২০২৩ সালের ডিসেম্বর বা পরের বছরের জানুয়ারিতে হতে যাওয়া দ্বাদশ জাতীয় নিবার্চন অবাধ ও সুষ্ঠু হবে বলে আশাবাদী ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্রের রাষ্ট্রদূত পিটার হাস।
বুধবার বিকেলে রাজধানীর একটি হোটেলে আমেরিকান চেম্বার অফ কমার্স ইন বাংলাদেশ (অ্যামচেম) আয়োজিত সভায় তিনি এ কথা বলেন।
বাংলাদেশের রাজনীতি নিয়ে কারও প্রতি কোনো পক্ষপাত নেই জানিয়ে হাস বলেন, ‘যুক্তরাষ্ট্র কোনো নির্দিষ্ট দলকে সমর্থন করে না।’
ভবিষ্যতে যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশের সম্পর্ক আরও গভীর হবে বলেও আশাবাদী তিনি।
ইউএস- বাংলাদেশ দ্বিপক্ষীয় সম্পর্ক: ব্যবসা ও বাণিজ্য সম্প্রসারণই চাবিকাঠি’ শীর্ষক আলোচনায় সভায় মূল বক্তব্য রাখেন পিটার হাস। বক্তব্য রাখেন অ্যামচেম সভাপতি সৈয়দ এরশাদ আহমেদ ও সহসভাপতি সৈয়দ মোহাম্মদ কামাল সহ আমন্ত্রিত অতিথিরা।
যুক্তরাষ্ট্রের দূত যুক্তরাষ্ট্র-বাংলাদেশ সম্পর্কে পাঁচটি লক্ষ্য তুলে ধরেন।
এগুলো হলো- শান্তিপূর্ণ ও স্থিতিশীল বাংলাদেশ; গণতন্ত্র, সুশাসন ও মানবাধিকার; সামাজিক ও পরিবেশগতভাবে সহনশীলতা; রোহিঙ্গা শরণার্থীদের দেশে ফিরতে সহায়তা করা এবং অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগ সম্প্রসারণ।
পিটার হাস বলেন, ‘শান্তিপূর্ণ নিরাপদ বাংলাদেশ দেখতে যুক্তরাষ্ট্রের আগ্রহ বেশি। বাংলাদেশের সঙ্গে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক সম্পর্ক বিরাজমান। বাংলাদেশের সশস্ত্রবাহিনীর উন্নয়নে দুই দেশের মধ্যে সম্পর্ক জোরদার হচ্ছে।’
জলবায়ু পরিবর্তনের অভিঘাত নিয়েও কথা বলেন তিনি। বলেন, ‘বেসরকারি খাত জলবায়ু পরিবর্তনের চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সম্পৃক্ত হচ্ছে। বাংলাদেশের ৪ কোটি মানুষ দারিদ্র্য দশা থেকে বেরিয়ে আসার চেষ্টা করছে।’
স্বল্প আয়ের দেশ থেকে উত্তরণ হলে বাংলাদেশের বিপুল পরিমাণ বিদেশি বিনিয়োগ (এফডিআই) প্রয়োজন-এটিও স্মরণ করিয়ে দেন হাস। আর এই বিদেশি বিনিয়োগ আকর্ষণে প্রাতিষ্ঠানিক উন্নয়নের ওপর জোর দেন তিনি।
এক প্রশ্নের জবাবে পিটার হাস বলেন, যুক্তরাষ্ট্রের বিনিয়োগকারীরা কোনো দেশে বিনিয়োগ করার আগে সুশাসন, সহজ ব্যবসা পরিবেশ, দক্ষ শ্রমশক্তির সহজলভ্যতা ও মুনাফা- এসব বিষয় বিবেচনা করে থাকে।
তিনি বলেন, নানা প্রতিকূলতার মধ্যেও মানবিক কারণে মিয়ানমারের রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীকে বাংলাদেশ আশ্রয় দিয়েছে। এখন তাদের নিরাপদে দেশে ফিরে যাওয়া নিজে কাজ চলছে। যুক্তরাষ্ট্র এই রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী শিক্ষা, স্বাস্থ্য ও নিরাপত্তার বিষয়ে সহযোগিতা করছে।
অনুষ্ঠানে সাবেক স্বারাষ্ট্রমন্ত্রী মহিউদ্দিন খান আলমগীর, ফরেন ইনভেস্টরস চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের (এফআইসিসিআই) সাবেক সভাপতি রূপালী চৌধুরী, ইংরেজি দৈনিক দি ডেইলি স্টার সম্পাদক মাহফুজ আনাম, প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান, পলিসি রিসার্চ ইনস্টিটিউটের (পিআরই) চেয়ারম্যান জাইদী সাত্তার, সেন্টার ফর পলিসি ডায়ালগের (সিপিডি) বিশেষ ফেলো দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য, নিট পোশাক মালিকদের সংগঠন বিকেএমইএ-র সাবেক সভাপতি ফজলুল হক, সাবেক রাষ্ট্রদূত এম হুমায়ন কবির, প্রধানমন্ত্রীর সাবেক মুখ্যসচিব আবুল কালাম আজাদ, বিনিয়োগ উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিডা) নির্বাহী চেয়ারম্যান লোকমান হোসেন মিয়াও অংশ নেন।