বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

বাংলাদেশ ব্যাংক ‘হাত বাড়ানোর পর’ পুঁজিবাজারে উত্থান

  •    
  • ২৯ মে, ২০২২ ১৪:৫১

মিয়া আব্দুর রশিদ সিকিউরিটিজের শীর্ষ কর্মকর্তা শেখ ওহিদুজ্জামান স্বাধীন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘অর্থমন্ত্রীর বেশি কিছু নির্দেশনার পরে বিএসইসির চেয়ারম্যান জানিয়েছেন যে, তিনি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলাপ করেছেন পুঁজিবাজারের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে। এছাড়াও তিনি বলেছেন, এক সপ্তাহের মধ্যেই পুঁজিবাজারের এমন ব্যবস্থা থাকবে না। যার কারণে বিনিয়োগকারীরা কিছুটা আশাবাদী হচ্ছেন, তারা বিনিয়োগে ফিরছেন।

পুঁজিবাজারে ক্ষতিগ্রস্ত ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের মধ্যে ঋণ হিসেবে বিতরণের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক ২০৫ কোটি টাকা ছাড় করার চিঠি ছড়িয়ে পড়ার পর বড় উত্থানে সপ্তাহ শুরু হলো পুঁজিবাজারে।

চলতি বছরে এক দিনে সূচকের সর্বোচ্চ উত্থানের পাশাপাশি প্রায় সাড়ে তিন শ কোম্পানির শেয়ারের দর বৃদ্ধি পেয়েছে।

বেলা শেষে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের সার্বিক সূচক ডিএসইএক্সে যোগ হয়েছে ১৩২ পয়েন্ট। এর আগে চলতি বছর কখনও কোনো সপ্তাহের প্রথম দিন এত বেশি সূচক বাড়েনি।

চলতি বছর এক দিনে সর্বোচ্চ সূচক বেড়েছিল গত সপ্তাহের দ্বিতীয় কর্মদিবসে ১১৮ পয়েন্ট। কিন্তু এর পর আবার দুই দিন পতনে হতাশা তৈরি করে। তবে বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংকের সিদ্ধান্তকে বেশ ইতিবাচকভাবে নেয় বিনিয়োগকারীরা।

পুঁজিবাজার নিয়ে দুই নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি ও বাংলাদেশ ব্যাংকের মধ্যে মতভিন্নতা, এরপর ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের কারণে বিশ্ব অর্থনৈতিক মন্দার আশঙ্কা, ডলারের বিপরীতে টাকার দরপতন ইস্যুতে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আস্থার সংকট যখন প্রকট, তখন বৃহস্পতিবার এই অর্থছাড়ের কথা জানায় বাংলাদেশ ব্যাংক।

আর্থিক খাতের নিয়ন্ত্রক সংস্থার এই পদক্ষেপটি বিনিয়োগকারীদের মধ্যে এক ধরনের ভরসা তৈরি করেছে। আগের সপ্তাহে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মোস্তফা কামাল পুঁজিবাজার নিয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরসহ সংশ্লিষ্টদেরকে নিয়ে যে বৈঠকে বসেন, সেখানে বিএসইসি ও বাংলাদেশ ব্যাংককে সমন্বয় করে সিদ্ধান্ত নেয়ার নির্দেশনা দেন।

পাশাপাশি আইসিবির মাধ্যমে পুঁজিবাজারে ব্যাংকের বিনিয়োগ তার এক্সপোজার লিমিট বা বিনিয়োগসীমার বাইরে রাখার যে নির্দেশনা এসেছে, সেটিও বাজারে তারল্য বাড়াতে পারে। বিনিয়োগকারীরা এই বিষয়ে যখন প্রজ্ঞাপনের অপেক্ষায়, সে সময় বৃহস্পতিবার বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে টাকা ছাড় করার এই চিঠি প্রকাশ হয।

বিএসইসির অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ থেকেও এই চিঠিটি প্রচার করা হয়।

এরপর রোববার লেনদেন শুরুই হয় সূচকের লাফ দিয়ে। ৯৪ পয়েন্ট বেড়ে শুরু হওয়ার পর তা কখনও পড়েনি। বরং বেলা যত গড়িয়েছে, ততই বেড়েছে।

টানা পড়তে থাকা বিপুল সংখ্যক কোম্পানির শেয়ারদর দিনের দর বৃদ্ধির সর্বোচ্চ সীমা ছুঁয়ে এক পর্যায়ে বিক্রেতাশূন্য হয়ে যায়।

পুঁজিবাজারে একটি ঝলমলে দিনে বিনিয়োগকারীদের মনে সঞ্চার করেছে আশা

৩৪২ টি কোম্পানির শেয়ারদর বৃদ্ধির বিপরীতে কমেছে ২৫টির দর। ১০টি দর ধরে রাখতে পারে। আগের কর্মদিবসের তুলনায় লেনদেনও বেড়েছে ৫০ শতাংশের বেশি।

রোববারের লেনদেন নিয়ে মিয়া আব্দুর রশিদ সিকিউরিটিজের শীর্ষ কর্মকর্তা শেখ ওহিদুজ্জামান স্বাধীন নিউজবাংলাকে বলেন, ‘বাজারের উত্থান এবং লেনদেন বাড়ার কারণ মার্চেন্ট ব্যাংকগুলো শেয়ার কিনতে শুরু করেছে। কিছুদিন পতনের কারণে বেশ কিছু ভালো শেয়ার আন্ডারভ্যালুড হয়ে পড়েছিল। এখন মার্চেন্ট ব্যাংকগুলো সেসব শেয়ার কিনছে।’

তিনি বলেন, ‘অর্থমন্ত্রীর বেশি কিছু নির্দেশনার পরে বিএসইসির চেয়ারম্যান জানিয়েছেন যে, তিনি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে আলাপ করেছেন পুঁজিবাজারের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে। এছাড়াও তিনি বলেছেন, এক সপ্তাহের মধ্যেই পুঁজিবাজারের এমন ব্যবস্থা থাকবে না। যার কারণে বিনিয়োগকারীরা কিছুটা আশাবাদী হচ্ছেন, তারা বিনিয়োগে ফিরছেন।

‘মার্চেন্ট ব্যাংকগুলো সেই সুযোগটাই নিচ্ছে। তারা বাইয়ে (ক্রয়ে) ফিরেছে, কারণ কিছুদিন পরে তারা সেই শেয়ারগুলোতে লাভ করতে পারবে।’

উত্থান সব খাতেই

ঢালাও পতনের দিন যে ধরনের চিত্র দেখা যেত, উত্থানের দিন পুরো বিপরীত চিত্র দেখা গেছে।

খাদ্য ও আনুষঙ্গিক, তথ্য প্রযুক্তি, বিবিধ, চামড়া, সিরামিকস, জীবন বিমা, সেবা ও আবাসন, ভ্রমণ ও অবকাশ খাতের সব কোম্পানির দর বেড়েছে।

এর বাইরে বস্ত্র এবং বিদ্যুৎ ও জ্বালানি খাতে একটি মাত্র কোম্পানির দর বাড়েনি, যেটির দর ছিল অপরিবর্তিত।

এছাড়া প্রকৌশল খাতে একটির দর কমার বিপরীতে বেড়েছে ৪১টির, মিউচ্যুয়াল ফান্ড খাতে একটির বিপরীতে ৩২টির, আর্থিক খাতে একটির বিপরীতে ২০টির, সাধারণ বিমায় তিনটির বিপরীতে ৩৬টির, ওষুধ ও রসায়ন খাতে চারটির বিপরীতে ২৭টির, ব্যাংক খাতে ৬টির বিপরীতে ২৪টির, সিমেন্ট খাতে একটির বিপরীতে ৬টির, কাগজ ও প্রকাশনা খাতে একটির বিপরীতে ৫টির, টেলিকমিউনিকেশনস এবং পাট খাতে খাতে একটির বিপরীতে দুটি কোম্পানির দর বেড়েছে।

আর্থিক খাতের আইপিডিসি কাগজ খাতের পেপার প্রসেসিং ও মনোস্পুল পেপার, বস্ত্র খাতের তমিজউদ্দিন টেক্সটাইল, অলটেক্স, দুলামিয়া কটন ও ফ্যামিলি টেক্স, খাদ্য খাতের আরডি ফুড, ওষুধ খাতের ইমাম বাটন প্রকৌশল খাতের ওয়েস্টার্ন মেরিন শিপইয়ার্ড, সবচেয়ে বেশি দর বৃদ্ধি পাওয়া এই ১০টি কোম্পানির সবগুলোর দামই বেড়েছে এক দিনে যত বাড়া সম্ভব ততটাই।

শীর্ষ ১০ এর পর আরও দুটি কোম্পানির দর ৯ শতাংশের বেশি, ৭টির দর ৮ শতাংশের বেশি, ৯টির দর ৭ শতাংশের বেশি, ১৭টির দর ৬ শতাংশের বেশি, ৩৮টির দর ৫ শতাংশের বেশি, ৫৭টির দর ৪ শতাংশের বেশি, ৬৮টির তর ৩ শতাংশের বেশি বেড়েছে।

বিপরীতে দরপতনের সর্বোচ্চ সীমা ২ শতাংশ ছুঁয়ে ক্রেতা উধাও হয়ে যায় ৬টি কোম্পানির দর।

এ বিভাগের আরো খবর