আন্তর্জাতিক ঋণমান যাচাইকারী প্রতিষ্ঠান মুডি’স ইনভেস্টরস সার্ভিস দীর্ঘ মেয়াদে বাংলাদেশের ঋণমান কমালেও বিষয়টিতে এ দেশের বিশেষ কিছু আসে যায় না বলে মন্তব্য করেছেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার।
আগামী অর্থবছরের প্রথম ছয় মাসের জন্য মুদ্রানীতি ঘোষণার সময় রোববার সাংবাদিকদের এক প্রশ্নে তিনি এ মন্তব্য করেন।
গভর্নর আব্দুর রউফ তালুকদার বলেন, রেটিং যেসব কারণে কমানো হয়েছে, তাতে আমাদের কিছু যায় আসে না। যেটা করা হয়েছে সেটাকে পিওর ইকোনমিক রিপোর্টিং বলা যাবে না। এটা ভূরাজনৈতিক কারণে হয়েছে।
তিনি বলেন, এখন দেশের অর্থনীতিতে ডলারের সংকট ও রিজার্ভের সমস্যা ছাড়া বড় কোনো সমস্যা নেই। এ ছাড়া অর্থনীতির অন্য সূচকগুলো ভালো আছে। আমাদের রেটিং কমানোর মতো কিছু হয়নি।
গভর্নর বলেন, এর আগে ২০১২ সালের দিকে মুডি’স যে রেটিং দিয়েছিল, সে সময় আমাদের অর্থনীতি যেমন ছিল, তার চেয়ে এখন অনেক ভালো অবস্থানে আছে।
তিনি বলেন, ইতোমধ্যে আমাদের ডলারের রিজার্ভ বা মজুত ৪৮ বিলিয়নেও উঠেছিল। মাথাপিছু আয়ও গত কয়েক বছরে বেড়েছে। কিন্তু তখন তারা আমাদের রেটিং বাড়ায়নি।
গত মে মাসের শেষ দিকে বাংলাদেশের ঋণমান এক ধাপ কমিয়ে বিএ-৩ থেকে বি১-এ নামিয়ে দেয় মুডি’স। আন্তর্জাতিক ঋণমান যাচাইকারী প্রতিষ্ঠানটি তখন জানায়, বৈদেশিক লেনদেনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশে উঁচু মাত্রার দুর্বলতা ও তারল্যের ঝুঁকি রয়েছে। একইসঙ্গে চলমান সংকটের মধ্যে বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রাতিষ্ঠানিক দুর্বলতাও প্রকাশ পেয়েছে।
মুডি’স অবশ্য বাংলাদেশের জন্য তাদের পূর্বাভাস স্থিতিশীল রাখে তখন। আবার স্বল্পমেয়াদি ইস্যুয়ার রেটিংয়ের ক্ষেত্রে ‘নট প্রাইম’ মান অব্যাহত রাখার কথা জানায় প্রতিষ্ঠানটি। প্রতিষ্ঠানটি তখন জানায়, পরিস্থিতি খানিকটা সহজ হলেও বাংলাদেশে ডলার সংকট চলমান। বিদেশি মুদ্রার মজুত কমে যাচ্ছে, যা দেশটির বৈদেশিক লেনদেন পরিস্থিতির ওপর চাপ অব্যাহত রেখেছে। একইসঙ্গে আমদানির ক্ষেত্রে নানা ধরনের বাধা তৈরি হয়েছে, যার ফলে জ্বালানির ঘাটতি দেখা দিয়েছে।
বাংলাদেশের অর্থনীতির পূর্বাভাস স্থিতিশীল রাখার যৌক্তিকতা ব্যাখ্যা করতে গিয়ে মুডি’স জানায়, দেশটি কম সুদে আন্তর্জাতিক আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো থেকে অর্থায়ন ও সহায়তা পেয়ে যাচ্ছে। ফলে বৈদেশিক ও রাজস্ব খাতে চাপ হালকা হবে।