বাংলাদেশ

মতামত

খেলা

বিনোদন

জীবনযাপন

তারুণ্য

কিড জোন

অন্যান্য

রেস-জেন্ডার

ফ্যাক্ট চেক

স্বাস্থ্য

আন্তর্জাতিক

শিক্ষা

অর্থ-বাণিজ্য

বিজ্ঞান-প্রযুক্তি

তামাকের কর কাঠামো সংশোধনের সুপারিশ

  •    
  • ১৪ মে, ২০২২ ২১:২৩

ভয়েসের নির্বাহী পরিচালক আহমেদ স্বপন  মাহমুদ বলেন, ‘কর নির্ধারণ প্রক্রিয়ায় তামাক কোম্পানির অবৈধ হস্তক্ষেপের অনেক তথ্যপ্রমাণ বের হয়েছে। তামাক কর নীতিমালা সংস্কার প্রক্রিয়ায় তামাক কোম্পানিগুলোকে বেশি প্রাধান্য দেয়া হয়।’

সরকারকে নির্দিষ্ট পলিসি করে তামাক পণ্যে কর কাঠামো চার স্তর থেকে দুই স্তরে নামিয়ে আনার দাবি জানিয়েছে বেসরকারি সংস্থা ভয়েস।

শনিবার রাজধানীর সিরডাপ মিলনায়তনে ‘বাংলাদেশে তামাকজাত পণ্যের কর নির্ধারণ প্রক্রিয়ায় তামাক কোম্পানির হস্তক্ষেপ’ শীর্ষক গবেষণার ফল উপস্থাপনা সভায় বক্তারা এসব কথা বলেন।

অধিকার-ভিত্তিক গবেষণা এবং অ্যাডভোকেসি সংস্থা ‘ভয়েস’ অনুষ্ঠানটির আয়োজন করে। এতে সভাপতিত্ব করেন পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশনের (পিকেএসএফ) সভাপতি এবং অর্থনীতিবিদ ড. কাজী খলিকুজ্জামান আহমদ।

সভায় বক্তারা বলেন, তামাক মুক্ত দেশ বাস্তবায়ন করতে হলে তামাক কোম্পানির লাভের রাজস্ব আয়ের চেয়ে জনস্বাস্থ্যকে বেশি গুরুত্ব দিতে হবে।

আলোচনায় তামাক নিয়ন্ত্রণ ও নাগরিক অধিকার কর্মীরা জানান, ২০৪০ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে তামাক মুক্ত করতে হলে ব্রিটিশ আমেরিকান টোবাকো কোম্পানিতে থাকা সরকারের শেয়ার বিক্রি করে দিতে হবে এবং তাদের সঙ্গে সরকারের ঘনিষ্ট সম্পর্ক ত্যাগ করতে হবে। সরকারকে সমন্বিত ও কার্যকর তামাক কর নীতিমালা গ্রহণ করতে হবে। কর নীতিমালায় সরকারকে, বিশেষ করে জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে তামাক কোম্পানির প্রতি আনুকূল্য দেখান বন্ধ করতে হবে।

গবেষণার ফল তুলে ধরেন ভয়েসের নির্বাহী পরিচালক আহমেদ স্বপন মাহমুদ। তিনি বলেন, ‘কর নির্ধারণ প্রক্রিয়ায় তামাক কোম্পানির অবৈধ হস্তক্ষেপের অনেক তথ্যপ্রমাণ বের হয়েছে। তামাক কর নীতিমালা সংস্কার প্রক্রিয়ায় তামাক কোম্পানিগুলোকে বেশি প্রাধান্য দেয়া হয়।’

বাংলাদেশে তামাক কর নীতিমালা তৈরির ক্ষেত্রে তামাক কোম্পানিগুলোর হস্তক্ষেপের ধরন বোঝার জন্য সাংবাদিক, নীতি নির্ধারক, গবেষক এবং তামাক নিয়ন্ত্রণ নিয়ে কাজ করেন এমন ২৩ জনের সাক্ষাৎকারের মাধ্যমে গবেষণাটি ২০২১ সালের মার্চ থেকে মে মাসের মধ্যে পরিচালনা করা হয়।

গবেষণার ফলে দেখা গেছে, বিভিন্ন সরকারি কর্মকর্তা এবং উচ্চপদস্থ গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিদের সঙ্গে তামাক কোম্পানিগুলোর খুব ঘনিষ্ট এবং পারস্পরিক লাভের সম্পর্ক রয়েছে। তামাক কোম্পানিগুলো কর সংস্কার প্রক্রিয়ায় জড়িত এনবিআর ও অন্য সরকারি কর্মকর্তাদের নগদ এবং বিভিন্ন ধরনের উপহার দিয়ে থাকেন। এমনকি তাদের জন্য বিদেশ ভ্রমণের ব্যবস্থাও করা হয়ে থাকে। বাংলাদেশ সরকার তামাক কোম্পানির বিভিন্ন অনুদানসহ তাদের কর্পোরেট সামাজিক দায়িত্বের (সিএসআর) কাজকর্মকে সমর্থন দেয়।

কাজী খলিকুজ্জামান আহমদ বলেন, ‘দেশকে তামাকমুক্ত করতে হলে প্রথমেই সরকারকে ব্রিটিশ আমেরিকান টোব্যাকো কোম্পনিতে থাকা সব শেয়ার বিক্রি করে দিতে হবে। বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে তামাকের একক সুনির্দিষ্ট কর কাঠামো তামাক ব্যবহারকারীদের ক্রয় ক্ষমতা হ্রাস ও তামাক ব্যবহার কমাতে অধিক কার্যকর হবে।’

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সাবেক সভাপতি ড. নাসিরুদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘তামাকজাত পণ্যের কর নির্ধারণ প্রক্রিয়ায় তামাক কোম্পানিগুলো অনেক আগে থেকেই সুপরিকল্পিত হস্তক্ষেপ করে আসছে। এমনকি লকডাউনের মধ্যেও তারা বাংলাদেশের ‘প্রয়োজনী পণ্য আইন ১৯৫৬’ আইনে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে লবিং করে অনুমতি নিয়ে তাদের উৎপাদন, বাজারজাতকরণ এবং বিতরণ জারি রাখে। আইনটিতে সিগারেটের মত ক্ষতিকর পণ্যকেও বাংলাদেশের প্রয়োজনীয় পণ্য হিসেবে দেখানো হয়েছে।’

এনবিআরের আরেকজন সাবেক চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আব্দুল মজিদ তারুণ্য, জনশিক্ষা বা তামাক নিয়ন্ত্রণের যে কোনো কাজে তামাক কোম্পানির অংশগ্রহণ নিষিদ্ধ করার দাবি জানান। এমন কি তামাক কোম্পানি সিএসআর কার্যক্রম পুরোপুরি নিষিদ্ধের দাবি জানান।

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য রাখেন অধ্যাপক সিটিএফকে-এর সিনিয়র পলিসি অ্যাডভাইজার আতাউর রহমান মাসুদ এবং সিটিএফকে-এর গ্র্যান্টস ম্যানেজার আবদুস সালাম মিয়া, উন্নয়ন গবেষক ফজলুল হক মজুমদার এবং শারমিন রিনি।

এ বিভাগের আরো খবর