বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

মূল্যস্ফীতি চড়া, কম খাচ্ছে মানুষ : সিপিডি

  •    
  • ২০ অক্টোবর, ২০২২ ১৩:১৭

সংস্থাটি বলছে, বর্তমানে রাজধানীতে বসবাসরত চার সদস্যের একটি পরিবারের মাসে খাদ্য ব্যয় ২২ হাজার ৪২১ টাকা। মাছ-মাংস বাদ দিলেও খাদ্যের পেছনে ব্যয় হবে ৯ হাজার ৫৯ টাকা। এটা ‘কম্প্রোমাইজড ডায়েট’ বা আপসের খাদ্যতালিকা।

দেশে মূল্যস্ফীতি লাগামহীন, শিগগিরই সমাধানের লক্ষণ নেই। পাশাপাশি অনেকেই খাদ্য ব্যয় কমিয়ে আনতে খাবারের তালিকা থেকে বাদ দিচ্ছেন মাছ-মাংসসহ বিভিন্ন আমিষ। এমনটি উঠে এসেছে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) গবেষণায়।

সংস্থাটি বলছে, বর্তমানে রাজধানীতে বসবাসরত চার সদস্যের একটি পরিবারের মাসে খাদ্য ব্যয় ২২ হাজার ৪২১ টাকা। মাছ-মাংস বাদ দিলেও খাদ্যের পেছনে ব্যয় হবে ৯ হাজার ৫৯ টাকা। এটা ‘কম্প্রোমাইজড ডায়েট’ বা আপসের খাদ্যতালিকা।

এ জন্য সব খাতে মজুরি বা বেতন বাড়ানোর সুপারিশ করেছে সংস্থাটি।

বৃহস্পতিবার সিপিডি আয়োজিত ‘বিশ্ব অর্থনীতিতে মন্দার আভাস এবং বাংলাদেশের চ্যালেঞ্জ : উত্তরণ কোন পথে?’ শীর্ষক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য তুলে ধরা হয়।

মূলপ্রবন্ধ তুলে ধরেন সিপিডির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন।

সিপিডি আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে মূল প্রবন্ধ তুলে ধরেন গবেষণা সংস্থাটির নির্বাহী পরিচালক ফাহমিদা খাতুন। ছবি: নিউজবাংলা

এ সময় সিপিডির গবেষণা পরিচালক ড. খন্দকার গোলাম মোয়াজ্জেম, সিনিয়র রিসার্চ ফেলো তৌফিকুল ইসলাম খান উপস্থিত ছিলেন।

মূলপ্রবন্ধে মূল্যস্ফীতি, জ্বালানি ও বিদ্যুৎ ও বহিঃখাত এ তিনটি বিষয় তুলে ধরা হয়।

মূল্যস্ফীতি কমার লক্ষণ নেই

সেখানে বলা হয়, সারা বিশ্বে মূল্যস্ফীতি ঐতিহাসিক (ভয়াবহ) অবস্থায় চলে গেছে। বিশ্ব অর্থনীতিতে মন্দার আভাস দেখা দিচ্ছে৷ বাংলাদেশ এর বাইরে নয়।’

খাদ্যসংকটের আভাস স্পষ্ট। এ জন্য স্বল্প, মধ্য এবং দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা দরকার বলে মনে করে সিপিডি।

প্রতিবেদনে বলা হয়, মূল্যস্ফীতির লাগামহীন অবস্থা। দরিদ্র ও নিম্ন আয়ের মানুষ কঠিন অবস্থার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। শুধু আমদানি পণ্য নয়, দেশে উৎপাদিত পণ্যর দামও বেশি। এটা কমার কোনো লক্ষণ নেই।

খাদ্য ও খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি দুইটি কাছাকাছি অবস্থান করছে। তবে বাজারের চিত্রে দেখা যায় পণ্যমূল্য প্রকৃত মূল্যের চেয়ে অনেক বেশি। এ জন্য প্রকৃত অবস্থার পরিপ্রেক্ষিতে মূল্যস্ফীতি নির্ধারণ করা উচিত।

বর্তমানে রাজধানী ঢাকায় চারজনের একটি পরিবারে ২২ হাজার ৪২১ টাকা খাদ্যের পেছনে ব্যয় হবে। মাছ-মাংস বাদ দিলেও ৯ হাজার ৫৯ টাকা লাগবে। এটা কম্প্রোমাইজ ডায়েট বা আপসের খাদ্যতালিকা।

বেতন প্রতিবছর ৫ শতাংশ বাড়লেও সেটা ব্যয়ের তুলনায় অনেক কম৷

২৯টি নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসপত্রে করহার অনেক বেশি। এ জন্য এটার প্রভাব পড়ছে মূল্যস্ফীতির ওপর। ১০ থেকে ৯০ শতাংশ কর রয়েছে। এটা কমানো গেলে মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমত।

আমদানি খরচ বেশি। এ জন্য আমদানিতে বিকল্প বাজার দেখতে হবে। পণ্য আনতে গেলে ভারত ছাড়া সব দেশ থেকে খরচ বেশি৷

দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে বাংলাদেশ স্বাস্থ্যসেবায় ব্যক্তি পকেট থেকে ব্যয় করে বেশি৷ সরকার খরচ করে কম।

জ্বালানির চিত্র

বিশ্ববাজারের জ্বালানির ভুক্তভোগী আমরা। কিছুদিন আগে মূল্য দিয়ে জ্বালানি পাওয়া গেলেও এখন সেটাও পাওয়া যাচ্ছে না। লোডশেডিং ৮ ঘণ্টা পর্যন্ত হচ্ছে। এতে উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে।

বিশ্বের উন্নয়নশীল সব দেশ জ্বালানি আমদানি করে। ডলার-সংকটের কারণে আগস্ট থেকে অক্টোবর জ্বালানি আমদানি কমেছে। এ জন্য সরবরাহে ঘাটতি দেখা গেছে।

সাধারণত ৬০ দিনের জ্বালানি মজুত রাখা হয়৷ কিন্তু আমাদের ডিজেল ৬১ দিন, অকটেন ১৯ দশমিক ৬ দিন, পেট্রল ৩৮ দশমিক ৪ দিন, ফার্নেস ওয়েল ২৭ দশমিক ৯ দিনের মজুত আছে।

বিপিসির হাতে ২৩ হাজার কোটি টাকা আছে। টাকা একদম নেই বিষয়টা তেমন নয়। এ জন্য জ্বালানি তেলের দর পুনর্বিবেচনার দাবি জানান তারা। জ্বালানি তেলের ঘাটতি মেটাতে নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে বিনিয়োগ বাড়াতে হবে।

রিজার্ভ কমছেই

বাংলাদেশ ব্যাংকে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ এখন ৩৬ দশমিক ৩ বিলিয়ন ডলার। এটা দিয়ে আমদানি ব্যয় কীভাবে মেটানো হবে? কারণ সামনের দিনে ডলার-সংকটে খাদ্য আমদানি চ্যালেঞ্জের মুখে পড়তে পারে।

ডলার বাজারের যে অবস্থা সরকার কি খাদ্য আমদানি করবে নাকি অন্য খরচ মেটাবে, এটা নিয়ে সংশয় দেখা দিচ্ছে।

আইএমএফের হিসাবে এটা প্রকৃত রিজার্ভ নয়। কারণ, এর থেকে ৭ দশমিক ২ বিলিয়ন ডলার বিভিন্ন ব্যয় বাবদ বাদ দিতে হবে। এ জন্য আইএফএফ থেকে ঋণ নেয়া হচ্ছে। কিন্তু সেখানে যে শর্ত জুড়ে দেয়া হয়েছে সেগুলো স্পষ্টভাবে উল্লেখ থাকা সরকার।

সাত সংকট চিহ্নিত

সিপিডি বলছে, ডলার-সংকট, জ্বালানির দর, মূল্যস্ফীতির পারদ, খাদ্য-সংকটের শঙ্কা, জলবায়ু পরিবর্তন, যুদ্ধ ও করোনা এই সাতটি সংকট বিদ্যমান।

সিপিডির সুপারিশ

বলা হয়, পণ্য আমদানিতে কর রেয়াতের সুযোগ রয়েছে। এককভাবে বা কয়েকজন মিলে বাজার নিয়ন্ত্রণ করে৷ এটা ভেঙে দেয়ার কোনো উদ্যোগ নেয়া হয় না৷

মিনিমাম বেতন বাড়ানোর পদক্ষেপ নিতে হবে। আয় কমে যাওয়ার কারণে জীবনযাত্রায় ধস নেমেছে।

খাদ্য-সংকটের আশঙ্কার কারণে উৎপাদন বাড়াতে হবে। সারের উচ্চমূল্যের কারণে এটাতে ভর্তুকি দিতে হবে।

বিদ্যুৎ ও জ্বালানিতে স্বল্পমেয়াদি ও দীর্ঘমেয়াদি সমস্যা রয়েছে। নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে বরাদ্দ বাড়াতে হবে।

এ বিভাগের আরো খবর