অবশেষে মূল্যস্ফীতির হালনাগাদ তথ্য আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করেছে সরকার। এই প্রথম অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ ও স্পর্শকাতর এই সূচকের দুই মাসের তথ্য একসঙ্গে প্রকাশ করল বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরো-বিবিএস।
আর তাতে 'চোখ কপালে ওঠা'র মতো অবস্থা হয়েছে। সরকারি হিসাবেই আগস্ট ও সেপ্টেম্বর দুই মাসেই পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে (মাসওয়ারি বা মাসভিত্তিক) মূল্যস্ফীতির পারদ ৯ শতাংশের ওপরে ওঠেছে। আগস্টে মূল্যস্ফীতি বেড়ে ৯ দশমিক ৫২ শতাংশে উঠেছিল; সেপ্টেম্বরে তা সামান্য কমে ৯ দশমিক ১০ শতাংশে নেমেছে।
আগস্টে খাদ্য মূল্যস্ফীতি ১১ বছর ৩ মাস পর প্রায় ১০ শতাংশের ঘরে, ৯ দশমিক ৯৪ শতাংশ (দুই অঙ্ক, ডাবল ডিজিট) উঠেছিল। সেপ্টেম্বরে অবশ্য তা ৯ দশমিক শূন্য আট শতাংশে নেমে এসেছে।
বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) মূল্যস্ফীতির এ হিসাব মঙ্গলবার একনেকের সভা শেষে সংবাদ সম্মেলনে প্রকাশ করেন পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান।
বিবিএসের হিসাবে আগস্টে দেশে সার্বিক মূল্যস্ফীতি যেখানে পৌঁছেছে, তা গত ১১ বছর ৫ মাসের মধ্যে সর্বোচ্চ। আগস্টে মূল্যস্ফীতি অনেক বেড়ে যাওয়ায় এ তথ্য এত দিন প্রকাশ করা হয়নি। সেপ্টেম্বরে এসে মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমে যাওয়ায় সরকারের পক্ষ থেকে আনুষ্ঠানিকভাবে একসঙ্গে দুই মাসের মূল্যস্ফীতির তথ্য প্রকাশ করা হলো।
মূল্যস্ফীতির তথ্য প্রকাশ করতে গিয়ে পরিকল্পনামন্ত্রী বলেন, ‘সার্বিক পরিস্থিতির কারণে দেশে মূল্যস্ফীতি বাড়ছে। আন্তর্জাতিক বাজারে সব পণ্যের দাম বেড়ে গেছে। তবে এখন মূল্যস্ফীতি কমতির দিকে। সামনে তা আরও কমবে।’
প্রকাশিত তথ্যে দেখা যায়, আগস্টে মূল্যস্ফীতি সাড়ে ১১ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ পর্যায়ে উঠে গেলেও সেপ্টেম্বরে তা কিছুটা কমেছে। গত মাস শেষে দেশে সার্বিক মূল্যস্ফীতি দাঁড়িয়েছে ৯ দশমিক ১০ শতাংশ। এ নিয়ে পরপর দুই মাস মূল্যস্ফীতি ৯ শতাংশের ওপরে রয়েছে। জুলাইয়ে দেশে মূল্যস্ফীতি ছিল ৭ দশমিক ৪৮ শতাংশ।
বাংলাদেশে মূল্যস্ফীতির প্রকৃত তথ্য নিয়ে বরাবরই প্রশ্ন উঠেছে। অর্থনীতিবিদরা বলেছেন, বিবিএস মূল্যস্ফীতির যে তথ্য প্রকাশ করে, বাজারে তার প্রতিফলন দেখা যায় না। বাস্তবে, মূল্যস্ফীতির হার আরও বেশি। এবার যখন মূল্যস্ফীতির তথ্য প্রকাশ করতে দেরি হচ্ছিল, তখন সেই প্রশ্ন আরও জোরেসোরে উচ্চারিত হচ্ছিল। তথ্য-উপাত্ত নিয়ে এক ধরনের রাজনীতি করা হচ্ছে বলে আগের মতোই অভিযোগ করেছিলেন অর্থনীতিবিদরা।
গত মার্চ মাসে এক সংবাদ সম্মেলনে গবেষণা সংস্থা সাউথ এশিয়ান নেটওয়ার্ক অন ইকোনমিক মডেলিং (সানেম) তথ্য-উপাত্ত তুলে ধরে বলেছিল, পরিসংখ্যান ব্যুরো দেশে মূল্যস্ফীতির যে তথ্য প্রকাশ করে, প্রকৃত হার তার দ্বিগুণের চেয়ে বেশি। সানেম ওই সময় বলেছিল, শহর এলাকায় সার্বিক মূল্যস্ফীতির হার ১২ দশমিক ৪৭ শতাংশ। গ্রামে এই হার ১২ দশমিক ১০ শতাংশ।
আরেক গবেষণা সংস্থা সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) সম্মানীয় ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্যও ওই সময় বলেছিলেন, দেশে প্রকৃত মূল্যস্ফীতি বিবিএসের তথ্যের দ্বিগুণেরও বেশি।
সে সময় বিবিএসের তথ্যে বলা হয়েছিল, ফেব্রুয়ারি মাসে দেশে সার্বিক মূল্যস্ফীতি হয়েছিল ৬ দশমিক ১২ শতাংশ।
এবার খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতিও বাড়ছে
পরিসংখ্যান ব্যুরোর তথ্য ঘেঁটে দেখা যায়, পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে জুলাই মাসে খাদ্যবহির্ভূত মূল্যস্ফীতি হয়েছিল ৬ দশমিক ৩৯ শতাংশ। আগস্টে তা ৮ দশমিক ৮৫ শতাংশে ওঠে। সেপ্টেম্বরে তা আরও বেড়ে ৯ দশমিক ১৩ শতাংশে উঠেছে। জুলাইয়ে গ্রামে মূল্যস্ফীতি হয়েছিল ৮ দশমিক শূন্য দুই শতাংশ। আগস্টে তা বেড়ে ৯ দশমিক ৭০ শতাংশে উঠেছিল। সেপ্টেম্বরে অবশ্য কিছুটা কমে ৯ দশমিক ১৩ শতাংশে নেমেছে। গ্রামে সেপ্টেম্বর মাসে খাদ্য মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৮ দশমিক ৯৫ শতাংশ। আগস্টে উঠেছিল ৯ দশমিক ৯৮ শতাংশ।
শহর এলাকায় সেপ্টেম্বরে সার্বিক মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৯ দশমিক শূন্য তিন শতাংশ। আগস্টে হয়েছিল ৯ দশমিক ১৮ শতাংশ। শহরে সেপ্টেম্বরে খাদ্য মূল্যস্ফীতি হয়েছে ৯ দশমিক ৩৬ শতাংশ। আগস্টে এই হার উঠেছিল ৯ দশমিক ৮৫ শতাংশে।
জ্বালানি তেলের মূল্যবৃদ্ধি উস্কে দিয়েছে মূল্যস্ফীতি
আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলসহ সব ধরনের খাদ্যপণ্যের দাম বেড়ে যাওয়ায় কয়েক মাস ধরেই দেশে মূল্যস্ফীতি বৃদ্ধির প্রবণতা ছিল। ঠিক এ রকম এক সময়ে গত ৫ আগস্ট সরকার জ্বালানি তেলের দাম ৪২ থেকে ৫১ শতাংশ পর্যন্ত বৃদ্ধি করে। ডিজেলের দাম লিটারে ৩৪ টাকা, অকটেনের দাম লিটারে ৪৬ টাকা ও পেট্রলের দাম লিটারে ৪৪ টাকা বাড়ানো হয়। এর আগে বাংলাদেশের ইতিহাসে এক লাফে জ্বালানি তেলের দাম এত বাড়ানো হয়নি।
এর পরপরই সব ধরনের পরিবহন ভাড়া বাড়ানো হয়। এই দুইয়ের প্রভাবে বেড়ে যায় প্রায় সব পণ্যের দাম। এরপর গত ২৯ আগস্ট খানিকটা মুখ রক্ষা করতে জ্বালানি তেলের দাম ৫ টাকা কমায় সরকার। তবে তাতে বাজারে খুব একটা প্রভাব দেখা যায়নি; বরং এর সামগ্রিক প্রভাবে খাদ্যপণ্য ছাড়াও যাতায়াত, পোশাক-আশাক, শিক্ষাসামগ্রীসহ খাদ্যবহির্ভূত পণ্যের দামও বেশ বেড়ে যায়। তখন থেকেই আগস্টে মূল্যস্ফীতি আরও বৃদ্ধির শঙ্কা করা হচ্ছিল। একাধিক অর্থনীতিবিদের প্রাক্কলন ছিল মূল্যস্ফীতি ১০ শতাংশ ছাড়িয়ে যেতে পারে।
সাধারণত প্রথম সপ্তাহেই আগের মাসের মূল্যস্ফীতির তথ্য তৈরি করে পরিসংখ্যান ব্যুরো। সেই ধারাবাহিকতায় সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে মূল্যস্ফীতির তথ্য তৈরি করে পরিকল্পনা মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়ে দেয় বিবিএস। কিন্তু সরকারের উচ্চপর্যায়ের ‘সবুজ সংকেত’ পাওয়া যায়নি। ফলে মূল্যস্ফীতির আগস্টের তথ্য প্রকাশ করেনি পরিকল্পনা মন্ত্রণালয় বা পরিসংখ্যান ব্যুরো। এরই মধ্যে সেপ্টেম্বর মাসও শেষ হয়ে গেছে। কিন্তু কোনো মাসের তথ্যই প্রকাশ করা হচ্ছিল না।
এ নিয়ে প্রশ্ন উঠেছিল। ‘মূল্যস্ফীতি অনেক বেড়েছে বলেই বিবিএস সেই তথ্য প্রকাশ করছে না’ শিরোনামে গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হচ্ছিল। অর্থনীতিবিদরাও একই কথা বলছিলেন। অবশেষে মঙ্গলবার দুই মাসের তথ্য একসঙ্গে প্রকাশ করলেন পরিকল্পনামন্ত্রী মান্নান।
টানা দুই মাস ৯ শতাংশের বেশি মূল্যস্ফীতি প্রসঙ্গে পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী শামসুল আলম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘জ্বালানি তেলের দাম একসঙ্গে বেশ খানিকটা বাড়ানোর ফলে সবকিছুর ওপর এর প্রভাব পড়েছিল। সে কারণে আগস্টে মূল্যস্ফীতি অনেকটা বেড়ে গিয়েছিল। তবে সরকারের নেয়া নানা পদক্ষেপের কারণে সেপ্টেম্বরে তা নিম্নমুখী হয়েছে। এরই মধ্যে বিশ্ববাজারে খাদ্যপণ্যসহ সব পণ্যের দাম কমতে শুরু করেছে। স্বল্প আয়ের মানুষকে কম দামে খাদ্য দিচ্ছি আমরা। এ ছাড়া বাজার সহনীয় রাখতে তদারকি ব্যবস্থা জোরদার করা হয়েছে। আশা করছি, এখন মূল্যস্ফীতি নিম্নমুখী থাকবে।’
বিবিএসের তথ্য অনুযায়ী, দেশে মূল্যস্ফীতির হার এখন ৯ দশমিক ১০ শতাংশ। এর অর্থ হলো গত বছরের সেপ্টেম্বরে দেশের মানুষ যে পণ্য বা সেবা ১০০ টাকায় পেয়েছিলেন, এ বছরের সেপ্টেম্বরে তা কিনতে ১০৯ টাকা ১০ পয়সা খরচ করতে হয়েছে। আগস্টে একই পরিমাণ পণ্য কিনতে তাদের লেগেছিল ১০৯ টাকা ৫০ পয়সা।
শুধু বাংলাদেশ নয়, সব দেশেই চড়ছে মূল্যস্ফীতির পারদ
শুধু বাংলাদেশ নয়, পৃথিবীর সব দেশের অর্থনীতির উদ্বেগজনক ও স্পর্শকাতর সূচক এখন মূল্যস্ফীতি। বিশ্বের সবচেয়ে শক্তিধর অর্থনীতির দেশ যুক্তরাষ্ট্রের মূল্যস্ফীতি ৪০ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ উচ্চতায় উঠে ৯ শতাংশে পৌঁছেছে। গত জুলাইয়ে দেশে সার্বিক মূল্যস্ফীতির হার ছিল ৭ দশমিক ৪৮ শতাংশ। এক মাসের ব্যবধানে সেটা আড়াই শতাংশ পয়েন্টের মতো বেড়ে আগস্টে ৯ দশমিক ৫০ শতাংশে উঠেছিল। সেপ্টেম্বরে তা কমে ৯ দশমিক ১ শতাংশে নেমে এসেছে।
রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের ধাক্কায় বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলসহ সব ধরনের পণ্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির কারণে বিশ্বের বিভিন্ন দেশের মতো সাম্প্রতিক মাসগুলোতে বড় ধরনের মূল্যস্ফীতি হয়েছে বাংলাদেশে। চলতি বছরের মে মাসে পয়েন্ট টু পয়েন্ট ভিত্তিতে মূল্যস্ফীতি বেড়ে হয় ৭ দশমিক ৪২ শতাংশ। জুনে তা আরও ৭ দশমিক ৫৬ শতাংশ ওঠে; যা ছিল ৯ বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ। পরের মাস জুলাইয়ে সেটি সামান্য কমে হয় ৭ দশমিক ৪৮ শতাংশ।
আগস্ট মাসের মূল্যস্ফীতির তথ্য নিয়ে নীতিনির্ধারক, অর্থনীতিবিদ, গবেষকসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের মধ্যে বেশ আগ্রহ ছিল। কারণ জ্বালানি তেলের দাম বাড়লে মূল্যস্ফীতি বেড়ে যায়। অর্থনীতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়ে।
বেসরকারি গবেষণা প্রতিষ্ঠান পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরআই) নির্বাহী পরিচালক আহসান এইচ মনসুর এ নিয়ে নিউজবাংলাকে বলেন, ‘যখন মূল্যস্ফীতির তথ্য প্রকাশে দেরি হয়, তখন সরকারের তথ্য-উপাত্ত নিয়ে প্রশ্ন ওঠে। সাধারণত প্রথম সপ্তাহেই মূল্যস্ফীতির তথ্য তৈরি হয়ে যায়। তাহলে দুই মাস পার হয়ে গেলেও দেশবাসী মূল্যস্ফীতির কোনো তথ্য পাবে না কেন? যা হোক, শেষ পর্যন্ত পাওয়া গেল।’
তিনি বলেন, ‘তথ্য-উপাত্ত নিয়ে রাজনৈতিকীকরণ বন্ধ হওয়া উচিত। কারণ তথ্য-উপাত্ত দিয়ে নীতি ঠিক করা হয়। দুঃখজনক হলেও সত্য, দেশে তথ্য-উপাত্ত নিয়ে কারসাজি করা হচ্ছে, তথ্য ঢেকে রাখা হচ্ছে। ৯-১০ শতাংশ মূল্যস্ফীতি যা-ই হোক না কেন, যথাসময়ে সেটা প্রকাশ করা উচিত।’
গত কয়েক মাসের মূল্যস্ফীতির তথ্য প্রকাশের সময়কাল বিশ্লেষণ করে দেখা গেছে, কোনো মাসের মূল্যস্ফীতি কমলে পরের মাসের প্রথম সপ্তাহেই তা প্রকাশ করা হয়। আবার বাড়লে মূল্যস্ফীতির তথ্য প্রকাশে পরের মাসের তৃতীয় বা চতুর্থ সপ্তাহ পর্যন্ত অপেক্ষা করতে হয়। যেমন গত মে ও জুনে মূল্যস্ফীতির হার ৭ শতাংশের বেশি ছিল। মে মাসে ছিল ৭ দশমিক ৪২ শতাংশ এবং জুনে ৭ দশমিক ৫৬ শতাংশ। ওই দুই মাসের তথ্য আনুষ্ঠানিকভাবে প্রকাশ করা হয় পরের মাসের ১৯ তারিখে। আবার গত জুলাইয়ে মূল্যস্ফীতি কিছুটা কমে ৭ দশমিক ৪৮ শতাংশ হয়। আর জুলাইয়ের মূল্যস্ফীতির সেই তথ্য প্রকাশ করা হয় দ্রুতগতিতে, আগস্টের ৩ তারিখে।
দেশের প্রায় সব ধরনের তথ্য-উপাত্ত প্রকাশ করার একমাত্র সংস্থা বিবিএস। আট-দশ বছর আগে বিবিএস আনুষ্ঠানিকভাবে সংবাদ সম্মেলন করে মূল্যস্ফীতির তথ্য প্রকাশ করত। বিবিএসের পরিবর্তে এখন পরিকল্পনামন্ত্রী নিজে মূল্যস্ফীতির তথ্য সাংবাদিকদের জানান। মূলত বর্তমান অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালই পরিকল্পনামন্ত্রীর দায়িত্ব পালনকালে নিজেই মূল্যস্ফীতির তথ্য সাংবাদিকদের আনুষ্ঠানিকভাবে জানাতে শুরু করেছিলেন। আবার ২০১৭ সালে মূল্যস্ফীতি টানা বাড়তে থাকলে আ হ ম মুস্তফা কামাল প্রতি মাসের পরিবর্তে তিন মাস পরপর মূল্যস্ফীতির তথ্য প্রকাশের উদ্যোগ নিয়েছিলেন। পরে মূল্যস্ফীতি কমতে শুরু করলে আবারও মাসিক ভিত্তিতে মূল্যস্ফীতির তথ্য প্রকাশ শুরু হয়েছিল।
লাগাম টানতে দেশে দেশে নানা উদ্যোগ
মূল্যস্ফীতি এখন সারা বিশ্বেরই সবচেয়ে বড় সমস্যা। বিশ্বব্যাপী সব ধরনের অর্থনৈতিক নীতি নেয়া হচ্ছে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণকে কেন্দ্র করে। যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় ব্যাংক ফেডারেল রিজার্ভ বা ফেড মূল্যস্ফীতি কমাতে আগ্রাসীভাবে নীতি সুদের হার বাড়াচ্ছে। মূল্যস্ফীতি কমাতে মন্দাকে পর্যন্ত ডেকে আনা হচ্ছে।
এ নিয়ে এখন বিশ্বব্যাপী চলছে প্রবল বিতর্ক। বিশ্বব্যাংক সতর্ক করে দিয়ে বলেছে, সবাই যদি সমন্বিতভাবে মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণের কাজটি না করে, তাহলে মন্দার চেয়েও খারাপ অবস্থা হতে পারে। দেখা দিতে পারে স্ট্যাগফ্লেশন বা বদ্ধস্ফীতি। অর্থাৎ মূল্যস্ফীতি আদৌ কমল না, অথচ প্রবৃদ্ধি কমে গেল ভয়াবহভাবে।
‘এ পরিস্থিতিতে মূল্যস্ফীতির সঠিক তথ্য প্রকাশ করা উচিত’ মন্তব্য করে অর্থনীতিবিদ আহসান মনসুর বলেন, ‘মূল্যস্ফীতির তথ্য দিয়ে নীতি ঠিক করা দরকার। মূল্যস্ফীতির বাস্তব তথ্য না থাকলে এর বিরুদ্ধে যুদ্ধ করব কীভাবে। আমানত ও ঋণের সুদের হার মূল্যস্ফীতি দিয়ে ঠিক করা উচিত। মুদ্রাবাজারে স্থিতিশীলতা আনতেও মূল্যস্ফীতির সঠিক তথ্য দরকার।’