ক্যাপিটাল মার্কেট স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ডে (সিএমএসএফ) অর্থ ও শেয়ার উল্লেখযোগ্য পরিমাণে জমা না হওয়ায় ইস্যুয়ার কোম্পানিগুলোর প্রতি অসন্তোষ প্রকাশ করেছে ফান্ডের অডিট অ্যান্ড অ্যাকাউন্টস ম্যানেজমেন্ট কমিটি (এএএমসি)।
সিএমএসএফের চিফ অফ অপারেশন মনোয়ার হোসেন এফসিএ, এফসিএমএ স্বাক্ষরিত শুক্রবারের বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা জানানো হয়েছে।
এতে বলা হয়, তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর দীর্ঘ দিনের অবণ্টিত লভ্যাংশের বিপুল পরিমাণ অর্থ ও শেয়ার এ ফান্ডে আসার কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত ৪৬০ কোটি টাকা এবং বর্তমান বাজারমূল্যে ৩৩৮ কোটি টাকার সমপরিমাণ শেয়ার এই ফান্ডে জমা হয়েছে। এটি খুবই নগণ্য।
নিরপেক্ষ অডিট কমিটির সভায় এএএমসির প্রধান ও অর্থ মন্ত্রণালয়ের অভ্যন্তরীণ সম্পদ বিভাগের সাবেক অতিরিক্ত সচিব আবদুর রউফ বলেন, ৩১ মে পর্যন্ত বেঁধে দেয়া সময়ের মধ্যে ইস্যুয়ার কোম্পানিগুলো সিএসএফের ফান্ডে অর্থ ও শেয়ার ট্রান্সফার না করলে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনকে (বিএসইসি) সঙ্গে নিয়ে নিয়ম অনুযায়ী যে অর্থ ও শেয়ার এই ফান্ডে আসার কথা, তা কীভাবে আনা যায়, সে বিষয়ে মনিটরিংসহ সার্বিক তত্ত্বাবধান করা হবে।
অডিট কমিটির অন্য সদস্য এ.কে.এম. দেলোয়ার হোসেন এফসিএমএ, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম.এ. মহি পিএসসি, বাংলাদেশ নৌবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত সিনিয়র ফিন্যান্স কন্ট্রোলার শাহেদা খানম, সিসিবিএলের পরিচালক মুহাম্মদ তাজদিকুল ইসলাম, এফসিএমএ আবদুর রউফের সঙ্গে একমত পোষণ করেন।
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানিগুলোর দীর্ঘদিনের অবণ্টিত লভ্যাংশের বিপুল পরিমাণ অর্থ রয়েছে। সেই অর্থ একসঙ্গে করে বাজারের উন্নয়নে কাজে লাগাতে বিএসইসি সিএমএসএফ নামে বিশেষ তহবিল গঠন করা হয়।
সেই সঙ্গে ক্যাপিটাল মার্কেট স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ড রুলস-২০২১ গ্রেজেট আকারে প্রকাশ করা হয়।
ফান্ডটি নিয়ম অনুযায়ী পরিচালনার জন্য ১০ সদস্যের একটি শক্তিশালী কমিটি রয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর সাবেক মুখ্য সচিব এবং জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সাবেক চেয়ারম্যান নজিবুর রহমান এই ফান্ডের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন।
সিএমএসএফ বিনিয়োগকারীদের স্বার্থ রক্ষার পাশাপাশি দক্ষ পুঁজিবাজার গঠনে কাজ করে যাচ্ছে।
ফান্ডটি তালিকাভুক্ত সিকিউরিটিজ ইস্যুকারীর কাছ থেকে অদাবিকৃত এবং অবণ্টিত নগদ বা স্টক ডিভিডেন্ড, অফেরত পাবলিক সাবস্ক্রিপশনের অর্থ এবং অবরাদ্দকৃত রাইট শেয়ার স্থানান্তর করার মাধ্যমে প্রাপ্ত বিনিয়োগকারীদের পক্ষে নগদ এবং স্টকের অভিভাবক হিসেবে কাজ করছে।
পুঁজিবাজার স্থিতিশীলতায় নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির নির্দেশে রাষ্ট্রীয় বিনিয়োগ প্রতিষ্ঠান আইসিবির মাধ্যমে স্ট্যাবিলাইজেশন ফান্ডের ১৫০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করা হয়েছে। পুঁজিবাজারের সেকেন্ডারি মার্কেটে তারল্য প্রবাহ নিশ্চিত করতেই এই অর্থ বিনিয়োগ করা হয়েছে।
বাজার স্থিতিশীলতায় সিএমএসএফ ‘আইসিবি এএমসিএল সিএমএসএফ গোল্ডেন জুবিলি মিউচুয়াল ফান্ড’ নামে একটি ক্লোজড-এন্ড মিউচুয়াল ফান্ডও গঠন করে। এই ফান্ডের আকার ১০০ কোটি টাকা, যার ইউনিটপ্রতি অভিহিত মূল্য ১০ টাকা।
সিএমএসএফ পৃষ্ঠপোষক হিসেবে ৫০ কোটি টাকা বিনিয়োগ করেছে।
সিএমএসএফ কার্যক্রম শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত বিনিয়োগকারীদের কাছ থেকে ২২ লাখ ৯৬ হাজার ৮৮০ টাকার অমীমাংসিত দাবি নিষ্পত্তির আবেদন গ্রহণ করেছে।
ইতোমধ্যে ২১ লাখ ৩৩ হাজার ২২৬ টাকার দাবি নিষ্পত্তি করেছে, যা মোট দাবির ৯৩ শতাংশ।
সিএমএসএফ চেয়ারম্যান নজিবুর রহমান বলেন, ‘আমরা পুঁজিবাজার স্থিতিশীলতায় কাজ করছি এবং একই সঙ্গে ক্যাডার ও বিনিয়োগকারীদের বৃহত্তর স্বার্থ নিশ্চিত করার জন্য যথাযথ যাচাই সাপেক্ষে অবিলম্বে দাবি নিষ্পত্তির জন্য কাজ করে যাচ্ছি।
‘আমরা দৃঢ় বিশ্বাস রাখি, সিএমএসএফের কার্যক্রমের মাধ্যমে পুঁজিবাজারে ইতিবাচক পরিবর্তন আসবে।’