পুঁজিবাজারে বস্ত্র খাতের তালিকাভুক্ত কোম্পানি অলটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজের শেয়ার কারসাজিতে জড়িত থাকার অভিযোগে বিনিয়োগকারী মো. জসিম উদ্দিন ও তার সহযোগীদের ৫০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।
জসিম উদ্দিন শেখ নিজেই সোমবার রাতে নিউজবাংলাকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) এক তদন্ত প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, চাঁদপুরের মো. জসিম উদ্দিন শেখ নিজের বিও একাউন্ট থেকে অলটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজের শেয়ার লেনদেন করেছেন। পাশাপাশি সম্পর্কিত আরো ১৮টি সহ মোট ১৯টি বিও একাউন্ট ব্যবহার করে অলটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজের শেয়ার লেনদেন করেছেন। তাদের এই কাসাজির কারণে অলটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজের শেয়ার দুই মাস সাত দিন সময়ে ১৩১ দশমিক ৬৮ শতাংশ বেড়ে যায়।
গত বছরের ২৮ জুন অলটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজের শেয়ারের দাম ছিল ১০ টাকা ১০ পয়সা। কারসাজির পরে গত বছর ৫ সেপ্টেম্বর অলটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজের শেয়ারের দাম হয় ২৩ টাকা ৪০ পয়সা। এসময় দাম বাড়ে ১৩ টাকা ৩০ পয়সা।
অভিযোগে জানা যায়, চাঁদপুরের মো. জসিম উদ্দিন শেখ সেখানকার চান্দ্রা শিক্ষিত বেকার যুব বহুমূখী সমবায় সমিতির চেয়ারম্যান। তিনি ও তার সহযোগীরা অলটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজের শেয়ার কারসাজি করেন। এর মাধ্যমে তারা ১ কোটি ৫ লাখ ৩৬ হাজার ৬৮৯ টাকা রিয়েলাইজড গেইন এবং ২৭ লাখ ২৭ হাজার ৮৫৩ টাকা আনরিয়েলাইজড গেইন করেছেন।
ইমিনেন্ট সিকিউরিটিজ ও ইউনাইটেড ফাইন্যান্সিয়াল ট্রেডিং ব্রোকারেজ হাউজে থাকা ১৯টি বেনিফিশিয়ারি ওনার্স (বিও) অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে সিরিজ ট্রেডিংয়ের মাধ্যমে চক্রটি কোম্পানিটির শেয়ারের দাম অস্বাভাবিকভাবে বাড়ায়।
অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে তদন্তকরে কারসাজির সঙ্গে জড়িতদের চিহ্নিত করে তাদের শাস্তির আওতায় এনেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। লিখিত জবাবে জসিম উদ্দিন ও তার সহযোগীরা অভিযোগের বিষয়ে যে লিখিত ব্যাখ্যা দিয়েছেন তা কমিশনের কাছে গ্রহণযোগ্য বলে বিবেচিত হয়নি।
আরও পড়ুন: পুঁজিবাজার: অলটেক্সের ‘কারসাজির চেষ্টা’ ধরা
অভিযুক্ত জসিম উদ্দিন শেখ নিউজবাংলাকে বলেন, ‘অলটেক্স ইন্ডাস্ট্রিজের শেয়ার কারসাজিতে জড়িত থাকার অভিযোগে আমাদের ৫০ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে। আমরা টাকা জমা দেইনি, তবে তা দিয়ে দিব। আমাদের ২২ তারিখ পর্যন্ত সময় আছে।
‘আমরা কারসাজি করিনি, ৬ কোটি টাকা বিনিয়োগ করে ১ কোটি টাকা লাভ করেছি। আবার অনেক লোকসান করেছি। আমি ২০১৭ সাল থেকে পুঁজিবাজারে জড়িত। ২০২১ সালে আমাদের সমবায় সমিতির প্রায় ৯৬ কোটি টাকা সদস্যদের অনুমতি নিয়ে বিনিয়োগ করি। এখন দেউলিয়া হওয়ার দশা। এখন আমাদের বিনিয়োগ দাঁড়িয়েছে ৫৪ কোটি টাকায়।’
চলতি বছরের অক্টোবরে ইস্টার্ন ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার কারসাজির অভিযোগে মো. জসিম উদ্দিনকে এক কোটি টাকা জরিমানা করা হয়। তার আগে সেপ্টেম্বরে প্রভাতি ইন্স্যুরেন্সের শেয়ার যোগসাজশের মাধ্যমে কারসাজির অভিযোগে তাকে ৭৫ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়।