মহামারি করোনা ধাক্কা সামলাতে বাংলাদেশকে আরও ৩০ কোটি ডলার ঋণ দেবে বিশ্বব্যাংক। বর্তমান বিনিময় হার হিসাবে (প্রতি ডলার ৯৪ টাকা ৭০ পয়সা) টাকার অঙ্কে এই অর্থের পরিমাণ ২ হাজার ৮৪১ কোটি টাকা।
বাংলাদেশ সরকারের অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগ (ইআরডি) এবং বিশ্বব্যাংকের মধ্যে রোববার এ বিষয়ে একটি চুক্তি হয়েছে।
ইআরডি সচিব শরিফা খান ও বিশ্বব্যাংকের বাংলাদেশের কান্ট্রি ডিরেক্টর মার্সি টেম্বন চুক্তি সই করেন বলে বিশ্বব্যাংক ঢাকা অফিসের এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
করোনা সংকট মোকাবিলায় বাংলাদেশ এ অর্থ ব্যবহার করবে। ‘লোকাল গভর্নমেন্ট কোভিড-১৯ রেসপন্স অ্যান্ড রিকভারি’ প্রকল্পের আওতায় এই অর্থ খরচ হবে। স্থানীয় সরকার বিভাগের অধীন স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর প্রকল্পটি বাস্তবায়ন করবে। ২০২৫ সালের ডিসেম্বরের মধ্যে প্রকল্পের কাজ শেষ হবে।
বিশ্বব্যাংকের স্পেশাল ড্রয়িং রাইটসের (এসডিআর) মুদ্রায় এ ঋণ নেয়া হবে এবং পাঁচ বছরের গ্রেস পিরিয়ডসহ ৩০ বছরের মধ্যে ঋণ পরিশোধ করতে হবে। তবে উত্তোলিত ঋণের ওপর বার্ষিক শূন্য দশমিক ৭৫ শতাংশ হারে সার্ভিস চার্জ এবং এক দশমিক ২৫ শতাংশ হারে সুদ পরিশোধ করতে হবে।
প্রকল্পের আওতায় শহরাঞ্চলসহ আটটি বিভাগের প্রায় ৪ কোটি মানুষ উপকৃত হবেন। এটি মহামারি থেকে পুনরুদ্ধার করা এবং জলবায়ু পরিবর্তন, দুর্যোগ এবং রোগের প্রাদুর্ভাবসহ ভবিষ্যতের সংকটগুলোর জন্য প্রস্তুতি নিতে সহায়তা করবে।
এছাড়া ৩২৯টি পৌরসভা এবং ১০টি সিটি কর্পোরেশনে জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব, দুর্যোগ এবং ভবিষ্যতের রোগের প্রাদুর্ভাবের প্রশমন ও সতর্কতার জন্য গুরুত্বপূর্ণ নগর পরিষেবা এবং পরিকাঠামোর উন্নতির জন্য এ প্রকল্প থেকে তহবিল পাবে বাংলাদেশ।
বিশ্বব্যাংকের কান্ট্রি ডিরেক্টর মার্সি টেম্বন বলেন, 'বাংলাদেশ দ্রুত নগরায়ন হচ্ছে। জনসংখ্যার প্রায় ৩৬ শতাংশ শহরাঞ্চলে বসবাস করে। সিটি করপোরেশন এবং পৌরসভাগুলো মহামারি থেকে শহুরে দরিদ্রদের পুনরুদ্ধার করার পাশাপাশি ভবিষ্যতের ধাক্কা সামলাতে প্রস্তুত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করবে এই প্রকল্প। এছাড়া প্রকল্পটি স্থানীয় সরকার প্রতিষ্ঠানগুলোকে জলবায়ু-স্মার্ট নগরায়নের দিকে অগ্রসর হতে এবং ভবিষ্যতের ধাক্কায় স্থিতিস্থাপকতার জন্য প্রস্তুত করতে সঠিক ব্যবস্থা নিতে সাহায্য করবে।'
ইআরডি সচিব শরিফা খান বলেন, ‘দ্রুত এবং সক্রিয় পদক্ষেপের মাধ্যমে সরকার কোভিড-১৯ মহামারির প্রভাব মোকাবিলা করতে সক্ষম হয়েছে। আমাদের এ কার্যক্রম প্রকল্পটির মাধ্যমে আরও সহায়তা করবে। এছাড়া শহর এলাকায় ভবিষ্যতের যেকোনো ধাক্কা সামলে কর্মসংস্থান সৃষ্টি, উন্নত পরিষেবা এবং অবকাঠামোর মাধ্যমে দরিদ্রদের উপকৃত করবে।’
২০২০ সালের মার্চে দেশে করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাব দেখা দেওয়ার পর থেকেই বিশ্বব্যাংক টিকা কেনাসহ করোনার ক্ষতি পুষিয়ে নিতে ঋণসহায়তা দিয়ে আসছে।