২০২২-২৩ অর্থবছরে কৃষিতে ঋণের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩০ হাজার ৯১১ কোটি টাকা, যা গেল অর্থবছরের তুলনায় ৮.৮৮ শতাংশ বেশি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের কৃষি ঋণ বিভাগ বৃহস্পতিবার ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে ‘বার্ষিক কৃষি ও পল্লী ঋণ নীতিমালা ও কর্মসূচি’ ঘোষণা করেছে।
কেন্দ্রীয় ব্যাংক জানায়, গেল অর্থবছরে ঋণ বিতরণের যে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছিল তার চেয়ে ব্যাংকগুলো বিতরণ করেছে বেশি, যা শতাংশে ১০১ দশমিক ৫৬ ভাগ। ২০২১-২২ অর্থবছরে কৃষিঋণ বিতরণে লক্ষ্য ছিল ২৮ হাজার ৩৯১ কোটি টাকা।
অনুষ্ঠানে কৃষিঋণ নীতিমালার বিস্তারিত তুলে ধরেন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের মুখপাত্র ও নির্বাহী পরিচালক সিরাজুল ইসলাম।
এতে বলা হয়, কোভিড-পরবর্তী অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার ও বিশ্ব মন্দার পরিপ্রেক্ষিতে দেশে খাদ্য সরবরাহ ঠিক রাখতে কৃষি ও কৃষিজাত পণ্য উৎপাদন ও বিপণনে অর্থায়ন ঠিক রাখতে ব্যাংকগুলোকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। স্বল্প সুদে ঋণ বিতরণ পদ্ধতিও সহজীকরণ করেছে বাংলাদেশ ব্যাংক।
এদিকে চলতি অর্থবছরে প্রাণিসম্পদ খাতের আওতায় হাঁস পালনের জন্য নিয়মাচর সংযোজন, চিয়া বীজ ,ত্বীন ফল, সুগার বিট চাষের জন্য নিয়মাচরসহ সাতটি খাত সংযোজন করা হয়েছে নতুন এ নীতিমালায়।
এ ছাড়া নীতিমালায় ভিয়েতনামী হাইব্রিড নারিকেল, কফি ও সুইট কর্ণ চাষের ঋণ নিয়মাচার সংযোজন, সামুদ্রিক শৈবাল চাষ, মৎস্য খাতের আওতায় গলদা চিংড়ি চাষ, সহজে অধিক সংখ্যক কৃষককে ঋণ দেয়ার লক্ষ্যে ব্যাংকগুলোর দলবদ্ধভাবে কৃষিঋণ বিতরণের পদ্ধতি সংযোজন এবং একর প্রতি ফসল উৎপাদনের ঋণ নিয়মাচার যোগ করা হয়েছে।
বাংলাদেশ ব্যাংক মনে করে, এ নীতিমালা গ্রামীণ উন্নয়নে কাজ করবে।
এবার কৃষি ও পল্লি ঋণের চাহিদা বিবেচনায় চলতি অর্থবছরে মোট লক্ষ্যমাত্রার মধ্যে রাষ্ট্র মালিকানাধীন বাণিজ্যিক ও বিশেষায়িত ব্যাংকগুলো ১১ হাজার ৭৫৮ কোটি টাকা এবং বেসরকারি ও বিদেশি বাণিজ্যিক ব্যাংক ১৯ হাজার ১৫৩ কোটি টাকা কৃষি ও পল্লি ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে।
২০২১-২২ অর্থবছরে ব্যাংকগুলো মোট ২৮ হাজার ৮৩৪ কোটি টাকার কৃষি ও পল্লি ঋণ বিতরণ করেছে। এর মধ্যে ৩৩ লাখ ৪ হাজার ৮১১ জন কৃষি ও পল্লি ঋণ পেয়েছেন।
ব্যাংকগুলোর নিজস্ব নেটওয়ার্ক ও এমএফআই লিংকেজের মাধ্যমে ১৭ লাখ ৯৭ হাজার ৫২ জন নারী ১০ হাজার ৮২৯ কোটি টাকা কৃষি ও পল্লি ঋণ পেয়েছেন।
এ ছাড়া গত অর্থবছরে ২৪ লাখ ৯৯ হাজার ৯৪৫ জন ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক চাষি বিভিন্ন ব্যাংক থেকে প্রায় ২০ হাজার ১৮২ কোটি টাকা এবং চর, হাওর প্রভৃতি অনগ্রসর এলাকার ৪ হাজার ৭৩ জন কৃষক প্রায় ১৯ কোটি ৫৯ লাখ টাকা ঋণ পেয়েছেন।