লেনদেন বাড়লেও সপ্তাহের দ্বিতীয় কর্মদিবসে পতনমুখী ছিল শেয়ারবাজার। দরপতনের পাল্লা বেশি ভারি থাকলেও ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) সাধারণ সূচক কমেছে এক পয়েন্টের কম। কারণ যেসব কোম্পানির দরপতন হয়েছে, সেগুলোর মূলধন কম হওয়ায় সূচকে খুব বেশি প্রভাব পড়েনি।
অন্যদিকে, সাত কর্মদিবসের মধ্যে লেনদেন সোমবার সর্বোচ্চ হয়েছে। দিনভর হাতবদল হয়েছে ৩৩৪ কোটি ৬৯ লাখ ৬০ হাজার টাকা।
এর চেয়ে বেশি লেনদেন হয়েছিল সাত কর্মদিবস আগে ২৯ ডিসেম্বর। ওই দিন ডিএসইতে হাতবদল হয় ৩৪৫ কোটি ৭১ লাখ ৪৬ হাজার টাকা।
সদ্য সমাপ্ত বছরের শেষ মাসে পুঁজিবাজারের লেনদেনে খরা দেখা দেয়ার পর নতুন বছরে তা ঘুরে দাঁড়ানোর আশা করেছিল নিয়ন্ত্রক সংস্থা ও বাজার সংশ্লিষ্টরা। তবে বছরের প্রথম তিন দিন লেনদেন আরও তলানিতে নেমে ২০০ কোটির নিচে নেমে যায়।
এরপর পুঁজিবাজারসংশ্লিষ্টদের ডেকে বুধবার বৈঠক করে বিএসইসি। এতে বিএসইসির পক্ষ থেকে বলা হয়, সবাইকে বাজার ভালো করতে নামতে হবে। আর যতদিন পুঁজিবাজারের ‘স্বাস্থ্য’ ভালো না হবে ফ্লোর প্রাইস পুরোপুরি উঠবে না।
তবে পরদিন পুঁজিবাজারে ওই বৈঠকের প্রভাব পড়তে দেখা যায়নি। সপ্তাহের শেষ কর্মদিবস বৃহস্পতিবার ডিএসইতে লেনদেন চার কর্মদিবস পর ও নতুন বছরে প্রথমবারের মতো ৩০০ কোটি টাকার ঘর অতিক্রম করলেও সূচক কমে ৮ পয়েন্ট।
সেখান থেকে ৩৩ কোটি ৮১ লাখ ৫১ হাজার টাকা কমে রোববার লেনদেন হয় ২৮৪ কোটি ২০ লাখ ৩ হাজার টাকা। সেদিন সূচক পড়ে ১ পয়েন্টের কিছু বেশি।
সোমবার আগের কর্মদিবসের চেয়ে ৫০ কোটি ৪৯ লাখ ৫৭ হাজার টাকা বেশি লেনদেন হয়েছে। তবে প্রধান সূচক ডিএসইএক্স শূন্য দশমিক ৭৬ পয়েন্ট কমে দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ১৯১ পয়েন্টে।
রোববার দরপতনের তুলনায় দরবৃদ্ধি হয়েছে চারগুণের বেশি। ৩২টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির তুলনায় দরপতন হয়েছে ১৩১টির। আগের দিন ৪০টি কোম্পানির দরবৃদ্ধির তুলনায় দরপতন হয় ১২২টির।
অপরিবর্তিত দরে লেনদেন করা কোম্পানির সংখ্যা ৪টি কমে দাঁড়িয়েছে ১৬৪ টিতে; যার দুই একটি বাদে প্রায় সবই ফ্লোর প্রাইসে রয়েছে।
সোমবার লেনদেন না হওয়া কোম্পানির সংখ্যা বেড়েছে। একটি কোম্পানির লেনদেন রেকর্ড ডেটের কারণে বন্ধ ছিল। এর বাইরে ৬৪টি কোম্পানির কোনো শেয়ার লেনদেন হয়নি। আগের দিন এ সংখ্যা ছিল ৫৯টি।
লেনদেন অংশ নেয় ৩২৭টি কোম্পানি। এর মধ্যে ১ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়েছে কেবল ৪৭টি কোম্পানিতে। আগের দিন এই অংকে লেনদেন হয় ৪২ কোম্পানিতে।
সোমবারও লেনদেনে ভারসাম্য ছিল না। এদিন ৪৭টি কোম্পানিতে হাতবদল হয়েছে ২৭৬ কোটি ৯৩ লাখ ৩৬ হাজার টাকা। বাকি ২৮০টি কোম্পানিতে হাতবদল হয়েছে কেবল ৫৭ কোটি ৭৬ লাখ ২৪ হাজার টাকা।
বাজারের লেনদেন প্রসঙ্গে ব্যাংক এশিয়া সিকিউরিটিজের শীর্ষ নির্বাহী (সিইও) সুমন দাস নিউজবাংলাকে বলেন, ‘মার্কেটে আজকে একটাই পজিটিভ দিক আছে, সেটা হলো ৩০০ কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়েছে। আমরা মনে করি, এমন ধারা যদি অব্যাহত থাকে তবে অনেক দূর যাওয়া সম্ভব। ৩০০ কোটি টাকা যদি ১০ দিন সাস্টেন করে, তাহলেও অনেক কিছু সম্ভব।’
লেনদেন কি শুধুই সেক্টরাল মুভমেন্টের মধ্যেই ছিল কি না জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘সেক্টরাল মুভমেন্ট তো কিছুটা ছিল। আইটি, লাইফ ইন্স্যুরেন্স কিছুটা বেড়েছে। তবে বেক্সিমকো গ্রুপ আরেকটু সরব থাকলে মানুষের কনফিডেন্সটা আরেকটু বাড়তো।’