সাপ্তাহিক ছুটির দিন শুক্রবার রাজধানীতে আগের চেয়ে বেশি দামে বিক্রি হয়েছে মাছ ও ডিম, তবে স্থিতিশীল রয়েছে সবজির বাজার।
কারওয়ান বাজার ও মগবাজার ঘুরে এমন চিত্র দেখা গেছে।
চড়া দামে মাছ বিক্রি
চাষের রুই মাছের কেজি সাধারণত ২৫০ থেকে ২৬০ টাকা। সেই মাছ কিনতে শুক্রবার কেজিপ্রতি গুনতে হয়েছে ২৮০ থেকে ২৯০ টাকা।
জ্যান্ত রুই মাছের কেজি আগে ৩০০ টাকা থাকলেও এখন তা ৩৫০ টাকা। আগে বিদেশি রুইয়ের (মিয়ানমার) কেজি ছিল ২২০ টাকা। তা বেড়ে হয়েছে ২৫০ টাকা।
রুইয়ের পাশাপাশি বেড়ে গেছে কাতলা, চিংড়ি, শিং, মাগুরসহ বিভিন্ন প্রজাতির মাছের দাম।
বিক্রেতারা বলছেন, ঈদের পর সরবরাহ কম থাকায় মাছের বাজার কিছুটা চড়া। ভোক্তারা একে অভিহিত করছেন মাছের বাজারে আগুন হিসেবে।
কারওয়ান বাজারে দেশি জাতের চিংড়ি ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে, যা ঈদের আগেও ছিল ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা। ট্যাংরা ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা কেজি, বোয়াল ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকা, কাঁচকি ৩৫০ থেকে ৪০০ টাকা, আইড়, চিতল, বেলে মাছ আকারভেদে বিক্রি হচ্ছে ৭০০ থেকে ৯০০ টাকা কেজিতে।
বিক্রেতারা বলছেন, সব মাছই কেজিপ্রতি ৫০ থেকে ২০০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে।
জানতে চাইলে কারওয়ান বাজারের মাছ বিক্রেতা ইউনুস মিয়া নিউজবাংলাকে বলেন, ‘ঈদের পর এখনও মাছ বাজারে সাপ্লাই স্বাভাবিক হয় নাই। এ কারণে দাম কিছুটা বেশি।’
একই কথা বলেন মগবাজারের মাছ বিক্রেতা রহিম আলী। তিনি বলেন, ‘সব মাছেরই দাম কিছুটা বেশি। আমরা বেশি দামে মাছ কিনি। তাই বাধ্য হয়ে বেশি দামে বেচতে হয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘ঈদের আগেও দেশি চাষের রুই বিক্রি করছি ২৫০ টাকা করে। এখন সেই রুই বেচতে হচ্ছে ২৮০ থেকে ৩০০ টাকা।
‘আর বিদেশি রুই ঈদের আগে কেজি ২২০ টাকা হলেও এখন ২৫০ টাকা। এ ছাড়া অন্যান্য মাছেরও একই অবস্থা।’
মগবাজারে কথা হয় আশরাফ অপু নামের ক্রেতার সঙ্গে। মাছের দামদর করার সময় বাজার পরিস্থিতি সম্পর্কে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘দেখে তো মনে হয় মাছের বাজারে আগুন লেগেছে। কোনো মাছই কিনতে পারছি না। বলা যায় সব মাছেরই দাম বেড়েছে।
‘ভেবেছিলাম ঈদের পর দাম কিছুটা কমবে, কিন্তু তা না হয়ে বরং বেড়েছে।’
ডিমের দামও বাড়তি
খুচরা পর্যায়ে খামারের মুরগির ডিমের ডজন শুক্রবার বিক্রি হয়েছে ১২০ টাকায়, যা দুই দিন আগেও ছিল ১১০ টাকা।
মুরগির ডিমের দাম বাড়ার প্রভাব পড়েছে হাঁসের ডিমের ওপর। বাজারে হাঁসের একেকটি ডিম বিক্রি হচ্ছে ১৫ টাকায়। প্রতি হালি ৬০ টাকা আর ডজন ১৮০ টাকায়। আগে হাঁসের ডিমের ডজন ছিল ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা।
স্থিতিশীল রয়েছে সাদা ব্রয়লার মুরগির দাম। এ মুরগির প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৬৫ টাকা দরে। আর গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ৬৫০ টাকায়। খাসি বিক্রি হচ্ছে ৯০০ টাকায়।
ঈদের আগেও এ দুই ধরনের মাংস একই দামে বিক্রি হয়েছে।
স্থিতিশীল সবজির বাজার
ঈদের পর মাছের দর বাড়লেও তেমন একটা বাড়েনি সবজির দাম। কোনো কোনো সবজির দাম কমেছে।
ঈদের আগে কাঁচা মরিচ ১০০ টাকায় বিক্রি হলেও এখন তা ৬০ থেকে ৮০ টাকা কেজিতে বিক্রি হচ্ছে, তবে বেড়েছে পেঁয়াজের দর।
কারওয়ান বাজারের খুচরা সবজি বিক্রেতা সুমন বলেন, ‘সবজির দাম ঠিকই আছে। দাম তেমন বাড়েনি।
‘সবজির মধ্যে শসা ৩০, ঢ্যাঁড়শ ২৫, কাঁচা মরিচ ৬০ থেকে ৮০, উস্তে ৪০, পটল ৩০ টাকা, আলু আগের মতোই ২০ থেকে ২২ টাকা কেজি।’
তিনি জানান, খুচরা পর্যায়ে ঈদের আগে দেশি পেঁয়াজ ২৫ থেকে ৩০ টাকা কেজিতে বিক্রি হয়েছে। তা এখন ৪০ টাকা।