বন্যা মোকাবিলায় বাংলাদেশকে ৫০ কোটি ডলার ঋণ দেবে বিশ্বব্যাংক। বর্তমান বিনিময় হার (প্রতি ডলার ৯৩ টাকা ৯৫ পয়সা) হিসাবে টাকার অঙ্কে এই অর্থের পরিমাণ ৪ হাজার ৭০০ কোটি টাকা।
শনিবার যুক্তরাষ্ট্রের রাজধানী ওয়াশিংটন ডিসিতে বিশ্বব্যাংক সদর দপ্তরে সংস্থাটির বোর্ডসভায় এই ঋণ অনুমোদন দেয়া হয়েছে বলে এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়েছে।
বাংলাদেশের ১৪টি বন্যাপ্রবণ জেলায় অভ্যন্তরীণ বন্যার বিরুদ্ধে দুর্যোগ মোকাবিলার জন্য এই অর্থ ব্যয় করা হবে বলে জানিয়েছে বিশ্বব্যাংক।
উন্নয়ন সংস্থাটির বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, রেজিলিয়েন্ট ইনফ্রাস্ট্রাকচার ফর অ্যাডাপটেশন অ্যান্ড ভালনারাবিলিটি রিডাকশন (রিভার) প্রকল্পের অধীনে বিশ্বব্যাংক এ ঋণ দেবে। এ প্রকল্পের ফলে ১২ লাখ ৫০ হাজারের বেশি মানুষ উপকৃত হবে। প্রকল্পের আওতায় পাঁচ শতাধিক বহুমুখী বন্যা আশ্রয়কেন্দ্র, সংযোগ সড়ক এবং জলবায়ু সহনশীল কমিউনিটি অবকাঠামো নির্মাণ করা হবে। স্বাভাবিক সময়ে এসব আশ্রয়কেন্দ্র প্রাথমিক বিদ্যালয় হিসেবে পরিচালিত হবে। এসব কেন্দ্রে সৌরবিদ্যুৎ, নিরাপদ পানি, স্যানিটেশন এবং হাইজিন বা স্বাস্থ্যবিধি রক্ষার সুবিধা থাকবে।
উপকূলীয় এলাকার বাইরে ১৪টি জেলায় এ প্রকল্প বাস্তবায়িত হবে। জেলাগুলো হলো নীলফামারী, লালমনিরহাট, কুড়িগ্রাম, রংপুর, গাইবান্ধা, বগুড়া, পাবনা, সিরাজগঞ্জ, রাজবাড়ী, ফরিদপুর, মাদারীপুর, গোপালগঞ্জ, সুনামগঞ্জ ও হবিগঞ্জ।
বাংলাদেশে নিযুক্ত বিশ্বব্যাংকের আবাসিক প্রতিনিধি মার্সি টেম্বন বলেন, ‘সিলেট অঞ্চলে সাম্প্রতিক হৃদয়বিদারক বন্যা পরিস্থিতি জলবায়ু পরিবর্তনের ক্রমবর্ধমান ঝুঁকির কথা মনে করিয়ে দিয়েছে। উপকূলীয় এলাকায় দুর্যোগ ঝুঁকি ব্যবস্থাপনায় বাংলাদেশের সঙ্গে বিশ্বব্যাংকের গত পাঁচ দশকের দীর্ঘ অংশীদারত্বের ওপর ভিত্তি করে এ প্রকল্প উপকূলীয় এলাকার বাইরে দুর্যোগ মোকাবিলায় সহায়তা করবে।’
“এটি এ দেশকে 'দুর্যোগে সাড়া' দেওয়ার দৃষ্টিভঙ্গি থেকে 'দুর্যোগ ঝুঁকি ব্যবস্থাপনার' দৃষ্টিভঙ্গিতে রূপান্তরে সহায়তা করবে।”
বিশ্বব্যাংকের এ ঋণ সংস্থাটির ইন্টারন্যাশন্যাল ডেভেলপমেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের (আইডিএ) স্বল্পসুদের ও সহজ শর্তের ঋণ, যার মেয়াদ হবে ৩০ বছর। প্রথম পাঁচ বছর গ্রেস পিরিয়ড থাকবে। অর্থাৎ এ সময়ে কোনো কিস্তি দেওয়া লাগবে না।
বিশ্বব্যাংক বাংলাদেশের প্রথম উন্নয়ন সহযোগী এবং এ পর্যন্ত ৩৭ বিলিয়ন ডলারের অনুদান এবং সুদমুক্ত ও নমনীয় ঋণ দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে। বাংলাদেশে বর্তমানে বিশ্বে সবচেয়ে বেশি আইডিএ ঋণ কার্যক্রম চলমান রয়েছে বলে বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করা হয়েছে।