ডলারের বিপরীতে টাকার মান প্রতিনিয়ত কমে যাওয়ার পরিপ্রেক্ষিতে বৈদেশিক মুদ্রাটির মজুত রোধে ব্যবস্থা নেয়ার হুঁশিয়ারি দিয়েছে ঢাকা মেট্রোপলিটন পুলিশের (ডিএমপি) গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)।
ডিএমপির মিডিয়া সেন্টারে বৃহস্পতিবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে এমন হুঁশিয়ারি দেন ডিবির প্রধান ও অতিরিক্ত কমিশনার মোহাম্মদ হারুন-অর রশিদ।
ডলারের বাজার স্বাভাবিক করতে বাংলাদেশ ব্যাংক মাঠে নামার পর মজুত ঠেকানোর ব্যবস্থার কথা জানাল পুলিশ।
ডিবির প্রধান বলেন, ‘ডলারের মূল্যবৃদ্ধির এ সময়ে কেউ যদি তা মজুত করে, তাহলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া হবে। আমরা যদি এ ধরনের তথ্য পাই কেউ ডলার মজুত করছে বা অবৈধভাবে জাল ডলার তৈরির সরঞ্জাম অথবা মেশিন আছে, তাহলে অবশ্যই অভিযান পরিচালনা করব। আমরা এ বিষয়ে তথ্য সংগ্রহ করছি।’
যুক্তরাষ্ট্রের ডলারের বিপরীতে টাকার মান কমছে কিছুদিন ধরেই। এক মাসের ব্যবধানে ডলারের বিপরীতে টাকার মান কমেছে ৫ শতাংশের বেশি। আর এক বছরের ব্যবধানে কমেছে ১০ দশমিক ৮০ শতাংশ।
আন্তব্যাংক মুদ্রাবাজারে এক ডলারের জন্য খরচ করতে হয়েছে ৯৪ টাকা ৭০ পয়সা, তবে সব ব্যাংকেই নগদ ডলারের দাম বেড়ে ১০০ টাকার ওপরে উঠেছে। ১০৫ থেকে ১০৮ টাকায় বিক্রি করছে কোনো কোনো ব্যাংক।
এই ডামাডোলে মঙ্গলবার কার্ব মার্কেট বা খোলাবাজারে ডলারের দর সব রেকর্ড ছাড়িয়ে ১১২ টাকায় বেচাকেনা হয়।
বুধবার দিনের শুরুতে কেন্দ্রীয় ব্যাংক তদন্ত শুরু করলে বাজারের পরিস্থিতি পাল্টে যায়। মানি এক্সচেঞ্জগুলোতে হিসাবের বাইরে খোলাবাজারের মতো আগে ডলার বেচাকেনা হতো। সেটি বন্ধ হয়ে যায়। তারা ক্যাশ রেজিস্টারের মাধ্যমে ডলার বেচাকেনা করেছে। ফলে বেশির ভাগ মানি এক্সচেঞ্জই ১০৫ টাকায় ডলার কিনে ১০৮ টাকার মধ্যে বিক্রি করেছে।
কী করছে বাংলাদেশ ব্যাংক
বাণিজ্যিক ব্যাংক, মানি এক্সচেঞ্জ হাউস ও খোলাবাজার পরিদর্শন শুরু করেছে বাংলাদেশ ব্যাংকের ১০টি পরিদর্শক দল।
ডলার কারা কিনছে, কোনো যৌক্তিক কারণ আছে কি না, প্রতিদিন কেমন ডলার কেনা হচ্ছে, এর বিপরীতে বিক্রি কেমন, দর কত—এসব তথ্য সংগ্রহ করছে বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিদর্শক দল।
একই সঙ্গে ডলার বেচাকেনায় নিয়ম মানা হচ্ছে কি না, সে বিষয়গুলোও খতিয়ে দেখছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
প্রতিষ্ঠানটির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র সিরাজুল ইসলাম নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বাজার স্বাভাবিক না হওয়া পর্যন্ত এই পরিদর্শন চলবে।’