এক করপোরেট উদ্যোক্তা শেয়ার বিক্রির ঘোষণা দেয়ার পর পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত পেপার প্রসেসিং অ্যান্ড প্যাকেজিংয়ের শেয়ারদর হঠাৎ করে বেড়ে যাওয়ার বিষয়টি তদন্ত করতে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ বা ডিএসইকে নির্দেশ দিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি।
এ বিষয়ে বিএসইসির পক্ষ থেকে ডিএসইর ব্যবস্থাপনা পরিচালক বরাবর চিঠি দেয়া হয়েছে।
বৃহস্পতিবার কমিশনের নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র রেজাউল করিম নিউজবাংলাকে বিষয়টি জানিয়েছেন।
পেপার প্রসেসিংয়ের শেয়ারদর গত ১০ আগস্ট থেকে ২৫ তারিখের মধ্যে ৫৫ শতাংশ বেড়ে যায়। এরপর বিষয়টি নজরে আসে বিএসইসির।
এই ১০ কর্মদিবসে শেয়ারদর ১৭৫ টাকা ৫০ পয়সা থেকে ২৭২ টাকা হয়ে যায়।
এই দর বৃদ্ধির সময় কোম্পানিটির করপোরেট উদ্যোক্তা বাংলাদেশ ডেভেলপমেন্ট গ্রুপ ৪ লাখ ৩৬ হাজার শেয়ার বিক্রি করেছে।
এই বিক্রির ঘোষণা আসে গত ১৯ জুলাই। আর শেয়ারদর লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ার পর ৬ সেপ্টেম্বর জানানো হয়েছে, শেয়ার বিক্রি হয়েছে।
কিন্তু এই সময়ের মধ্যে দাম বাড়ার মতো মূল্য সংবেদনশীল কোনো তথ্য ছিল না কোম্পানিটির।
অবশ্য শেয়ারদর গত কয়েক দিনে অনেকটাই কমে এসেছে। বৃহস্পতিবার শেয়ারদর ছিল ২২২ টাকা ২০ পয়সা। এক দিনে কমেছে ১৪ টাকার বেশি।
পেপার প্রসেসিং অ্যান্ড প্যাকেজিং লিমিটেডে দেশের পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত হয় ১৯৯০ সালে। তবে সিকিউরিটিজ আইন না মানার কারণে ২০০৯ সালে এটিকে ওটিসিতে পাঠানো হয়।
কোম্পানিটি গত বছর ওভার দ্য কাউন্টার মার্কেট বা ওটিসিটে ফিরে এসেছে। ফিরে আসার পরই স্বল্প মূলধনি কোম্পানিটির শেয়ার অস্বাভাবিক হারে বাড়তে থাকে।
ওটিসি মার্কেটে সবশেষ দর ছিল ১৬ টাকা। ২০২১ সালের ১৩ মার্চ প্রথম দিন ১৭ টাকা ৬০ পয়সায় লেনদেন হওয়ার পর প্রতিদিনই দর বাড়তে থাকে।
গত বছরের আগস্টেও স্বল্প মূলধনি এই কোম্পানিটির শেয়ারদর অস্বাভাবিক হারে বেড়ে গিয়েছিল। ওই সময় ১০ টাকার শেয়ার ৩১৩ টাকা পর্যন্ত হয়ে যায়।
ওই বছর স্বল্প মূলধনি কোম্পানিগুলোর শেয়ারদর এভাবে বাড়ার কারণ অনুসন্ধানে বিএসইসি কমিটি গঠন করার পর দর কমে আসে। গত ২৮ জুলাই শেয়ারদর ১৬০ টাকার নিচে নেমে আসে। ৩১ জুলাই থেকে শুরু হয় উত্থান।
মূল মার্কেটে ফেরার পর কোম্পানিটি ২০২১ সালে শেয়ারপ্রতি এক টাকা লভ্যাংশ দিয়েছে।
১৪ কোটি টাকা পরিশোধিত মূলধনের কোম্পানিটির শেয়ার সংখ্যা ১ কোটি ৪ লাখ ৪৯ হাজার ৬০০টি। অভিযোগ আছে, শেয়ার সংখ্যা কম হওয়ার সুযোগ নিয়ে প্রায়ই কারসাজি করে দাম বাড়ানো যায়।
সম্প্রতি তিনজন উদ্যোক্তা-পরিচালক ৯ লাখ ৩৬ হাজার ৯৮০টি শেয়ার বিক্রির আগ পর্যন্ত কোম্পানিটিতে উদ্যোক্তা-পরিচালকদের হাতে ছিল ৩৫ শতাংশ শেয়ার। প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীর হাতে আছে দশমিক ৫৪ শতাংশ আর সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে ৬৪ দশমিক ৪৬ শতাংশ।
বৃহস্পতিবার এই কোম্পানির বাজার মূলধন ছিল ২৪৬ কোটি ৯২ লাখ টাকা। কোম্পানির রিজার্ভের পরিমাণ ১৮ কোটি ৭৮ লাখ টাকা।