স্বল্পোন্নত থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণ-পরবর্তী সময়ে স্থানীয় শিল্পের বিকাশ জরুরি। একইসঙ্গে ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের উৎসাহিত করতে ব্যবসাবান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করতে হবে।
শনিবার অর্থ মন্ত্রণালয়ের আওতাধীন অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ-ইআরডি আয়োজিত কর্মশালায় বক্তারা এমন অভিমত ব্যক্ত করেন।
সিলেটের সার্কিট হাউসে জেলা প্রশাসন ও সিলেট চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রির সহায়তায় এ কর্মশালার আয়োজন করা হয়।
স্বল্পোন্নত দেশ থেকে বাংলাদেশের উত্তরণের প্রক্রিয়া এবং তার ফলে সৃষ্ট সুযোগ ও সম্ভাবনা সম্পর্কে স্থানীয় পর্যায়ে অংশীদারদের অবহিত করা এবং উত্তরণ প্রক্রিয়াটি মসৃণ ও টেকসইকরণের প্রক্রিয়ায় জনগণকে ঘনিষ্ঠভাবে সম্পৃক্ত করাই এ আয়োজনের উদ্দেশ্য।
কর্মশালায় বক্তারা বলেন, সিলেট জেলার অর্থনৈতিক অগ্রগতিকে ত্বরান্বিত করার লক্ষ্যে এ অঞ্চলের ভৌগোলিক অবস্থান, কৃষিজ শিল্প ও পর্যটনের সম্ভাবনাকে সঠিকভাবে কাজে লাগাতে হবে। একইসঙ্গে প্রবাসীদের প্রতি বিনিয়োগে এগিয়ে আসার আহ্বান জানান তারা।
স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের প্রেক্ষাপটে স্থানীয় শিল্প খাত বিশেষত কৃষিজ শিল্প ও রপ্তানি খাতকে আরও উৎপাদনশীল ও বহুমুখী করা এবং নারী উদ্যোক্তাদের জন্য ব্যবসা-বান্ধব পরিবেশ নিশ্চিত করার ওপর জোর দেন তারা।
কর্মশালায় প্রধান অতিথি ছিলেন ইআরডি সচিব শরিফা খান। বিশেষ অতিথি ছিলেন সিলেট চেম্বার অফ কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি-এর সভাপতি তাহমিন আহমেদ।
অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন সিলেটের জেলা প্রশাসক মো. মজিবর রহমান।
শরিফা খান বলেন, ‘স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণ বাংলাদেশের জন্য অত্যন্ত গৌরবের বিষয়। এর ফলে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে বাংলাদেশের মর্যাদা বৃদ্ধি পাবে।
‘অতীতে বাংলাদেশ বৈশ্বিক নানা প্রতিবন্ধকতা সফলভাবে মোকাবেলা করতে সক্ষম হয়েছে। আশা করি স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণ-পরবর্তী সময়েও বাংলাদেশ সম্মিলিভাবে উন্নয়নের গতিধারা অব্যাহত রাখতে সক্ষম হবে। তবে সেজন্য স্থানীয় শিল্পের বিকাশ ঘটাতে হবে।’
স্বল্পোন্নত দেশ থেকে উত্তরণের লক্ষ্যে স্থানীয় লোকবলের জন্য প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ ও কর্মদক্ষতা বৃদ্ধির ওপর গুরুত্বারোপ করেন তাহমিন আহমেদ।
জেলা প্রশাসক মজিবর রহমান উত্তরণ প্রক্রিয়া সম্পর্কে স্থানীয় পর্যায়ে সচেতনতা বৃদ্ধির ওপর গুরুত্বারোপ করেন।
অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন ইআরডির অতিরিক্ত সচিব ও সাপোর্ট টু সাসটেইনেবল গ্রাজুয়েশন প্রকল্পের ফরিদ আজিজ।
তিনি বলেন, ‘উত্তরণ-পরবর্তী সময়ে বাংলাদেশের আন্তর্জাতিক বাণিজ্য ও সার্বিক উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় কী প্রভাব পড়তে পারে বা নতুন কী সুযোগ ও সম্ভাবনা সৃষ্টি হতে পারে সে বিষয়ে বেসরকারি খাত বিশেষত রপ্তানিমুখী শিল্পের প্রতিনিধিদের মধ্যে এখন থেকেই প্রয়োজনীয় সচেতনতা বৃদ্ধির উদ্যোগ নিতে হবে।’
কর্মশালায় ‘এলডিসি গ্র্যাজুয়েশন’ শীর্ষক প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন যুগ্ম সচিব ও আলোচ্য প্রকল্পের কম্পোনেন্ট ম্যানেজার আনোয়ার হোসেন।
‘বেসরকারি খাতে অংশগ্রহণ’ শীর্ষক প্রবন্ধ তুলে ধরেন বিজনেস ইনিশিয়েটিভ লিডিং ডেভেলপমেন্ট (বিল্ড)-এর প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা ফেরদৌস আরা বেগম।
এসব প্রবন্ধে বাংলাদেশের এলডিসি উত্তরণ প্রক্রিয়া ও এর প্রভাব বিস্তারিতভাবে তুলে ধরা হয়।
কর্মশালায় আরও বক্তব্য দেন সিলেট সদর উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ্ব আশফাক আহমেদ, বারাকা পাওয়ার লিমিটেডের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ফাহিম আহমেদ চৌধুরী এবং শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের সহযোগী অধ্যাপক সুব্রত দাস।