‘রোবট ফোন’ নামে পরিচিত নিজেদের নতুন স্মার্টফোনের টিজার প্রকাশ করেছে বিশ্বখ্যাত এআই-নির্ভর স্মার্টডিভাইস নির্মাতা প্রতিষ্ঠান অনার। সম্প্রতি, নিজেদের ম্যাজিক ৮ ফোন সিরিজের উন্মোচন অনুষ্ঠানে ফোনটির টিজার প্রকাশ করে প্রতিষ্ঠানটি।
বিশ্বের প্রথম স্মার্টফোন হিসেবে ‘রোবট ফোন’ -এ যুক্ত করা হয়েছে উন্নত রোবোটিকস প্রযুক্তি, কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) ও ইমোশনাল ইন্টেলিজেন্স। স্মার্টফোনে এ ধরনের প্রযুক্তিগুলোর সমন্বয় গ্রাহকদের দৈনন্দিন মোবাইল ব্যবহারের অভিজ্ঞতাকে আরও সমৃদ্ধ করবে।
প্রথম দেখায় ফোনটি দেখতে সাধারণ স্মার্টফোনের মতোই মনে হয়। তবে এর পেছনের দিকে রয়েছে এক অনন্য ফিচার—একটি গিম্বল-স্টাইলের রোবোটিক আর্মে বসানো পপ-আপ ক্যামেরা, যা প্রয়োজন অনুযায়ী সক্রিয়ভাবে নড়াচড়া করে।
অনন্য এ ফিচারের মাধ্যমে ‘রোবট ফোন’ ব্যবহারকারীর যেকোন গতিবিধি শনাক্ত করতে ও সে অনুযায়ী সাড়া দিতে পারে, যোগাযোগ করতে পারে, এমনকি মুখভঙ্গি বা গতিবিধির মাধ্যমে নিজের ‘অনুভূতি’ ও প্রকাশ করতে পারে। মানুষের ফোন ব্যবহারের ধরনে যা একটি যুগান্তকারী উদ্ভাবন।
অনার এর নিজস্ব ইউটিউব চ্যানেলে এই ফোনের একটি ২ মিনিট ৪০ সেকেন্ডের টিজার ভিডিও প্রকাশ করেছে। টিজারে দেখা যায়, ফোনটির ক্যামেরা মজার ভঙ্গিতে নড়াচড়া করছে এবং বিভিন্ন মুখভঙ্গির মাধ্যমে প্রতিক্রিয়া জানাচ্ছে। অনেক দর্শক এই দৃশ্যের সাথে জনপ্রিয় অ্যানিমেশন চলচ্চিত্র ‘ওয়াল-ই’ -এর মিল খুঁজে পেয়েছেন।
নতুন এই স্মার্টফোনের ডিজাইনে অনার প্রযুক্তিকে নিছক একটি যন্ত্রের মতো করে নয়, বরং সংবেদনশীল ও মানুষের সঙ্গে মিথস্ক্রিয়ায় সক্ষম এক সঙ্গী হিসেবে যুক্ত করেছে, যা প্রতিষ্ঠানটির ভবিষ্যতমুখী দৃষ্টিভঙ্গির প্রতিফলন।
প্রকাশিত টিজারে ফোনটির এক ঝলক বিশ্বব্যাপী প্রযুক্তিপ্রেমীদের মধ্যে আগ্রহ আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। ফোনটিতে কী নতুন ফিচার আসতে পারে তা নিয়ে চলছে নানা জল্পনা। জানা গেছে, ২০২৬ সালে বার্সেলোনায় অনুষ্ঠাতব্য মোবাইল ওয়ার্ল্ড কংগ্রেসে অনার আনুষ্ঠানিকভাবে ফোনটির বিস্তারিত তথ্য প্রকাশ করবে এবং সরাসরি প্রদর্শনী করবে।
এ নিয়ে অনার বাংলাদেশের হেড অব বিজনেস আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, “রোবট ফোন উন্মোচন করার মাধ্যমে মাধ্যমে অনার এআই-নির্ভর ডিভাইস উদ্ভাবনের প্রথমসারিতে নিজেদের অবস্থান আরও জোরদার করেছে। আগামীতে আমরা স্মার্টফোনকে শুধুমাত্র একটি যোগাযোগ করার মাধ্যম হিসেবে না দেখে ব্যবহারকারীর একজন সংবেদনশীল সঙ্গী হিসেবে তৈরি করতে চাই, যা মানুষের প্রয়োজন বুঝে সে অনুযায়ী সেবা দিবে এবং সার্বক্ষণিক সঙ্গ, বিনোদন ও জ্ঞানার্জনে সহায়তা করে ব্যবহারকারীর জীবনকে সমৃদ্ধ করে।”
অনারের এই দর্শন-ই ‘রোবট ফোন’কে সাধারণ স্মার্ট ডিভাইস থেকে আলাদা করে তুলেছে। এটি কেবল একটি ফোনই নয়, বরং এমন এক বুদ্ধিমান সঙ্গী, যা ব্যবহারকারীর প্রতিদিনের জীবনে সক্রিয় ভূমিকা রাখবে। এআই প্রযুক্তিকে আরও বেশি ‘হিউম্যান-লাইক’ ও আবেগসমৃদ্ধ করা করে তোলার এ ধারনাই অনারকে সাধারণ স্মার্ট ডিভাইস থেকে আলাদা করেছে। ‘রোবট ফোন’ নিছক একটি মোবাইল ফোন নয়; বরং ব্যবহারকারীর দৈনন্দিন জীবনের অংশ হয়ে ওঠে এক বুদ্ধিমান ও অনুভূতিশীল সহচর হিসেবে।
‘রোবট ফোন’ অনারের ‘আলফা প্ল্যান’ নামক উদ্যোগ বাস্তবায়নে একটি গুরুত্বপূর্ণ পদক্ষেপ, যার লক্ষ্য বিশ্বজুড়ে ভোক্তাদের কাছে ক্রমপরিবর্তনশীল এআই প্রযুক্তিনির্ভর ডিভাইস অভিজ্ঞতা পৌঁছে দেওয়া। অনারের এই উদ্যোগ এআই-নির্ভর ডিভাইস উদ্ভাবনে তাদের অগ্রগামী অবস্থানকে আরও দৃঢ় করেছে। একই সঙ্গে, এটি মেশিন প্রযুক্তিকে কীভাবে মানুষের জীবনের সঙ্গে আরও কার্যকরভাবে যুক্ত করা যায়, অনারের সে প্রচেষ্টার ও প্রতিফলন।