বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

‘জনগণের ওপর স্বাস্থ্য ব্যয়ের চাপ কমাতে হবে’

  •    
  • ৭ জুন, ২০২২ ০১:৪২

সাবেক গভর্নর ড. আতিউর রহমান বলেন, ‘বাংলাদেশের কারেন্ট হেলথ এক্সপেন্ডিচার (সিএইচই) মাত্র ২ দশমিক ৩ শতাংশ। এটা প্রতিবেশী নেপাল, ভারত, ভুটান ও শ্রীলংকার চেয়ে কম। বাংলাদেশের মাথাপিছু সিএইচই বা স্বাস্থ্য খরচ যেখানে ৪৫ ডলার, সেখানে এই প্রতিবেশী দেশগুলোর খরচ যথাক্রমে ৫৮, ৭৩, ১০৩ ও ১০৭ ডলার।’

দেশের মোট স্বাস্থ্য ব্যয়ের ৬৮ শতাংশ বহন করছে জনসাধারণ। সরকার বহন করছে মাত্র ২৩ শতাংশ। আসন্ন বাজেটে স্বাস্থ্য খাতে এমনভাবে বরাদ্দ দিতে হবে যাতে মানুষের ওপর স্বাস্থ্য ব্যয়ের চাপ কমে আসে।

সোমবার প্রাক-বাজেট আলোচনায় বক্তারা এসব কথা বলেন। ‘স্বাস্থ্য বাজেট বিষয়ক জাতীয় সংলাপ’ শিরোনামে এই আলোচনা যৌথভাবে আয়োজন করে বাংলাদেশ হেলথ ওয়াচ, ব্র্যাক জেমস পি গ্রান্ট স্কুল অফ পাবলিক হেলথ, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয় ও উন্নয়ন সমুন্নয়।

রাজধানীর ডেইলি স্টার ভবনে আয়োজিত সভায় স্বাস্থ্য বাজেট বিষয়ে মূল নিবন্ধ অনলাইনে উপস্থাপন করেন উন্নয়ন সমুন্নয়ের সভাপতি ও বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর অধ্যাপক ড. আতিউর রহমান।

হেলথ ওয়াচের থিমেটিক গ্রুপের সভাপতি এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. রুমানা হকের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সংসদ সদস্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন হাবিবে মিল্লাত, রুমিন ফারহানা ও শামীম হায়দার পাটোয়ারী। বিশেষজ্ঞ আলোচক ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. সৈয়দ আব্দুল হামিদ।

সরকারের অর্থবিভাগ থেকে পাওয়া তথ্য এবং মাঠ-জরিপ থেকে প্রাপ্ত ফলের ভিত্তিতে তৈরি মূল নিবন্ধ তুলে ধরেন ড. আতিউর রহমান।

তিনি বলেন, ‘সরকারের স্বাস্থ্য বাজেটে বর্তমানে ওষুধ ও পচনশীল চিকিৎসা সামগ্রী বাবদ যে বরাদ্দ আছে তা তিন গুণ করা দরকার। একইসঙ্গে উপজেলা পর্যায় থেকে কম্যুনিটি পর্যন্ত তিন ধরনের সরকারি সেবাকেন্দ্রে সব শূন্যপদে দক্ষ জনবল নিয়োগ করতে হবে। তাহলে মোট স্বাস্থ্য ব্যয়ে জনসাধারণের অংশ ৬৮ শতাংশ থেকে কমে ৫১ শতাংশে নেমে আসতে পারে। তবে মানসম্মত স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করতে বাজেটে বরাদ্দ বাড়ানোর পাশাপাশি পুরো স্বাস্থ্যখাতেই সংস্কারে মনোযোগ দিতে হবে।’

তিনি বলেন, ‘স্বাস্থ্য খাতের জন্য মোট জাতীয় বাজেটের ৫ থেকে ৬ শতাংশের মতো বরাদ্দ দেয়া হয়। এ অনুপাত অবশ্যই বাড়ানো দরকার। ২০২০-২১ ও ২০২১-২২ অর্থবছরে স্বাস্থ্য বাজেটের আকার বেড়েছে। এরপরও পুরো দক্ষিণ এশিয়ার তুলনায় বাংলাদেশে স্বাস্থ্য ব্যয় বেশ কম। বাংলাদেশের কারেন্ট হেলথ এক্সপেন্ডিচার (সিএইচই) মাত্র ২ দশমিক ৩ শতাংশ। ‘মাথাপিছু সিএইচইর হিসাবেও বাংলাদেশ প্রতিবেশী নেপাল, ভারত, ভুটান ও শ্রীলংকার চেয়ে পিছিয়ে। বাংলাদেশের মাথাপিছু সিএইচই বা স্বাস্থ্য খরচ যেখানে ৪৫ ডলার, সেখানে এই প্রতিবেশী দেশগুলোর খরচ যথাক্রমে ৫৮, ৭৩, ১০৩ ও ১০৭ ডলার।’

আতিউর রহমান বলেন, ‘নাগরিকরা নিজেরা স্বাস্থ্যসেবার জন্য বড় অংশটি ওষুধ, সিরিঞ্জ, ব্যান্ডেজ তথা আনুষঙ্গিক চিকিৎসাসামগ্রী বাবদ ব্যয় করেন। এই হার ৬৭ শতাংশ। ওষুধ কেনা বাবদই নাগরিকদের সবচেয়ে বেশি ব্যয় করতে হচ্ছে। এজন্য স্বাস্থ্য বাজেটের বর্ধিত বরাদ্দের একটি বড় অংশ নাগরিকদের বিনামূল্যে বা ভর্তুকি মূল্যে ওষুধ সরবরাহের জন্য রাখা দরকার।’

হাবিবে মিল্লাত বলেন, ‘স্বাস্থ্য খাতের জন্য মধ্যম থেকে দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিতে হবে। পঞ্চবার্ষিকী পরিকল্পনায় স্বাস্থ্য খাতের চাহিদাগুলো প্রতিফলিত করার ওপর জোর দিতে হবে।’

রুমিন ফারহানা বলেন, ‘প্রতিবেশি ভূটান যেভাবে সার্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করেছে এবং ভারতে নিম্ন আয়ের মানুষের জন্য যে স্বাস্থ্য বিমার উদ্যোগগুলো নেয়া হচ্ছে সেগুলো থেকে শিক্ষা নিয়ে বাংলাদেশেও সার্বজনীন স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা দরকার।’

শামীম হায়দার পাটোয়ারী তার বক্তব্যে দেশের পুরো জনগোষ্ঠীর জন্য স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করার দায়িত্ব কেবল সরকারি সেবাকেন্দ্রের ওপর না চাপিয়ে সরকার ও ব্যক্তি খাতের প্রতিষ্ঠানগুলোর মধ্যে অংশীদারত্বমূলক উদ্যোগ নেয়ার কথা বলেন।

অন্য বক্তারা স্বাস্থ্য খাতে বরাদ্দের ক্ষেত্রে প্রাথমিক স্বাস্থ্যসেবাকে অগ্রাধিকার দেয়া, ব্যক্তি খাতে স্বাস্থ্য সেবাদাতাদের মান নিয়ন্ত্রণ, স্বাস্থ্য বাজেটের জেন্ডার-সংবেদনশীলতা, যৌন ও প্রজনন স্বাস্থ্যসেবা খাতে যথাযথ মনোযোগ দেয়ার বিষয়গুলো তুলে ধরেন।

এ বিভাগের আরো খবর