বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

সঞ্চয়পত্রের উচ্চ সুদ বন্ড মার্কেট উন্নতিতে বাধা

  •    
  • ১৯ ডিসেম্বর, ২০২২ ২১:১২

আহসান এইচ মনসুর বলেন, ‘সঞ্চয়পত্রের মূল সুবিধাভোগী একটি শক্তিশালী গ্রুপ। তাদের কারণেই সঞ্চয়পত্রের সুদ হার কমানো সম্ভব হয় না। গবেষণায় দেখেছি ৭০ শতাংশের বেশি সঞ্চয়পত্র কেনেন ধনীরা। যতদিন সঞ্চয়পত্রের উচ্চ সুদের হার থাকবে ততদিন বন্ড মার্কেট ডেভলপ করবে না।’

সঞ্চয়পত্রের মাধ্যমে বিত্তশালীদের সুবিধা দেয়া হচ্ছে। স্বল্প আয়ের মানুষ সঞ্চয়পত্র থেকে খুব একটা সুবিধা পাচ্ছে না। সঞ্চয়পত্রে যে বিনিয়োগ হয় তার ৭০ শতাংশের বেশি ধনীদের। যতদিন সঞ্চয়পত্রের উচ্চ সুদ হার থাকবে ততোদিন দেশের বন্ড মার্কেটের উন্নতি হবে না।

বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউট (পিআরআই) আয়োজিত কর্মশালায় এমন অভিমত উঠে এসেছে।

সোমবার পিআরআই কার্যালয়ে বাংলাদেশের অভ্যন্তরীণ সম্পদ আহরণ নিয়ে এই কর্মশালার আয়োজন করা হয়।

‘আন্ডারস্ট্যান্ডিং দ্য কনটেক্সট অফ ডমেস্টিক রিসোর্স মোবিলাইজেশন ইন বাংলাদেশ’ শীর্ষক এই কর্মশালায় বক্তব্য দেন পিআরআই চেয়ারম্যান ড. জাহিদী সাত্তার, নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর, গবেষণা পরিচালক এম এ রাজ্জাক ও পরিচালক বজলুল হক খন্দকার।

আহসান এইচ মনসুর বলেন, ‘সঞ্চয়পত্রের মূল সুবিধাভোগী একটি শক্তিশালী গ্রুপ। তাদের কারণেই সঞ্চয়পত্রের সুদ হার কমানো সম্ভব হয় না। আমাদের একটা গবেষণায় দেখেছি ৭০ শতাংশের বেশি সঞ্চয়পত্র কেনেন ধনীরা। যতদিন সঞ্চয়পত্রের উচ্চ সুদের হার থাকবে ততদিন বন্ড মার্কেট ডেভলপ করবে না।’

এম এ রাজ্জাক বলেন, ‘সরকার যে রাজস্ব আয় করে তার ২০ শতাংশই সুদ পরিশোধের জন্য ব্যয় করতে হয়। সরকারের এই সুদ ব্যয় কমাতে হলে সঞ্চয়পত্রের বিক্রি কমাতে হবে। উচ্চ হারে সুদ দিয়ে সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগের সুযোগ দেয়া উচিত নয়। এর বদলে অন্য জায়গায় বিনিয়োগের সুযোগ সৃষ্টি করা উচিত।’

গবেষণা প্রতিবেদন তুলে ধরে ড. রাজ্জাক বলেন, ‘অষ্টম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা অনুসারে ২০২২ সালে জিডিপি প্রবৃদ্ধি হবে ৭ দশমিক ৭ শতাংশ। এই ধারাবাহিকতা অব্যাহত থাকলে ২০৩১ সালে প্রবৃদ্ধি বেড়ে দাঁড়াবে ৯ শতাংশ।

‘এই প্রবৃদ্ধি অর্জন করতে হলে সরকারকে প্রতি বছর জিডিপির সঙ্গে অতিরিক্ত ১০৫ বিলিয়ন ডলার পরিমাণ অর্থের বিনিয়োগ বাড়াতে হবে। কিন্তু এই বিশাল অঙ্কের অর্থ কোন খাত থেকে আসবে, তার কোনো সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যমাত্রা সরকারের নেই। ফলে টেকসই উন্নয়ন লক্ষ্যমাত্রা (এসডিজি) বাস্তবায়ন নিয়ে শঙ্কা রয়েছে।’

অভ্যন্তরীণ সম্পদ আহরণ বাড়ানোর গুরুত্ব তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘আমাদের বাজেটের আকার মূলত জিডিপির ১৩ শতাংশের মতো। অর্থাৎ সরকার ব্যয় করে ১৩ শতাংশের মতো। অথচ পৃথিবীর গরিব দেশগুলোতেও গড়ে জিডিপির ২৪ থেকে ২৫ শতাংশ ব্যয় করে সরকার। সরকারের ব্যয় বাড়াতে হলে অভ্যন্তরীণ সম্পদ আহরণ বাড়াতে হবে।’

প্রতিবেদন বলা হয়, এসডিজি বাস্তবায়ন করতে হলে শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও সামাজিক নিরাপত্তা খাতের বাজেট আরও বাড়াতে হবে। ইউনিসেফের মানদণ্ড অনুযায়ী একটি উন্নয়নশীল দেশের শিক্ষা খাতে তার মোট জিডিপির ৪ শতাংশ বরাদ্দ থাকতে হয়। কিন্তু আমাদের দেশে এই খাতেই বরাদ্দের হার ১ শতাংশ। কম ব্যয় করার কারণে শিক্ষার মান কমছে। প্রতিবছর সাড়ে ৩ লাখের মতো জিপিএ-৫ পাচ্ছে। কিন্তু ইন্ডাস্ট্রিগুলোতে গেলে দেখবেন তারা বলছে যোগ্য জনবল পাচ্ছে না।

বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার (ডব্লিউএইচও) মতে, স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দ রাখতে হবে ৫ শতাংশ। আর আমাদের দেশে বাজেটে এই খাতে বরাদ্দ রয়েছে দশমিক ৭ শতাংশ। মানদণ্ড অনুযায়ী তা নগণ্য। স্বাস্থ্যে সরকার কম খরচ করায় গরিব মানুষ সঠিক স্বাস্থ্য সেবা পাচ্ছে না।

বিশ্বে স্বাস্থ্য সেবার বেশিরভাগ সরকার বহন করে। কিন্তু আমাদের দেশে স্বাস্থ্য সেবার ব্যয় ব্যক্তিকেই বহন করতে হয়। আমাদের দেশে স্বাস্থ্য সেবায় যে ব্যয় হয় তার ৭০ শতাংশ ব্যক্তি বহন করে। আর সরকার বহন করে ৩০ শতাংশের মতো। বিশ্বের চিত্র এর সম্পূর্ণ বিপরীত।

সামাজিক নিরাপত্তা কর্মসূচির বিষয়ে এম এ রাজ্জাক বলেন, টিসিবির মাধ্যমে কম মূল্যে যেসব পণ্য বিক্রি করা হয়, সেই কর্মসূচি বাড়ানো গেলে গরিব মানুষগুলো সুবিধা পেত।

এ বিভাগের আরো খবর