অগ্রাধিকারমূলক শিল্পে নিরাপদ কর্মপরিবেশ নিশ্চিত করতে শ্রমিকদের সুরক্ষায় যৌথভাবে কাজ করবে বাংলাদেশের ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই ও আন্তর্জাতিক শ্রম সংস্থা (আইএলও)।
বুধবার বিকেলে এফবিসিসিআই কার্যালয়ে এ-সংক্রান্ত চুক্তি সই হয়।
চুক্তির আওতায় অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ১০টি শিল্প খাতের কর্মপরিবেশ উন্নয়নে কার্যক্রম নেয়া হবে। পেশাগত স্বাস্থ্য ও কর্মক্ষেত্রে নিরাপত্তা বিধানে সাংগঠনিক পর্যায়ে (শিল্প খাতভিত্তিক মালিক সমিতি) এবং শিল্পপ্রতিষ্ঠানে সক্ষমতা তৈরি ও প্রচারণা কার্যক্রম নেয়া হবে। এ প্রকল্পে সহায়তা দেবে আইএলওর আরএমজি প্রোগ্রাম। অর্থায়ন করবে কানাডা ও নেদারল্যান্ডস সরকার।
প্রকল্পের মাধ্যমে ইলেকট্রনিক ও ইলেকট্রিক্যাল, রাসায়নিক, প্লাস্টিক, হালকা প্রকৌশল, চামড়া, খাদ্য প্রক্রিয়াজাতকরণ, আসবাব, প্রিন্টিং ও প্যাকেজিং, স্থানীয় বাজারকেন্দ্রিক তৈরি পোশাক ও স্টিল রি-রোলিং শিল্পে কাজের নিরাপদ পরিবেশ গড়ে তুলতে ১৫টি ইউনিট স্থাপন করা হবে।
এ ছাড়া ২ হাজার ৪০০ সেফটি প্রতিনিধি ও ১০০ সেফটি কমিটির মাধ্যমে শিল্প মালিক ও কর্মীদের মধ্যে কর্মক্ষেত্রের নিরাপত্তা ও পেশাগত স্বাস্থ্যবিষয়ক সচেতনতা ও সক্ষমতা বাড়ানো হবে।
অনুষ্ঠানে আইএলও বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর টুমো পৌটিআইনেন বলেন, ‘অগ্রাধিকারমূলক শিল্প খাতগুলোর নিরাপদ সংস্কৃতি চর্চাকে উন্নত করার প্রক্রিয়ায় এফবিসিসিআইয়ের সঙ্গে যুক্ত হতে পেরে আইএলও গর্বিত।
‘আশা করছি, আমাদের যৌথ প্রচেষ্টা এ দেশের কর্মক্ষেত্রে দুর্ঘটনা, হতাহতের ঘটনা ও রোগ প্রতিরোধে সহায়তা করবে এবং এর ফলে অসংখ্য জীবন রক্ষা পাবে।’
বাংলাদেশের শ্রম আইনে ৫০ অথবা এর বেশি কর্মী কাজ করে এমন সব প্রতিষ্ঠানে সমানসংখ্যক মালিক ও কর্মী প্রতিনিধি নিয়ে সেফটি কমিটি গঠনের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। আইএলও-এফবিসিসিআইয়ের যৌথ উদ্যোগের মাধ্যমে ৯০০ সেফটি কমিটির সদস্যদের অগ্নিনিরাপত্তা, পেশাগত সেফটি ও স্বাস্থ্যবিষয়ক সক্ষমতা বাড়ানো হবে। এর ফলে কমিটিগুলো তাদের কর্মক্ষেত্রের সেফটি ইস্যুগুলো আরও ভালোভাবে চিহ্নিত ও তদারক করতে পারবে।
চুক্তি স্বাক্ষর অনুষ্ঠানে এফবিসিসিআইয়ের সভাপতি মো. জসিম উদ্দিন বলেন, ‘কর্মীদের নিরাপত্তা আমাদের সর্বোচ্চ অগ্রাধিকার। শক্তিশালী ও কার্যকর সেফটি ইউনিট, সেফটি কমিটি ও সেফটি প্রতিনিধি তৈরিতে আইএলওর কারিগরি ও আর্থিক সহযোগিতায় এফবিসিসিআই এই প্রকল্প নিয়েছে। প্রাতিষ্ঠানিক পর্যায়ে উন্নত কর্মপরিবেশ ও স্বাস্থ্য নিশ্চিত হলে আমাদের কারখানা আরও নিরাপদ হবে, উৎপাদনশীলতাও বাড়বে। আর তা আমাদের জাতীয় অর্থনীতিকে সমৃদ্ধ করবে।’
অনুষ্ঠানে আরও উপস্থিত ছিলেন এফবিসিসিআইয়ের সিনিয়র সহসভাপতি মোস্তফা আজাদ চৌধুরী বাবু, সহসভাপতি মো. আমিন হেলালী, পরিচালকবৃন্দ ও এফবিসিসিআইয়ের সেফটি কাউন্সিলের উপদেষ্টা ব্রিগেডিয়ার জেনারেল (অব.) আবু নাঈম মো. শহীদুল্লাহ।
এর আগে গত মে মাসে আইএলওর আরএমজি প্রোগ্রাম ঢাকায় প্রথমবারের মতো ইন্ডাস্ট্রিয়াল সেফটি ফোরামের (আইএসএফ) আয়োজন করে। ওই অনুষ্ঠানে বাংলাদেশের সব শিল্প খাতে কর্মক্ষেত্রে সেফটি ও স্বাস্থ্যের উন্নয়নবিষয়ক আলোচনা হয়।
বিজিএমইএ ও বিকেএমইর সহায়তার এক হাজার আরএমজি সেফটি কমিটিকে অকুপেশনাল সেফটি অ্যান্ড হেলথ (ওএসএইচ), অগ্নিনিরাপত্তা ও কোভিড-১৯ গাইডলাইন বিষয়ে সক্ষমতা বাড়াতে কাজ করছে আইএলওর আরএমজি প্রোগ্রাম।