেকে প্রায়ই হতাশা জন্ম নেয়। তবে অন্যদের সঙ্গে তুলনায় না গিয়ে নিজের ভেতরের স্বকীয়তাকে খুঁজে বের করে সামনে এগিয়ে যেতে হবে। কারণ অন্যের মঙ্গলে অবদান রাখার মাধ্যমেই নিজেকে সমৃদ্ধ করা যায়।

এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন ব্র্যাকের পিপল, কালচার অ্যান্ড কমিউনিকেশনস-এর ঊর্ধ্বতন পরিচালক মৌটুসী কবীর এবং শিক্ষা ও দক্ষতা উন্নয়ন ও অভিবাসন কর্মসূচির পরিচালক সাফি রহমান খান। অনুষ্ঠানে ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির পক্ষ থেকে উপস্থিত ছিলেন ট্রেজারার আরিফুল ইসলাম, রেজিস্ট্রার ড. ডেভিড ডাউল্যান্ড, লার্নিং অ্যান্ড টিচিং ইনোভেশন সেন্টারের পরিচালক প্রফেসর ড. মো. গোলাম সামদানী ফকির, ডিরেক্টর অফ কমিউনিকেশন্স খায়রুল বাশার, অপারেশনস ডিরেক্টর সাজেদুল করিম, স্টুডেন্ট লাইফ-এর জয়েন্ট ডিরেক্টর তাহসিনা রহমান।

‘স্পার্কটক’ পর্বে বাগেরহাটের মোংলা উপজেলার চিলা ইউনিয়ন থেকে আসা দৃষ্টি প্রতিবন্ধী শিক্ষার্থী ঐতি রায় তুলে ধরেন তার জীবন ও সংগ্রামের গল্প। এ ছাড়া ব্র্যাকের নগর উন্নয়ন কর্মসূচির প্রোগ্রাম ম্যানেজার মাহিনুর সাইফ এ সময় বক্তব্য রাখেন।

ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি ডিবেট ক্লাবের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হয় সংসদীয় ব্যবস্থার আদলে বিতর্ক প্রতিযোগিতা। পরে ‘বিয়ন্ড ওয়ান ওয়ে’ শীর্ষক প্যানেল আলোচনা অনুষ্ঠিত হয়। দ্য ডেইলি স্টারের চিফ বিজনেস অফিসার তাজদীন হাসান, মাম্মিকিডস এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা নিশাত আনজুম পলকা এবং ইটস হিউম্যানিটি ফাউন্ডেশনের চেয়ারম্যান বাশিরা হারুন এতে অংশ নেন। ‘দ্য ওয়ে অফ হারমনি’ শীর্ষক সেশনে ছিল আরমিন মুসা ও তাঁর দলের সম্মিলিত মিউজিক থেরাপি পরিবেশনা। এ ছাড়া ‘ডিজাইন কোয়েস্ট: সলভ ফর সোসাইটি’ শীর্ষক সেশন পরিচালনা করে শিশুদের জন্য খেলাভিত্তিক শিক্ষার সোশ্যাল স্টার্ট ‘মেকা টিম’।

এ ছাড়াও ছিল তরুণ উদ্ভাবকদের পাশাপাশি ব্র্যাকের নানা উদ্যোগের প্রদর্শন। ব্র্যাকের পক্ষ থেকে ওয়াটার হ্যাকাথন এবং আমরা নতুন নেটওয়ার্কের অংশগ্রহণকারীরা উপস্থাপন করেন তিনটি প্রকল্প—যত্নের দোকান, ইকো কেয়ার এবং উজ্জীবন। ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের রোবোটিক্স ক্লাব এবং এনভায়রনমেন্ট অ্যান্ড ইনোভেশন ক্লাবের উদ্যোগে প্রদর্শিত হয় প্রযুক্তি ও টেকসই উন্নয়ন বিষয়ে পাঁচটি প্রকল্প।

ব্র্যাকের জলবায়ু পরিবর্তন কর্মসূচি (সিসিপি); নগর উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউডিপি), ব্র্যাক ইন্সটিটিউট অফ এডুকেশনাল ডেভেলপন্ট (বিআইইডি), ইন্টিগ্রেটেড ডেভেলপমেন্ট কর্মসূচি (আইডিপি) ও আল্ট্রা পুওর গ্র্যাজুয়েশন (ইউপিজি) কর্মসূচি, সামাজিক ক্ষমতায়ন ও আইনগত সুরক্ষা কর্মসূচি (সেলপ) এবং ব্র্যাক লিম্ব অ্যান্ড ব্রেস সেন্টারের (বিএলবিসি) নানা উদ্যোগ ও সেবাগুলো এখানে তুলে ধরা হয়। এ ছাড়া মানসিক স্বাস্থ্যসেবা সহায়তার জন্য ‘মনের যত্ন’ এবং ব্র্যাক ইন্টারন্যাশনালের পক্ষ থেকে তাদের বৈশ্বিক কার্যক্রমের সারসংক্ষেপ তুলে ধরা হয়।

‘অলওয়েজ অ্যা ওয়ে-দ্য হিউম্যান লাইব্রেরি’ শীর্ষক আয়োজনে ব্র্যাক ইউনিভার্সিটির সাবেক শিক্ষার্থীরা এবং ব্র্যাক ইয়াং প্রফেশনাল প্রোগ্রাম ও আমরা নতুন নেটওয়ার্কের সদস্যরা তাদের অভিজ্ঞতা ও জীবনের গল্পগুলো তুলে ধরেন। ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি ফিল্ম ক্লাব দেশি ও আন্তর্জাতিক স্বল্পদৈর্ঘ্য চলচ্চিত্র প্রদর্শনীর আয়োজন করে। ব্র্যাক ইউনিভার্সিটি আর্ট অ্যান্ড ফটোগ্রাফি ক্লাবের উদ্যোগে স্থাপিত গ্রাফিতি ওয়ালে অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণকারী শিক্ষার্থীরা ইচ্ছেমতো রং দিয়ে তাদের স্বপ্ন ও আকাঙ্ক্ষাগুলো তুলে ধরেন। অন্যদিকে ‘ব্র্যাক-ইউ এক্সপ্রেস’-এর পক্ষ থেকে তরুণদের মতামতগুলো ভিডিও সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে ধারণ করা হয়, যেখানে তরুণরা খোলামেলাভাবে তাদের দৃষ্টিভঙ্গি তুলে ধরেছেন।

অনুষ্ঠানস্থলে স্থাপিত ‘দ্য ওয়ে’ বুথগুলো তরুণদের ব্র্যাকের সঙ্গে যুক্ত হওয়ার সুযোগ সৃষ্টি করে দেয়। একটি অন্তর্ভুক্তিমূলক, সহনশীল ও সৃজনশীল উদ্ভাবনের দেশ হিসেবে বাংলাদেশকে গড়ে তুলতে তরুণদের পরিবর্তনের মূল চালিকাশক্তি হিসেবে প্রস্তুত করার জন্য ব্র্যাকের প্রতিশ্রুতিকেই পুনর্ব্যক্ত করে ‘দ্য ওয়ে’।

এ বিভাগের আরো খবর