বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

রিজার্ভের টাকা দিয়ে বিমান কিনেছি, নদী ড্রেজিং করছি: প্রধানমন্ত্রী

  •    
  • ১২ নভেম্বর, ২০২২ ১২:১৪

প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘(রিজার্ভের) টাকা কেউ চিবিয়েও খায়নি, গিলেও খায়নি আর নিয়েও যায়নি, তবে হ্যাঁ বিএনপি বলবে। বিএনপির তো অভ্যাসই। তারেক জিয়া নিজেই যে মানি লন্ডারিং করেছে। তারা নিজেরা চুরি করে অর্থ সম্পদ বানিয়েছে। কারণ তাদের তো কিছুই ছিল না।’

রিজার্ভের টাকা দেশের উন্নয়ন ও মানুষের কল্যাণে ব্যয় করা হয়েছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, এ অর্থ কেউ চিবিয়ে, গিলে খায়নি; নিয়েও যায়নি।

‘রিজার্ভের টাকা গেল কই’ বলে বিএনপি নেতারা যে বক্তব্য দিচ্ছেন, তার জবাবে সরকারপ্রধান বলেছেন, বিএনপির অর্থ আত্মসাতের অভ্যাস রয়েছে। তারা এসব কথা বলে।

বিএনপি ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপাসন তারেক রহমান মানি লন্ডারিং মামলায় পলাতক আসামি জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যাদের অভ্যাস, তারা খালি ওইটা জানে যে, টাকা বোধ হয় সব নিয়েই যেতে হয়।’

আওয়ামী লীগ সরকার একটি অর্থও অপচয় করে না জানিয়ে তিনি বলেছেন, প্রতিটি অর্থ ব্যয় করা হয়েছে বাংলাদেশের মানুষের স্বার্থে।

সাভারের আশুলিয়া বাজারসংলগ্ন কনস্ট্রাকশন ইয়ার্ডে ঢাকা-আশুলিয়া এলিভেটেড এক্সপ্রেসওয়ে প্রকল্পের নির্মাণকাজের উদ্বোধন অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী এ কথা বলেন। গণভবন প্রান্ত থেকে শনিবার সকালে যুক্ত হন সরকারপ্রধান।

সারা দেশের যোগাযোগব্যবস্থার উন্নয়নের সুফল দেশের মানুষ পাচ্ছে জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘(রিজার্ভের) টাকা কেউ চিবিয়েও খায়নি, গিলেও খায়নি। আর নিয়েও যায়নি, তবে হ্যাঁ বিএনপি বলবে। বিএনপির তো অভ্যাসই। তারেক জিয়া নিজেই যে মানি লন্ডারিং করেছে। তারা নিজেরা চুরি করে অর্থ সম্পদ বানিয়েছে। কারণ তাদের তো কিছুই ছিল না।

‘জিয়াউর রহমান যখন মারা যায়, তখন আমরা ৪০ দিন টেলিভিশনে দেখেছি ভাঙা স্যুটকেস আর গেঞ্জি ছাড়া কিছু রেখে যায়নি, কিন্তু পরে দেখি হাজার হাজার কোটি টাকার মালিক তারা। জনগণের অর্থ আত্মসাৎ করেই এটা হয়েছে।’

প্রধানমন্ত্রী বলেন, “আমাদের বিরোধী দল থেকে প্রায়ই ‘রিজার্ভের টাকা গেল কোথায়’, এই নিয়ে প্রশ্ন করে। সেই সঙ্গে সারা বাংলাদেশে একটা অপপ্রচার চালানোর চেষ্টা করে। তাদের আমি বলতে চাই, বিএনপি যখন ক্ষমতায় ছিল তখন রিজার্ভ ছিল মাত্র ২ দশমিক ৯ বিলিয়ন ইউএস ডলার। আর ২০০১ থেকে ২০০৮ পর্যন্ত এটি বৃদ্ধি পেয়েছিল মাত্র ৫ বিলিয়নের মতো। সেই জায়গা থেকে আমরা এই রিজার্ভ প্রায় ৪৮ বিলিয়ন ডলারের কাছাকাছি বৃদ্ধি করতে সক্ষম হয়েছি।”

করোনাভাইরাস মহামারির কারণে সেটা সম্ভব হয়েছিল জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘যোগাযোগ, যাতায়াত, আমদানি সবকিছু প্রায় বন্ধ ছিল, কিন্তু যখন এই যোগাযোগটা খুলে গেছে, তখন আমাদের আমদানি করা…বিশেষ করে সারা বিশ্বব্যাপী করোনাভাইরাস এবং ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে যে অর্থনৈতিক মুদ্রাস্ফীতি দেখা দিয়েছে, যে অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দিয়েছে, তার আঘাতটা তো আমাদের দেশে এসেও পড়েছে।

‘আজকে রিজার্ভের টাকা থেকে যেমন আমাদের আমদানি ব্যয় মেটাতে হচ্ছে, পাশাপাশি আমরা বিনা পয়সায় ভ্যাকসিন দিয়েছি। করোনা টেস্টিং, সেটাও কিন্তু বিনা পয়সায় করেছি। পৃথিবীর কোনো উন্নত দেশও কিন্তু বিনা পয়সায় টেস্টিংও করায়নি, ভ্যাকসিনও দেয়নি। আমরা নগদ টাকা দিয়ে কিন্তু প্রথম ভ্যাকসিনগুলো কিনি। এরপর কিছু আমরা অনুদান পেয়েছি।’

সারা বিশ্বে নিত্যপণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ার বিষয়টি সামনে এনে প্রধানমন্ত্রী বলেন, ‘খাদ্যপণ্যের দাম কিন্তু সারা বিশ্বে বেড়ে গেছে; পরিবহন ব্যয় বেড়ে গেছে। জ্বালানি তেলের দাম বেড়ে গেছে। ভোজ্যতেল, গম, ভুট্টাসহ ডাল- যা কিছু আমাদের আমদানি করতে হচ্ছে…আমরা চাল উৎপাদন করছি, খাদ্য আমরা উৎপাদন করছি, আমরা স্বয়ংসম্পূর্ণ, তার পরও কিছু আমাদের আমদানি করতে হয়। বন্যায় যখন ফসল নষ্ট হলো, তখন আমাকে চাল আমদানি করতে হয়েছে। ঘূর্ণিঝড়ে নষ্ট হলো। আমাকে আমদানি করতে হয়েছে। কাজেই আমরা যেটুকু করেছি খরচ, সেটা হলো জনগণের স্বার্থে, জনগণের কল্যাণে।

‘জনগণের খাদ্য কেনা, ক্যানসারের ওষুধ কেনা, জনগণের মঙ্গলের জন্য আমাদের করতে হয়েছে। সার, জ্বালানি তেল, বিদ্যুৎ আমাদের কিন্তু ক্রয় করতে হচ্ছে, নগদ টাকা দিয়ে আমরা কিনছি। রিজার্ভের টাকা দিয়ে আমরা কিন্তু বিমান ক্রয় করেছি। বিমান ক্রয়, নদী ড্রেজিং আমরা আমাদের রিজার্ভের টাকা দিয়ে করছি।’

রিজার্ভের টাকা উন্নয়নকাজে বিনিয়োগ করা হচ্ছে জানিয়ে কেন বিনিয়োগ করা হচ্ছে তার কারণও ব্যাখ্যা করেন বঙ্গবন্ধুকন্যা।

তিনি বলেন, ‘কিছু কিছু আমরা বিনিয়োগ করছি এই কারণে, সেটা হলো আমরা যদি অন্য দেশের এক্সিম ব্যাংক থেকে লোন নিই, আমাকে সুদসহ সেই ডলার পরিশোধ করতে হয়। কাজেই আমাদের ডলার যদি আমরা খরচা করি, দিই, আমাদের সোনালী ব্যাংকের মাধ্যমে এটা দিচ্ছি, তাতে করে সুদসহ টাকাটা, আমাদের দেশের টাকা দেশেই থেকে যায়। সেটা লক্ষ্য করেই প্রায় ৮ বিলিয়নের মতো আমরা খরচা করেছি।

‘এখান থেকে কিছু ডলার আপনারা জানেন যখন শ্রীলঙ্কা খুব অর্থনৈতিক সমস্যায়, তখন তাদের কিছু টাকা আমরা ধার দিয়েছি। কাজেই এভাবেই কিন্তু আমরা দিচ্ছি। এখানে কিন্তু কোনো পয়সা কেউ তুলে নিয়ে চলে যায়নি। তাদের (বিএনপি) মনে সব সময় ওই রকম ভয় থাকে। এই কথা তারা বলে।’

কেন বিএনপি এসব কথা বলে তার যুক্তিও তুলে ধরেন শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, ‘বিএনপি বিশেষ করে বলবে। বলার কারণটা হচ্ছে তাদের নেতা তারেক জিয়া মানি লন্ডারিং কেসে সাত বছরের কারাদণ্ড পেয়েছে এবং ২০ কোটি টাকা অর্থদণ্ড পেয়েছে এবং সে পলাতক আসামি। কাজেই মানি লন্ডারিং যাদের অভ্যাস, তারা খালি ওইটা জানে যে টাকা বোধ হযয় সব নিয়েই যেতে হয়, কিন্তু আওয়ামী লীগ সরকার এ দেশের একটা অর্থও অপচয় করে না। প্রতিটি অর্থ ব্যয় করে বাংলাদেশের মানুষের স্বার্থে, কল্যাণে, তাদের ভালো-মন্দ দেখে।’

জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে এ দেশ স্বাধীন হয়েছে জানিয়ে সরকারপ্রধান বলেন, ‘আমরা আওয়ামী লীগ, আমাদের একটা দায়বদ্ধতা আছে জনগণের প্রতি। কারণ জাতির পিতা যে আদর্শ নিয়ে দেশ স্বাধীন করেছেন, আমরা সেটাই পূর্ণ করতে চাই। সে লক্ষ্য নিয়ে দেশ পরিচালনা করছি বলে গত ১৩ বছরে বাংলাদেশ বদলে গেছে।’

জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ, করোনার অভিঘাত, রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের প্রভাবে যে অর্থনৈতিক মন্দা দেখা দিয়েছে তা সামাল দিতে এক ইঞ্চি জমিও যেন অনাবাদি না থাকে, দেশবাসীর কাছে সেই আহ্বান আবারও পুনর্ব্যক্ত করেছেন শেখ হাসিনা।

তিনি বলেন, ‘টাকা দিয়ে মানুষের যোগাযোগ যেন আরও সহজ হয়, চলাচল সহজ হয় যাতে, পরিবহন সহজ হয় যাতে, তার ব্যবস্থা করছি। নৌপথ, রেলপথ, সড়কপথ, আকাশপথের ব্যাপক উন্নয়ন সাধন করেছি। এটা আকাশ থেকে পড়েনি।

‘বেশির ভাগ কাজ আমরা নিজেদের অর্থ দিয়ে করছি, যেন কারও কাছে হাত পেতে চলতে না হয়। নিজেদের সম্মান নিয়ে আমরা নিজেরা চলব, মাথা উঁচু করে বাংলাদেশ সম্মানের সঙ্গে চলবে।’

এ বিভাগের আরো খবর